জুলাই ঘোষণাপত্রে হাসিনার বিচার দেখতে চায় জনগণ: সারজিস

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ভোলা | 2025-01-10 18:34:27

গত ১৫ বছর ধরে দেশের জনগণ একটি নজিরবিহীন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া শাসনের অধীনে চরম জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।

তিনি বলেন, বাংলার মানুষ হাতে হাত রেখে বাংলার মাটি থেকে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে লড়াই করে বিদায় করেছে। সেজন্য ২৪–এর অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে সবার আগে স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় বাংলার জনগণ।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ভোলা শহরে লিফলেট বিতরণকালে ইলিশ ফোয়ারা চত্বরে এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সম্পাদক বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, খুনি হাসিনাসহ যাদের নির্দেশে এতো মানুষকে খুন করা হয়েছে, রক্ত জড়ানো হয়েছে, তাদের বিচারের শাস্তির স্পষ্ট কথা এই ঘোষণাপত্রে থাকতে হবে। আমরা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে কথা বলেছি, তারা একাত্মতা প্রকাশ করে আমাদের ৭ দফা দাবিকে যৌক্তিক বলে জানিয়েছেন।

সারজিস আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই ঘোষণাপত্রে সবার আগে ছাত্রদের অভ্যুত্থানে আওয়ামী খুনি ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার স্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে। ঘোষণাপত্রে প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলার শ্রমিক মেহনতি মানুষের আত্মত্যাগের কথা উঠে আসতে হবে। এটি যেন কয়েকজনের কথা না হয়।

তিনি আরও বলেন, খুনি হাসিনা গোপালগঞ্জের সিন্ডিকেট বসিয়েছে। তার পরিবার প্রত্যেকটি জায়গায় সিন্ডিকেট বসিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সেইগুলোকে শেষ করে সমতার একটি বাংলাদেশ দেখতে চায় বাংলার মানুষ।

ভোলার সাবেক পুলিশ সুপারের বিচার চেয়ে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে ভোলায় পুলিশের গুলিতে জসিম উদ্দিন মারা গেছেন। তার মৃত্যুর দায় ভোলার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহিদুজ্জামানকে নিতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, জসিম ভাইসহ আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে আরো যারা রক্তাক্ত হয়েছে তাদের দায়ও এসপি, পুলিশ অফিসার এবং কনস্টেবলদের নিতে হবে। কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এই খুনের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাদের শাস্তি যেন শুধু বদলি না হয়।

সরকার পতনের আন্দোলনে এই দ্বীপের মানুষ সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছে উল্লেখ করে সারজিস বলেন, আমরা মনে করি ওই ঢাকা শহর থেকে দূরত্ব কখনোই প্রায়োরিটি নির্ধারণ করতে পারে না। প্রায়োরিটি নির্ধারণ করে কার কতটুকু ত্যাগ আছে, তার ওপর। সেই ত্যাগে বাংলাদেশের প্রথম সারির একটি জেলা হচ্ছে ‘বীরের’ জেলা এই ভোলা। 

এর আগে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের জনমত তৈরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণসংযোগের অংশ হিসেবে ভোলা সদর রোড ও বাংলা স্কুল মোড়ে লিফলেট বিতরণ করেন সারজিস। এছাড়া তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ভোলায় নিহত শহীদ জসিম উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সহানুভূতি জানান এবং কবর জিয়ারত করেন।

এসব কর্মসূচিতে সারজিস আলমের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভোলার সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর