গতকাল জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেট করোনায় সৃষ্ট মহাদুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রত্যাশিত হয়নি বলে মনে করছেন বিএনপি। যার ফলে এ বাজেট জাতিকে হতাশ করেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, করোনা সংকটের কারণে জাতি আজ মহাদুর্যোগ কাল অতিক্রম করছে। মানুষের জীবন ও অর্থনীতিকে এই মহাসংকট থেকে উদ্ধারের জন্য যেখানে প্রয়োজন ছিল গতানুগতিক প্রথাগত কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে একটি বিশেষ ঘোষণার বাজেট। তা না করে অর্থমন্ত্রী গতকাল ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য গতানুগতিক ও অবাস্তবায়নযোগ্য বাজেট ঘোষণা করেছে। এ বাজেট জাতিকে হতাশ করেছে।
শুক্রবার (১২ জুন) জাতীয় বাজেট ঘোষণার আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় দলটির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, গত ৯ জুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র পক্ষ থেকে তিন বছরের একটি মধ্য মেয়াদি বাজেটের রূপরেখা দিয়েছিলাম। অর্থমন্ত্রী আমাদের সুপারিশ ও দেশের অধিকাংশ শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের অভিমতকে অপেক্ষা করে প্রত্যাশিত বাজেটের স্থলে অত্যন্ত সাদামাটা গতানুগতিক বাজেট ঘোষণা করেছে। অথচ সুযোগ ছিল, এবারের বাজেটে উত্তরণের সম্ভাবনা ছিল। স্বাস্থ্য, শিক্ষা সামাজিক সুরক্ষা ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যাশিত বরাদ্দ করা হয়নি। বাজেটে বর্তমানে বিপদগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষে কার্যকর সুশাসন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করন, সর্বস্তরে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্পই নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতি আশা করেছিল এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে সবচেয়ে প্রাধান্য দেওয়া হবে। সবাইকে হতাশ করে অর্থমন্ত্রী স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য চলতি অর্থবছরের তুলনায় তিন হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেন। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হলো জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ। অথচ স্বাস্থ্যখাতে আমরা জিডিপির ৫ শতাংশের প্রস্তাব করেছিলাম। বরাদ্দ যায় থাক না কেনো প্রয়োজন স্বচ্ছ দুর্নীতি মুক্ত ব্যবহার। সে বিষয়ে বাজেটে কোন দিক নির্দেশনা নেই।
তিনি আরও বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের প্রকৃত অর্থে কোনো গঠনমূলক ব্যবস্থা কিংবা সংস্কার প্রস্তাবনা নেয়া হয়নি। এমনকি যেসব প্রকল্প নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে সেসব প্রকল্পগুলোকে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অথচ পরিবহন খাত বিদ্যুৎ খাতসহ এমন অনেক খাতকে অনেক বেশি পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এই মুহূর্তে প্রয়োজন ছিল না।