ঢাকায় হুড়োহুড়ি নেই

ঢাকা, জাতীয়

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-04-20 17:32:05

রাজধানী শহর ঢাকায় অনেকটা ছুটির আবহ বিরাজ করছে। কোনোকিছুতেই নেইহুড়োহুড়ি। ঠিক সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যেমন রাস্তাঘাট ফাঁকা ফাঁকা থাকে, অনেকটা তেমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার (২২ মার্চ)।

রাস্তায় অন্যান্য দিনে যানজটে প্রাণ ওষ্ঠাগত হলেও আজকে প্রধান সড়কগুলোতে কোথাও তেমন যানজট নেই। রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যাও তুলনামূলক কম। তাতেও যাত্রীর উপস্থিতি অনেক কম। বেশিরভাগ গাড়ির সিট ফাঁকা। নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও অনেক দোকানিই দোকান খোলা থেকে বিরত রয়েছেন।

রাজধানীর এয়ারপোর্ট রোড, গুলশান এভিনিউ, মিরপুর-১০ এবং ভবন লকডাউন করা মিরপুরের টোলারবাগ এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। মিরপুর-১ ও মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় অর্ধেকের বেশি দোকান বন্ধ দেখা গেছে। যেগুলো খুলেছে সেখানেও নেই ক্রেতা সমাগম। উদাস ভঙ্গিমায় অপেক্ষারত বিক্রেতারা।

গণপরিবহনগুলো যাত্রী না পেয়ে মোড়ে মোড়ে এসে দাঁড়িয়ে থাকছে যাত্রীর জন্য। অথচ অন্যদিন এসব পয়েন্টে গণপরিবহন এলেই আগে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি লেগেই থাকতো। রাস্তায় রিক্সার উপস্থিতিও কমে গেছে।

একই চিত্র রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীর। এসব এলাকার বেশিরভাগ দোকান এখন খোলা দেখা গেছে। এসব এলাকায় ফুটপাতের ব্যবসায় অন্য পণ্যের জায়গা করে নিয়েছে মাস্ক। কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে বেশ কয়েকজন হকারকে দেখা গেছে চুটিয়ে মাস্ক বিক্রি করে যাচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে তৈরি এসব মাস্ক ২০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। কয়েকদিন পূর্বে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার মার্কেট আউট হয়ে গেলেও এখন আবার অনেক দোকানেই মিলছে এসব পণ্য।

ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে মাস্ক/ছবি: বার্তা২৪.কম 

মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে সেখানে তেমন ভিড় লক্ষণীয় নয়। আবার ফিরতি বাসও যাত্রী সংকটে ভুগছে। ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ইমাম পরিবহনের সুপারভাইজার সুমন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অন্যান্য সময় সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার গাড়ির সিট নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। আজকে অর্ধেক সিটও পূর্ণ হয় নি। ফাঁকা গাড়ি নিয়ে যাত্রা করতে হচ্ছে।

তবে আর কোথাও লোকজন না থাকলেও টিসিবির ট্রাক সেলে (ন্যায্যমূল্যে) ক্রেতাদের লাইন দেখা গেছে। মিরপুর-১৪, মিরপুর-১০ (ফায়ার সার্ভিসের সামনে) লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে লোকজন পণ্য-সামগ্রী কিনছে।

রাজধানীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। সরকারি অফিস চালু থাকলেও প্রাইভেট অফিসগুলো অনেকটাই সীমিত আকারে চলছে। কোনো কোনো অফিস কর্মচারীদের বাসা থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ঘাটতির আশঙ্কায় কর্মীদের বিনাবেতনে ছুটি দিয়েছে। এ কারণে অনেকে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম আতঙ্কিত। অনেকে সপরিবারে গ্রামে চলে যাচ্ছেন।

ঢাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা বেশ ভয়ের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কখন জানি মহামারি করোনার শিকার হন। তাদের মধ্যে আরেকটি ভয় বেশি কাজ করছে সেটি হচ্ছে, করোনার প্রকোপ বেড়ে গেলে যদি সিটি লকডাউন হয়, তাহলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাবেনতো। এমনিতেই সামান্য সুযোগ পেলেই দোকানিরা গলাকাটা মূল্য আদায় করেন। সরকার সেটি সামাল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে তো!

এ সম্পর্কিত আরও খবর