র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে ছিল অনেকটা। বিশ্বকাপের আগে মাঠের লড়াইয়ে পারফরম্যান্সটাও আহামরি ছিল না। যে কারণে ফেভারিটদের তালিকায় অনেকে বিবেচনাই করেনি যে অস্ট্রেলিয়াকে। সেই অস্ট্রেলিয়াই আত্মবিশ্বাসের তোড়ে ফাইনালে উঠে ক্রিকেট দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিল। ছিনিয়ে নিল বিশ্বকাপ শিরোপাই।
শুরুতে ব্যাটিং তাণ্ডব চালালেন সিরিজ সেরা ডেভিড ওয়ার্নার। পরে ধ্বংসাত্মক ব্যাটিংয়ে নিজেকে সামিল করলেন মিচেল মার্শ। দুজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ছিনিয়ে নিল অস্ট্রেলিয়া। দুর্বার জয়ের সঙ্গে রুপালি ট্রফিটা অজিদের হাতে ধরা দিন ৭ বল হাতে রেখেই।
প্রথমবার ফাইনালে উঠলেও ২০১০ আসরে এই অস্ট্রেলিয়ার হৃদয় ভেঙেছিল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়বার ফাইনালে নাম লিখে প্রতিপক্ষকে আর কোনো সুযোগ দেয়নি অজিরা। তাইতো প্রথমবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হলো ব্ল্যাক ক্যাপস শিবিরের।
তবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চকে হারিয়ে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। দলের স্কোর তখন ১৭। পরে ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ ক্রিজে দাঁড়িয়ে গেলে অস্ট্রেলিয়াকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। দুজন মিলে দলকে পৌঁছে দেন ১০৭ রানের স্কোরে। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে মিলে ৯২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলের জয়ের ভিত গড়ে দেন।
মারকুটে ওপেনার ওয়ার্নার ৩৮ বলে ৫৩ রানের দাপুটে এক ইনিংস খেলে বিদায় নেন। ফেরার আগে ফিফটি পেরিয়ে যাওয়া সুন্দর ইনিংসটি ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় সাজিয়ে নিয়ে যান।
ওয়ার্নার ফিরলেও ব্যাট হাতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যান ওয়ানডাউনে নামা মিচেল মার্শ। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে সঙ্গী করে তৃতীয় উইকেটে লিখে ফেলেন ৬৬* রানের হার না মানা জুটি।
ম্যাচসেরা মার্শ ৫০ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় ৭৭* রানের চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন। ২৮* রানে অপরাজিত থেকে মার্শকে সঙ্গ দিয়ে যান ম্যাক্সওয়েল।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৮.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্য ১৭৩ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের হয়ে চার ওভারে ১৮ খরচ করে দুটি উইকেটই নেন ট্রেন্ট বোল্ট।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ান কেন উইলিয়ামসনও। খেলেন অধিনায়কোচিত দাপুটে এক ক্রিকেটীয় ইনিংস। তার ব্যাটিং ঝলকে ৪ উইকেটে হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭২ রানের লড়াকু সংগ্রহ গড়ে নিউজিল্যান্ড।
তবে কিউইদের ব্যাটিংয়ের শুরুটা খুব একটা ভালো ছিল না। দলীয় ২৮ রানে হারিয়ে ফেলে ওপেনার ড্যারিল মিচেলের উইকেট। তবে কেন উইলিয়ামসন ও মার্টিন গাপটিলের ব্যাটে দ্রুত বিপদ কাটিয়ে ওঠে তারা।
কেন উইলিয়ামসন ৪৮ বলে খেলেন ৮৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। কিউই ক্যাপ্টেন নিজের চমৎকার ইনিংসটি সাজান ১০ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায়। তার আগে ওপেনার মার্টিন গাপটিল ২৮ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। আর ১১ রান আসে ড্যারিল মিচেলের ব্যাট থেকে।
গ্লেন ফিলিপস ১৮ ও জেমস নিশাম দলীয় স্কোরে যোগ করেন ১৩* রান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একাই তিন উইকেট নেন জশ হ্যাজলউড। আর একটি উইকেট পান অ্যাডাম জাম্পা।
তার আগে টস ভাগ্য সহায় হয়নি নিউজিল্যান্ড ক্যাপ্টেন কেন উইলিয়ামসনের। টস জিতে নেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে বোলিং বেছে ভুল করেননি অজি ক্যাপ্টেন।
তাই শুরুতে ব্যাট হাতে মাঠে নামে নিউজিল্যান্ড। এখানেই পিছিয়ে যায় মূলত নিউজিল্যান্ড। শিশিরের কারণে শেষে বোলিং করাটা কঠিন হয়ে যায় কিউইদের জন্য। যার চড়া মূল্য দিতে হলো শিরোপা হাতছাড়া করে।