ডিজিটাল ওয়ালেটে লাখ টাকা, তুলতে গেলেই নাই

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2025-01-23 17:49:55

অনলাইনে আন্তর্জাতিক স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের ও বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার ১৫০টি সিম কার্ড, ১টি হার্ডডিস্ক, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এক ভুক্তভোগী।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পাপ্পু কুমার সেন (২৮) ও মো.কাওসার (২৭)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সাড়ে ১১ শ সিম কার্ড, একটি হার্ডডিস্ক ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়।

ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা মামলায় এক ভুক্তভোগী দাবি করেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আন্তর্জাতিক স্টক মার্কেটের বিজ্ঞাপন দেখে লিংকে প্রবেশ করে। লিংকে প্রবেশ করার পর অজ্ঞাত একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে বাদীর ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে কিছু মেসেজ পাঠায় এবং টাস্ক দেয়। বাদীর হোয়াটসঅ্যাপে একটি একাউন্ট খোলার নির্দেশনা আসে। নির্দেশমতো তাদের অ্যাপসের লিংকে প্রবেশ করে তার নাম, এনআইডি, মোবাইল নাম্বার দিয়ে একাউন্ট করে। উক্ত অ্যাপসে তার একটি ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি হয়। আসামিরা বাদীকে তাদের দুটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এ যুক্ত করে নেয়। উক্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাদীর পরিচিত অনেকেই যুক্ত ছিল এবং সেখানে ট্রেডিং বিষয়ে কথাবার্তা হতো। গ্রুপগুলোতে বিভিন্ন নামে বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার দেখা যায়। আসামিদের কথায় বিশ্বাস করে মামলার বাদী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ১৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ টাকা বিনিয়োগ করে। উক্ত অ্যাপস এ আসামিদের কথামতো ট্রেড করার পর ডিজিটাল ওয়ালেটে তার টাকা বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে লাভসহ প্রায় ৬৪ লাখ ৫ হাজার ২৮৭ টাকা হয়। প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভুক্তভোগীর সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে মাত্র ৫ হাজার টাকা ডিপোজিট করে। কিন্তু বিনোয়োগ করা ১৩ লাখ টাকা ফেরত চাইলে প্রতারক চক্রের সদস্যরা আরও বিনিয়োগ করতে বলে। এক পর্যায়ে তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ধানমন্ডি থানার মামলা মামলা করেন।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এই চক্রটি কোনো ধরনের এনআইডি কার্ড ও ফিঙ্গার প্রিন্ট ছাড়াই বেশি টাকা দিয়ে অবৈধভাবে মোবাইল সিমকার্ড সংগ্রহ করে। এরপর সেই সিমকার্ড দিয়ে বিভিন্ন টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপসহ অন্যান্য মাধ্যমে দেশি-বিদেশি প্রতারক চক্রের কাছে বেশি দামে সিমগুলো বিক্রি করে দেয়। এই সকল অবৈধ মোবাইল নাম্বার দিয়ে টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে বিভিন্ন ব্যক্তিদের যুক্ত করে তাদেরকে বেশি মুনাফা দেয়ার লোভ দেখিয়ে বিনিয়োগ করার জন্য প্রলুব্ধ করে। অনলাইনে পাতা ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই বেশি মুনাফার আশায় চক্রের কথিত অ্যাপসে নিজেদের নাম, মোবাইল নাম্বার, এনআইডি কার্ডের তথ্য দিয়ে একাউন্ট খুলে সেখানে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে। আসামিরা ভুক্তভোগীদের কোনো মুনাফা না দিয়ে কৌশলে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার করে দেয়। প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একসকল অ্যাপস চীন থেকে পরিচালিত করা হয়। আর বাংলাদেশে অবস্থানরত চক্রের সদস্যরা বিনিয়োগের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে সহায়তা করে থাকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর