ইসলামের পবিত্রতম স্থান মক্কার মসজিদে হারামে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিভিন্ন উৎস রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি ব্যাকআপ উৎস অন্যতম। কিন্তু সেই বিকল্প উৎসের বিদ্যুৎ গত ৪০ বছরে কোনোদিন ব্যবহার করতে হয়নি। বিকল্প বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রিজার্ভই রয়ে গেছে।
সম্প্রতি সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক হজ সম্মেলনে পবিত্র দুই মসজিদের তত্ত্বাবধানে গঠিত অথরিটির সিইও গাজী আল শাহরানি এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর গালফ নিউজের।
তিনি বলেন, মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ বিশ্বের অন্য যেকোনো স্থান থেকে একবারে আলাদা। কারণ এটি বিশ্বের বৃহত্তম স্থাপনা, সারা বছর সার্বক্ষণিক সক্রিয় এবং বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিদর্শিত স্থান। এখানে ২৪ ঘন্টা বৃহৎ পরিসরে বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে। আর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য মসজিদে হারামে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালিত হয়। মসজিদে হারামের তৃতীয় সম্প্রসারণের সময় এমন ১২টি প্রধান এবং সহায়ক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
এর বাইরে মসজিদে হারামের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির জন্য পাওয়ার জেনারেটরেরও বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। যা দিয়ে এসকেলেটর, লিফট এবং কুলিং সিস্টেমগুলো যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যাবে। এর বাইরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য গ্র্যান্ড মসজিদের বিভিন্ন স্থানে ইউপিএস স্থাপন করা হয়েছে।
হজ সম্মেলন এবং প্রদর্শনীর অংশ হিসাবে অনুষ্ঠিত ‘দুই পবিত্র মসজিদের সুবিধা ও সেবার টেকসই উন্নয়ন এবং গুণমান’ শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
গাজী আল শাহরানি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ বর্তমানে অংশীদারদের সঙ্গে মিলে স্মার্ট ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ এবং উন্নত সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার মান উন্নত করার কাজ করছে। ‘কম্প্রিহেনসিভ অ্যাক্সেস’ ধারণার মাধ্যমে শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য একীভূত সেবাগুলো সহজলভ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মক্কার মসজিদে হারামে বিদ্যুৎ-এর সংযোগ দেওয়া হয় ১৯৫৬ সালে। সময়ের সঙ্গে মিল রেখে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মসজিদে হারামের বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন হয়। এ জন্য একদল দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলী নিয়োগ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগে ২০৫ জন প্রকৌশলী, ৪৫০ জন টেকনিশিয়ান ও ২০০ কর্মী নিযুক্ত আছেন।
প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মুসলমান হজ ও উমরা পালন করতে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে সমবেত হন।
হজ ইসলামের পাঁচটি ফরজ কর্তব্যের একটি, যা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম মুসলমানদের জীবনে অন্তত একবার পালন করতে হয়।
গত বছর মক্কায় ১৮ লাখের বেশি হজযাত্রী, যার মধ্যে ১৬ লাখ বিদেশি, হজ পালন করেছেন। আসন্ন হজ মৌসুমের জন্যও দেশটিতে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।