হোয়াইটওয়াশ এড়াতেই মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। লক্ষ্য ছিল নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয় ছিনিয়ে নেওয়া। হোক না সেটা সান্ত্বনার জয়। কিন্তু নাহ! হলো না। স্বপ্নটা আলোর মুখ দেখতে পারল না। এলোমেলো ব্যাটিংয়ে সেই স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়ল। ভাঙল ভক্ত-সমর্থকদের হৃদয়। ৯.৩ ওভারে টাইগাররা গুটিয়ে গেল ৭৬ রানে। কিউইরা জিতল ৬৫ রানে। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও পেল ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশের তেতো স্বাদ। যে কারণে খালি হাতেই দেশে ফিরতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের।
লক্ষ্যটা ছিল ১৪২। যেটা স্পর্শ করা অকল্যান্ডের বৃষ্টি ভেজা ইডেন পার্কে টাইগারদের জন্য নিসন্দেহে চ্যালেঞ্জের। এবং সেটা যদি ছোঁয়ার তাড়া থাকে ১০ ওভারে, তাহলে সেটা আরও কঠিন কাজ। কিন্তু বাজে ব্যাটিংয়ের দুষ্ট চক্র থেকে বেরোতে না পারায় টার্গেটটা আরও অনেক বেশি দুরূহ হয়ে দাঁড়াল। ক্রিকেটারদের সামনে লক্ষ্যটা হয়ে দাঁড়াল যেন হিমালয়ের চূড়ায় আরোহণের মতো রোমাঞ্চমাখা কষ্টকর কোনো কাজ।
জয় ছিনিয়ে নেওয়া লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য অসম্ভব করে দেন টিম সাউদি। এবং সেটা নিজের ও ইনিংসের প্রথম ওভারেই। হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করে। শেষ দুই বলে টানা দুই উইকেট শিকার করে। পরে অবশ্য এ কিউই পেসার সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি মোসাদ্দেকের দৃঢ়তায়। ওপেনার সৌম্য সরকার (১০) ও ওয়ানডাউনে নামা লিটন দাস (০) ফেরার পরই শুরু হয়ে যায় টাইগার ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল।
ব্যাট হাতে মাঠে নামতেই টাইগারদের ব্যাটিং লাইন-আপে যে ধস নামে। সেটা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি অতিথিরা। টিম সাউদির পেস তোপ আর অ্যাস্টল টডের বাঁ-হাতের ঘূর্ণি জাদুতে তাসের ঘরের মতো ধসে পড়তে থাকেন ব্যাটসম্যানরা। পুরো দশ ওভারও খেলতে পারেনি। তিন বল হাতে থাকতেই একশ ছোঁয়ার আগেই থেমে যায় সফরকারীদের ইনিংসের মুশকিলে ভরা অভিযাত্রা।
আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও মোসাদ্দেক হোসেন ব্যাটিং লড়াইটা চালিয়ে যাওয়ার আভাস দিয়েছিলেন বটে। কিন্তু দুজনের ইনিংস যথাক্রমে ১৯ আর ১৩ রানেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। আর বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ তো দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেননি।
সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১১টায় হওয়ার কথা ছিল টস। কিন্তু নাছোড়বান্দা বৃষ্টির কারণে পিছিয়ে যায় তা। বেরসিক বৃষ্টির নাচুনের কারণে দুপুর ২টা বাজার পাঁচ মিনিট আগে মাঠে গড়ায় টস। যে কারণে ম্যাচের পরিধি কমে আসে দশ ওভারে।
বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ফিন অ্যালেন-মার্টিন গাপটিলের দাপুটে ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক কিউইরা। ৭১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ফিন অ্যালেন। তার ২৯ বলের দুরন্ত ইনিংসে ছিল ১০ চার ও ৩ ছক্কার মার।
টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনার মার্টিন গাপটিল সাজঘরে ফেরার আগে ৪৪ রান যোগ করেন দলীয় ইনিংসে। যার মধ্যে ৫টি ছিল ছক্কার মার। তার ১৯ বলের চমৎকার ইনিংসে বাউন্ডারির মার ছিল একটি।
সংক্ষিপ্ত ইনিংস:
নিউজিল্যান্ড: ১৪১/৪, ১০ ওভার (ফিন ৭১, গাপটিল ৪৪, ফিলিপস ১৪, ড্যারিল ১১; শরিফুল ১/২১, তাসকিন ১/২৪ ও মেহেদী ১/৩৪)।
বাংলাদেশ: ৭৬/১০, ৯.৩ ওভার (নাঈম ১৯, মোসাদ্দেক ১৩, সৌম্য ১০; অ্যাস্টল ৪/১৩ ও সাউদি ৩/১৫)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতল নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচ সেরা: ফিন অ্যালেন।
সিরিজ সেরা: গ্লেন ফিলিপস।