মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামান অসাধারণ ব্যাটিংয়ে বড় পুঁজিই গড়ে ছিল পাকিস্তান। বল হাতে শাদাব খান একাই শিকার করে ছিলেন ৪ উইকেট। কিন্তু তাদের এই অর্জন মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ডেভিড ওয়ার্নার-মার্কাস স্টয়নিস-ম্যাথু ওয়েডের বীরোচিত ব্যাটিং পারফরম্যান্স। আর ম্যাচের চিত্রনাট্য পাল্টে যায় হাসান আলী ব্যাট হাতে আলো ছড়ানো ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ মিস করলে।
দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট আগেই কেটে রেখেছিল নিউজিল্যান্ড। এবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তাদের সঙ্গে যোগ দিল অস্ট্রেলিয়া। ছয় বল হাতে রেখেই জয় ছিনিয়ে নিল ক্যাপ্টেন অ্যারন ফিঞ্চের দল।
এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ফাইনালে উঠল অস্ট্রেলিয়া। আর তাদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড ফাইনালে উঠেছে প্রথমবারের মতো। ফলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এ বৈশ্বিক আসর নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে ১৪ নভেম্বর, রোববারের ফাইনালে।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেন ডেভিড ওয়ার্নার। খেললেন দুর্বার এক ক্রিকেটীয় ইনিংস। তবে ফিফটি পেলেন না। এক রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরলেন তারকা এ ওপেনার।
ওয়ার্নার ৩০ বলে খেলেন ৪৯ রানের দাপুটে এক ক্রিকেটীয় ইনিংস। নিজের চমৎকার ইনিংসটি সাজান তিনি তিন বাউন্ডারি ও তিন ছক্কায়। আর মিচেল মার্শের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান। এতেই জয়ের ভিত গড়ে ফেলে অজিরা। দুজনে ম্যাচ প্রায় বের করেই নিয়ে আসেন। মাঝে খেলায় ফেরে পাকিস্তান। তবে ক্যাচ মিসে ফের পিছিয়ে পড়ে তারা।
সুযোগটা কাজে লাগিয়ে শেষে বাকি কাজটা সারেন মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েড। দুজনের হার না মানা পার্টনারশিপে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। সঙ্গে পেয়ে যায় ফাইনালের টিকিট। স্টয়নিস ৪০* রানের দুরন্ত ইনিংসটি সাজান ৩১ বলে দুই বাউন্ডারি ও দুই ছক্কায়। আর ম্যাচসেরা ম্যাথু ওয়েড খেলেন ১৭ বলের অবিশ্বাস্য ঝড়ো এক ইনিংস। তার ৪১* রানের হার না মানা ইনিংসে ছিল দুই বাউন্ডারি ও চার ছক্কা।
তাদের দাপুটে ব্যাটিংয়ে ১৯ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্য ১৭৭ রান ছুঁয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের হয়ে ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে একাই ৪ উইকেট শিকার করেন শাদাব খান। বাকি উইকেটটি নেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।
শুরুতে ব্যাট হাতে ঝলক দেখালেন বাবর আজম ও ফখর জামান। দুজনেই ছিনিয়ে নিলেন দুরন্ত অর্ধশতক। তাদের ব্যাটিং নৈপুণ্যের ওপর ভর করেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সামনে জয়ের জন্য ১৭৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় পাকিস্তান।
শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ক্যাপ্টেন বাবর আজমের দুরন্ত উদ্বোধনী জুটিতে ৭১ রান তুলে ফেলে পাকিস্তান।
বাবর আজম ৩৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। তার ৩৪ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচ বাউন্ডারি। বাবর ফিরলেও ক্রিজের এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে যান ওপেনার রিজওয়ান।
রিজওয়ান এবার জুটি গড়ে বসেন ফখর জামানের সঙ্গে। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে দলকে পৌঁছে দেন ১৪৩ রানে। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৫২ বলে ৩ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় ৬৭ রানের দাপুটে এক ইনিংস খেলে বিদায় নেন।
অসাধারণ ব্যাটিং দৃঢ়তায় ফিফটির দেখা পেয়ে যান ফখর জামানও। ৩২ বলে তিন বাউন্ডারি ও চার ছক্কায় ৫৫* রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন তিনি। সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানের পুঁজি গড়েছে পাকিস্তান।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি উইকেট শিকার করেন মিচেল স্টার্ক। একটি করে উইকেট নেন অ্যাডাম জাম্পা ও প্যাট কামিন্স।
তার আগে টস ভাগ্যটা সহায় হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। তাই তো টস জিতেই ফিল্ডিং বেছে নেন ক্যাপ্টেন অ্যারন ফিঞ্চ।