ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রমে সাকিব

‘এই শহরকে আমাদের ভালো রাখতে হবে’

  • স্পোর্টস এডিটর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ডেঙ্গু ভয়াবহতা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে সম্মিলিত ভাবে সবাইকে এগিয়ে আসার

ডেঙ্গু ভয়াবহতা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে সম্মিলিত ভাবে সবাইকে এগিয়ে আসার

ডেঙ্গু ভয়াবহতা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে সম্মিলিত ভাবে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার বিশ্বাস করেন-একত্রিতভাবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ একজোট হয়ে চারধারে সচেতনতা তৈরি করতে সমর্থ হলে ডেঙ্গুর বিস্তার থেকে মুক্তি মিলবে।

সাকিব আল হাসান ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে সচেতনতামুলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর বনানী বিদ্যা নিকেতন স্কুল এন্ড কলেজে এসেছিলেন। স্কুলের বাচ্চাদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাবার্তা বলেন সাকিব।

ক্রিকেট মাঠের চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডার জানান-সামাজিক একটা দায়িত্ববোধ থেকেই তিনি এই সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। সাকিব বলেন- ‘এ বছরের মতো কোনো বছরই ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর আকার এতো বেশি ধারণ করেনি। শুধু ঢাকা শহর নয়, ডেঙ্গু এবার অন্যান্য জেলাতেও ছড়িয়ে যাচ্ছে। যারা এই সময়ে ঢাকায় এসেছে, তারা সেই রোগ বহন করে তাদের জেলাতেও নিয়ে যাচ্ছে। তাই ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যে আমি মনে করি সবার মধ্যেই একটা সিরিয়াসনেস তৈরি হওয়া প্রয়োজন। কিভাবে আমরা এর থেকে মুক্তি পেতে পারি সেই বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে আমরা ক্রিকেটাররা ভালো একটা উদ্যোগ নিতে পারি। আমার একবার ডেঙ্গু হয়েছিল। তাই আমি জানি এটা কতো কষ্টকর। যেহেতু এবছর ডেঙ্গু খুবই ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। অনেক লোক মারা যাচ্ছে। নিউজে দেখেছি ডাক্তারসহ অনেক সচেতন মানুষজনও এবারের ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। এই তথ্য অনেক ভয়ানক একটা বিষয়। আর তাই আমার কাছে মনে হয়েছে ডেঙ্গুর ব্যাপারে যতো বেশি সচেতনা তৈরি করা যাবে-এই রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়া ততোই সহজ হবে। কারণ যতোক্ষণ পর্যন্ত আমরা বুঝতে পারছি না আমাদের কি কি করা উচিত ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা তো অন্ধকারেই থাকছি। শুধু শুনলাম কিন্তু কিছুই করলাম না বা বুঝলাম না-তাতে কোনো কাজ হবে না। সেজন্যই সবার উচিত হবে মানুষের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো। আমরা যারা ঢাকায় বসবাসকারী, তাদের প্রত্যেকের একটা দায়িত্ববোধ আছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই এই সঙ্কটের সময় আমাদের সবারই এসব প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া উচিত। এই শহরকে আমাদের সবার ভালো রাখতে হবে।’

সচেতনতা তৈরির কার্যক্রম হিসেবে স্কুলকে বেছে নেয়ার কারণ হিসেবে সাকিব বলেন-‘এই অসুখে বাচ্চারাই সাধারণত বেশি আক্রান্ত হয়। আমি এখানে এসেছি বাচ্চাদের সেই বিষয়ে সচেতন করতে। আমার কথা শুনে যদি একটা বাচ্চাও মনে রাখে তাহলে আমি মনে করবো আমার এই প্রচারণা সফল হবে। আমি মনে করি প্রত্যেক ক্রিকেটারের যার যার জায়গা থেকে মানুষজনকে ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন করতে পারলে এই সঙ্কটের সমাধান খুঁজে পাওয়া আমাদের জন্য সহজ হবে। মিডিয়া থেকে শুরু করে দায়িত্বটা আসলে আমাদের সবার। সবাই একত্রিত হয়ে যদি আমরা এই সমস্যাগুলো মোকাবেলা করি, তাহলে খুব সহজেই সমাধানে পৌছানো সম্ভব।’

ডেঙ্গু যাতে আর ছড়িয়ে পড়তে না পারে এবং আক্রান্ত রোগীরা যেন পর্যাপ্ত চিকিৎসা পান, যাদের রক্তের প্রয়োজন-তারা যেন জরুরি মূূহূর্তে রক্ত পেতে পারেন সেজন্যও বাড়তি সচেতনতা তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সাকিব।

এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত ব্যাখায় সাকিব বলছিলেন-‘রক্তদান করেও আমরা এই সচেতনতা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারি। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগির প্লাটিলেট যখন কমে যায়, তখন তার শরীরে অতিরিক্ত রক্তের প্রয়োজন খুব জরুরি হয়ে পড়ছে। যাদের রক্তের গ্রুপ বিরল বা নেভেটিভ, তাদের রক্ত জরুরি মূহূর্তে পাওয়া যায় না। যারা রক্তদান করতে ইচ্ছুক বা শারীরিক সামর্থ্য রাখেন, তারা যদি এক ব্যাগ করে রক্তও দিয়ে আসতে পারেন। তখন যার প্রয়োজন সে সেখান থেকে রক্ত নিয়ে জীবন বাঁচাতে পারে। এভাবে কোনো মানুষ বেঁচে গেলে সে সারাজীবন রক্তদাতাকে মনে রাখবে। এরকম বিপদের সময়ে এসব বিষয়গুলো এসব সহমর্মিতার বিষয়গুলোই তো মানুষজনকে একত্রিত করবে। কঠিন বিপদের সময় যদি আমরা একজোট হয়ে থাকতে পারি তাহলে আমাদের ভালো নাগরিক হিসেবে পরিচয় পাওয়া যাবে।’

সাকিব পরে বনানী স্কুল এলাকা ও এর আশেপাশে ফগার মেশিন দিয়ে মশা মারার ঔষুধ ছিটানো কার্যক্রমে অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন