নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লড়াইটা যেন পছন্দ হচ্ছিল না প্রকৃতির। তাই তো স্বাগতিকদের ইনিংস গুটিয়ে দিতে ঝরেই চলছিল বৃষ্টি। কিউইদের ইনিংস তখন ৪ উইকেটে ১০২। ন্যাপিয়ারের ম্যাকলিন পার্ক দখলে নিয়ে বেরসিক বৃষ্টি নিজেই খেলা শুরু করে। খানিক বাদে ফের মাঠে গড়ায় লড়াই।
কিন্তু বৃষ্টির খেলা যে তখনো শেষ হয়নি। ১৭.৫ ওভারে স্কোরটা ৫ উইকেটে ১৭৩ ছুঁতেই ফের শুরু বৃষ্টির নাচুন। এবার পুরোপুরি সফল বৃষ্টি। ব্ল্যাক ক্যাপদের যে আর ব্যাট হাতে মাঠে নামা হয়নি।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হারের দুষ্টু চক্র থেকে বেরোতে ব্যাট হাতে মাঠে তখন টাইগাররা। তাদের চোখে মুখে তখন জয়ের স্বপ্ন। ইনিংসের পরিধি কমে ১৬ ওভারে ঠেকেছে।
কিন্তু লক্ষ্য ঠিক কত? মানে কত রান করলে হাতে ধরা দিবে অধরা জয়? সেটা যে জানা ছিল না টাইগার ক্রিকেটারদের। অজানা লক্ষ্যে ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছিল ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই। ওভার প্রতি রানের প্রয়োজনটা পড়ে যায় নিসেব-নিকেশের আড়ালে।
ক্রিকইনফো বলছিল, বৃষ্টি আইনে ১৬ ওভারে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের টার্গেট হওয়ার কথা ১৭১। কিন্তু ম্যাচ অফিসিয়ালরা জানিয়ে দেন, জেতার জন্য ১৬ ওভারে বাংলাদেশকে সংগ্রহ করতে হবে ১৪৮। কিন্তু এটা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিল সবাই। নিশ্চিত লক্ষ্য জানতে অপেক্ষার প্রহর তখনো শেষ হচ্ছিল না। লক্ষ্য ঠিক করতে ম্যাচ অফিসিয়ালরা তখনো আলোচনায় ব্যস্ত।
কিন্তু ততক্ষণে খেলা শুরু হয়ে গেছে। টার্গেট না জেনেই ব্যাট চালিয়ে চলেছে অতিথিরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের মাঝেই পাল্টে গেল টাইগারদের লক্ষ্য। ১৬ ওভারে তাদের করতে হবে ১৭০। কিন্তু ইতোমধ্যে নয় বল খেলা শেষ। ম্যাচ অফিসিয়ালদের মারাত্মক ভুলে নতুন করে ব্যাটিং প্ল্যান দাঁড় করাতে হয় মাহমুদউল্লাহদের। যা ছিল খুবই কঠিন। ১৩ ওভার পর জানানো হয়, টাইগারদের জিততে হলে করতে হবে ১৭১।
ফল যা হওয়ার সেটাই হয়েছে। অজানা লক্ষ্যে ব্যাট চালিয়ে জয়টা অধরাই রয়ে গেছে। ডি-এল মেথডে ২৮ রানে হেরে সিরিজটাও হাতছাড়া হয়েছে টাইগারদের।
লক্ষ্য নিয়ে দ্বিধায় থাকলেও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ অফিসিয়ালদের ভুলকে তেমন বড় করে দেখছেন না, ‘ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, ডি-এল লক্ষ্যটা আমরা জানতাম না। স্কোরবোর্ডে লক্ষ্যটা বারবার বদলে যাচ্ছিল। তবে ম্যাচে এমন হতেই পারে।’
তবে কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ম্যাচ অফিসিয়ালদের এমন দৃষ্টিকটু ভুলটা ঠিক হজম করতে পারছেন না, ‘তারা স্কোরের জন্য অপেক্ষা করছিল। আমাদের জন্য এটা অনেক হতাশাজনক। এভাবে তো খেলায় দেরি করা যায় না। আগে কখনোই এমন ম্যাচ দেখিনি। ম্যাচ শুরু হয়ে গেছে অথচ কেউ জানেই না কত রান করতে হবে! ডাকওয়ার্থ-লুইসের হিসেব-নিকেশ শেষ করেই ম্যাচ শুরু করা উচিত ছিল। এমনটা মোটেও সুখকর নয়।’
প্রতিপক্ষ শিবিরও এমন ভুলের নিন্দা জানিয়েছে। কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম টুইটারে লিখেন, ‘লক্ষ্য না জেনে কিভাবে রান তাড়া করা সম্ভব? এটা পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়!’