ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অপসারণ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ঢাকা | 2024-10-21 12:56:30

বাংলাদেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অপসারণ না করার দাবিতে মানববন্ধনে নেমেছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টার পর রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে এই মানববন্ধন করেন তারা। বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম (বিইউপিএফ) এবং চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সকল সমমনা সংগঠনের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

আজিজুল চেয়ারম্যান বলেন, আজকে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। আপনারা জানেন মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। আজকে পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ চলছে, নৌবাহিনী বিমান বাহিনীতে নিয়োগ চলছে। তাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিভিন্ন ধরনের সনদপত্র দিতে হয় আমাদের। তারা কিন্তু বর্তমানে এই সেবা পাচ্ছে না। তারা খুব কষ্টে আছে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করবো যাতে ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে না দেয়া হয়।

মো. জাকির আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে দিলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা এবং জনগণের সেবা মুখ থুবড়ে পড়বে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে আমাদের বাংলাদেশ ইউনিয়ন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা জানাতে চাই ইউনিয়ন পরিষদ না ভেঙে আমাদেরকে পূর্ণ মেয়াদে দ্বায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়ার জন্য বর্তমান সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় বাংলাদেশের যে অশান্তি যে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ সৃষ্টি হবে তার জনরোষ বর্তমান সরকারের ওপরে পড়বে।

তিনি বলেন, আমরা চাই বর্তমান সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আমরা চাই বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করতে। আমরা আশা রাখছি ঢাকা থেকে হাজার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার চেয়ারম্যান ঢাকায় এসেছে। আমরা বর্তমান সরকার থেকে আশা নিয়ে ফিরে যেতে চাই।

আন্দোলনকারী চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী কাঠামো। স্বাধীনতার পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালিত হয়ে আসছে। গত ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বৈরাচারী সরকার নিজের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার প্রয়াসে সর্বজন স্বীকৃত একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক দলের প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করিয়ে প্রাচীন এ প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করেছেন। বাংলার স্বাধীন চেতা মানুষ স্বৈরাচার সরকারের এই অপকৌশল ও অপশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে চলতি বছরের ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটায়। স্বৈরাচারি সরকার পতনের পর ধবংস প্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারের লক্ষ্যে সর্বজন নন্দিত অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার আপনার নেতৃত্বে গঠিত হয়। জনপ্রিয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকারের উপদেষ্টা অজ্ঞাত কারণে প্রাচীন এই জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানটি ভেঙে দেওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এই কাঠামো ভেঙে আমলাতান্ত্রিক উপায়ে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করলে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ আশাহত হবেন। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যান এর স্থলে আমলাতান্ত্রিক ভাবে পরিচালিত হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

জনগণের ভোটে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যানরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। ইউনিয়ন পরিষদ কাঠামো ভেঙে দিলে দেখা যেতে পারে সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা। তবে যে সকল ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিথি হিসাবে আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘুম ব্যতীত সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করে আসছি। জনগণের দোরগোড়ায় সেবা নিশ্চতকরণের লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রতিধিদের বিলুপ্ত বা অপসারণ না করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর