উত্তর প্রদেশ মোদির তালুতে

  • খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

লক্ষ্ণৌ থেকে: ভারতের রাজনীতিতে একটি কথা প্রচলিত আছে, যে উত্তর প্রদেশ জেতে সে দিল্লির ক্ষমতায় বসে। উত্তর প্রদেশের রাজনীতিতে মোদির নামই চলছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এ প্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে ৭০টিতে জিতেছিল।

২০১৯ সালে এসে এ প্রদেশে মোদির নাম আরো ব্যাপকতা পেয়েছে। উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌ ঘুরে দেখা গেল, এখানে মোদি ছাড়া কিছু বুঝছেন না মানুষ। লক্ষ্ণৌতে মোদি লড়ছেন না। এখানে বিজেপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন সমাজবাদ পার্টির চমক অভিনেতা-রাজনীতিক শত্রুঘ্ন সিনহার স্ত্রী পুনম সিনহা। ১৬ এপ্রিল সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। পুনম উত্তরপ্রদেশের লক্ষ্ণৌ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু মোদি ঝড়ে তিনি টিকবেন বলে মনে করেন না স্থানীয় সংকর যাদব।

Scene of Uttar Pradesh
উত্তর প্রদেশের একটি স্থাপনা/ছবি: বার্তা২৪.কম

তিনি বলেন, রাজনাথ সিং লক্ষ্ণৌ থেকে বিজেপির পক্ষ থেকে লড়ছেন। তিনি এখানকার লোক। মোদির জনপ্রিয়তা অনেক বেশি হওয়ায় পুনম হেরে যেতে পারেন এখানে।

লক্ষ্ণৌয়ের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মোদিই তাদের একমাত্র পছন্দ। স্থানীয় একলব ঠাকুর বলেন, নরেন্দ্র মোদির কথায় সব চলছে। প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য রাহুল গান্ধী অপরিপক্ক। প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য মোদিজির প্রতিদ্বন্দ্বী এখন আর কেউ নেই।

শক্তি সিং জানালেন, কংগ্রেস এখানে কোনো গড়ে তুলতে পারেনি। দুই ধাপে ভোট হয়ে গেছে। ভোটারদের উপস্থিতি বেশ ভাল। এটাই ইঙ্গিত দেয় মোদি জোয়ার আবারও উত্তর প্রদেশে উঠেছে। সাত পর্বের ভোট ১১ এপ্রিল শুরু হয়েছে। শেষ হবে ১৯ মে। ভোট গণনা ২৩ মে এবং চূড়ান্ত ফলাফল সেদিন সন্ধ্যায় ঘোষণা করা হবে।

এদিকে, উত্তর প্রদেশের আর এক আসনের প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি তার প্রতিদ্বন্দ্বী রাহুল গান্ধী সম্পর্কে বলেছেন, রাহুলের সঙ্গে গরিবের কোনো সম্পর্ক নেই। কংগ্রেস প্রধান উত্তর প্রদেশের আমেঠীতে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় পাঁচ বছরে মাত্র একবারই তার নির্বাচনী এলাকাকে মনে করেন। রাহুল সেখানে দরিদ্র পরিবারের নারীদের জন্য কিছুই করেননি। প্রাসাদে বসবাসকারী রাহুল গান্ধী তার নির্বাচনী এলাকা থেকে গরিব নারীদের জন্য দুঃখ বোধ করেন না।

তিনি বলেন, তিনি (রাহুল) এমন একজন ব্যক্তি যিনি নিজের লোকসভা নির্বাচনে পাঁচ বছরে আমেঠী যান কারণ, তাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে হয়। রাহুল গত ১৫ বছর ধরে এ আসনে কংগ্রেসের এমপি। কংগ্রেসের নেতাদের ঘরগুলো ঘি আলো দিয়ে প্রজ্বলিত হয়, কিন্তু নিজেদের মুক্তির জন্য গরিব নারীদের অন্ধকারের সন্ধান করতে হচ্ছে।

ইরানি বলেন, প্রথমবারের মতো আমেঠীতে দুই লাখ পরিবারকে (বিজেপির শাসনামলে) টয়লেট তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

২০১৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে এক লাখ ভোটের ব্যবধানে ইরানি পরাজিত হন রাহুলের কাছে। কিন্তু তিনি হারলেও রাহুলের সঙ্গে লড়েছেন বলেই মন্ত্রী হয়ে যান। এবার তিনি না জিতলেও ব্যবধান আরো কমাবেন বলে উত্তর প্রদেশের ভোটারদের মতো।

উত্তর প্রদেশের আর এক নেত্রী মায়াবতী কংগ্রেস ও বিজেপি দুদলকেই এ প্রদেশে হারানোর চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। যদিও ২০১৪ সালে একটিও আসন পাননি তিনি।

বিএসপি প্রধান মায়াবতী বলেছেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের যে অবস্থা ছিল তেমন অবস্থায় চলে এসেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি। তারা কংগ্রেসের মতোই উত্তর প্রদেশে হারবে।

তিনি বলেন, বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদি হতাশ হয়ে পড়েছেন, গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় কংগ্রেসও মরিয়া জিততে। কিন্তু তারা কেউই গরিবের জন্য কিছুই করেনি।