জেএসসি পরীক্ষা : যশোর বোর্ডে এবারও গণিতে ফল বিপর্যয়

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, যশোর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফলাফল পেয়ে শিক্ষার্থীদের উল্লাস, যশোর/ছবি: বার্তা২৪

ফলাফল পেয়ে শিক্ষার্থীদের উল্লাস, যশোর/ছবি: বার্তা২৪

জুনিয়র মাধ্যমিক পরীক্ষার (জেএসসি) ফলাফলে যশোর বোর্ডে এবছরও গণিতে ফল বিপর্যয় ঘটেছে। গত বছরের চেয়ে পাসের হার এক শতাংশ বাড়লেও সিংহভাগই ফেল করেছে গণিতে। আর ধস নেমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে। দুই বছরের ব্যবধানে জিপিএ-৫ প্রাপ্তি নেমেছে এক-তৃতীয়াংশে; আর গতবারের তুলনায় অর্ধেকে। এ বছর পাসের হার ৮৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। গত বছর এই হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ২৫৬ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৬১২। অনুত্তীর্ণ ১৫ দশমিক ৩৯ ভাগের মধ্যে প্রায় ১২ ভাগই গণিতে ফেল করেছে। সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক ফলাফলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, চলতি বছর ২ লাখ ৪২ হাজার ৭১১ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ১৫ হাজার ৭২৯ ও ছাত্রী ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৮২। এরমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৩৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯৪ হাজার ১৯২ ও ছাত্রী ১ লাখ ৫ হাজার ৩৪৪ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ২৫৬ জন। পাসের হার ৮৪ দশমিক ৬১।

বিজ্ঞাপন

গত বছর এই বোর্ড থেকে ২ লাখ ৯ হাজার ৫১৫ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ১ হাজার ২৬৫ ও ছাত্রী ১ লাখ ৮ হাজার ২৫০। এরমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৭৬ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৮২ হাজার ৬৯০ ও ছাত্রী ৯২ হাজার ৮৬ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৪ হাজার ৬১২ জন। পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৪২।

আর ২০১৬ সালে এই বোর্ড থেকে ২ লাখ ১৩ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৩ হাজার ১৬৬ ও ছাত্রী ১ লাখ ১০ হাজার ১৭৪। এরমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ২ লাখ ৩ হাজার ৪২৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৯৭ হাজার ৮৮১ ও ছাত্রী ১ লাখ ৫ হাজার ৫৪৭ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২২ হাজার ৩ জন। পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৩৫। ফলাফলের হিসাব অনুযায়ী, দুই বছরের ব্যবধানে জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কমেছে এক-তৃতীয়াংশ। আর পাসের হার কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ।

জেএসসি’র ফলাফল সম্পর্কে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার এক শতাংশ বেড়েছে। তবে গতবারের মত এবারও গণিতে ফেলের হার বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক ফলাফলে তার প্রভাব পড়েছে। গত বছরের মত এবারও প্রায় ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী গণিতে ফেল করেছে। ১৬ সালে গণিতে পাসের হার ছিল প্রায় ৯৮ শতাংশ। এবার তা কমে এসেছে ৮৮ শতাংশে। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করেছি। ফলাফলের এই বিষয়টি আমলে নিয়ে স্কুলগুলোকে গণিত শিক্ষার মানোন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

আর জিপিএ-৫ গতবারের তুলনায় অর্ধেকে নেমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির কারণে জিপিএ-৫ কমেছে। আগে চতুর্থ বিষয়ের নাম্বার যোগ করে জিপিএ-৫ নির্ধারণ করা হতো। এ বছর থেকে চতুর্থ বিষয়ের নাম্বার ছাড়াই জিপিএ-৫ পাওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য এ হার অর্ধেকে নেমে এসেছে।

এদিকে, বোর্ডের ফলাফলে দেখা গেছে, এবার বোর্ডের ২৭৬টি স্কুল থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। গতবছর এই সংখ্যা ছিল ২৮১। আর ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯৯৯। আর এ বছর ১টি বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৯।