পুঁজিবাজারে ‘দর্শকের’ ভূমিকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের প্রধান দুই পুঁজিবাজারে দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন বড় বড় ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। বাড়তি বাজারে শেয়ার বিক্রি করে এখন তারা ঘাপটি মেরে বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন। বাজারে পতন হলে তারা আবার শেয়ার কিনবেন। ফলে এখন পুঁজিবাজারের লেনদেন ও সূচক উভয়ই নিম্নমুখী।

বিনিয়োগকারী এবং মার্কেট প্লেয়ারদের আশা ছিল, এ বছর পুঁজিবাজার ভালো হবে, নতুন নতুন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং নতুন ফান্ড আসবে। গত জানুয়ারি মাসে অবশ্য সেই ধারায় অব্যাহত ছিল। কিন্তু এরপর  প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও নতুন ফান্ড না আসায় পাল্টে গেলো পুঁজিবাজারের দৃশ্য। ফলে ফেব্রুয়ারি মাসের ধারাবাহিকতায় মার্চ মাসেও সূচক ও লেনদেনে পতন ধারা অব্যাহত আছে। এমনকি লেনদেন হাজার কোটি টাকা থেকে ৫০০ কোটির কোটায় নেমে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে পৌনে এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিদিনের গড় লেনদেন ২০০ কোটি টাকা কমে ৭৬৫ কোটিতে নেমে এসেছে। আর মার্চ মাসে তা আরো কমে ৫০০ কোটিতে নেমে এসেছে। গত ৪ মার্চ চলতি বছরের সর্বনিম্ন ৫৭৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জানুয়ারি মাসে বড় বড় প্রাতষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেশি দামে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে তাদের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ শেয়ার নেই। তারা শেয়ার কিনতে মার্কেটে বিভিন্ন রকম গুজব ছড়াচ্ছে। আর তাতে শেয়ারের দাম কমছে। অল্প অল্প করে তারা শেয়ার কিনছে।

অন্যদিকে সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ার কারসাজির দায়ে কয়েকজনকে জরিমানা করেছে। ফলে মার্কেট প্লেয়ার বলে পরিচিতরা একটু চুপ আছেন।

তবে মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিরগুলো অনিরিক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। অনেকে মনে করছেন, ওই প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে আবারও বাজারে ফিরতে পারেন বড় বিনিয়োগকারীরা। ফলে আরো কিছুদিন এই পতন ধারা অব্যাহত থাকবে উভয় পুঁজিবাজারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সিনিয়ির সহ-সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন (দিলীপ) বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘নতুন বছরে বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিলেন পুঁজিবাজার ভালো থাকবে। কিন্তু জানুয়ারি মাসের পর বাজার আবারও ঝিমিয়ে পড়েছে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রাণীতিতে পুঁজিবাজারের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি এবং ডিএসই কর্তৃপক্ষ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা দুর্বল কোম্পানি ও তার সঙ্গে শেয়ার কারসাজি চক্রের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ফলে প্লেয়াররা দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সঠিক সময়ে শেয়ার কিনছেন। তারা সর্বশেষ দু’মাস শেয়ার বিক্রির চেয়ে কেনার প্রতি নজর দিয়েছে। যা বাজারের জন্য ইতিবাচক।’