পদ্ম পুরস্কারে সম্মানিত হলেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীরা। চলতি বছর (২০২১ সালে) বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১১৯ জন পেয়েছেন পদ্ম পুরস্কার। সোমবার প্রাপকদের হাতে পদ্ম পুরস্কার তুলে দেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
১১৯ জনের মধ্যে ৭ জন পদ্মবিভূষণ, ১০ জন পদ্মভূষণ এবং ১০২ জন পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন। সম্মানপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৯ জন নারী, ১ জন ট্রান্সজেন্ডার রয়েছেন। ১৬ জন পেয়েছেন মরণোত্তর সম্মাননা।
তালিকায় রয়েছেন বিদেশী, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, চলচ্চিত্র শিল্পের মানুষ, সরকারি কর্মচারী ও অ্যাক্টিভিস্ট। পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে বিভিন্ন পেশার আটজন মুসলিমও রয়েছেন।
প্রখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত মাওলানা ওয়াহিদউদ্দিন খান। তিনি কোভিড-১৯ জটিলতার কারণে ২০২১ সালের এপ্রিলে মৃত্যুবরণ করেন। ভারতরত্নের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তার ছেলে ড. সানিয়াসনাইন খান এই সম্মাননা গ্রহণ করেন।
বিশিষ্ট শিয়া নেতা ও পণ্ডিত মাওলানা কালবে সাদিক। তিনিও গত বছর মারা যান। তিনি তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ পেয়েছেন।
১০২ জনের পদ্মশ্রী তালিকায় ছয়জন মুসলিম রয়েছেন। তারা হলেন- আলি মানিকফান, গুলফাম আহমেদ, লাখা খান ও গোলাম রসুল খান এবং বাংলাদেশের দুই জন সনজীদা খাতুন ও কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলি জহির।
আলি মানিকফানকে লাক্ষাদ্বীপে তৃণমূল পর্যায়ের উদ্ভাবনে অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে। তিনি ১৯৩৮ সালে লাক্ষাদ্বীপের মিনিকয় দ্বীপে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মানিকফান বহুপ্রতিভাসম্পন্ন সমুদ্র গবেষক, পরিবেশবিদ, জাহাজ নির্মাতা ও কৃষিবিদ।
গুলফাম আহমেদ উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। শিল্পক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি একজন সরোদ এবং আফগানি রাবাব বাদক এবং ইন্দো-আফগান সাংস্কৃতিক সম্পর্ক প্রচারের জন্য পরিচিত।
লাখা খান (৪০)। যিনি শিল্পে অবদানের জন্য পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি রাজস্থানভিত্তিক সংগীতশিল্পী। তিনি সিন্ধি সারেঙ্গি বাজান এবং লোকগান গান।
হাজি গোলাম রসুল খান কাশ্মীরের একজন হস্তশিল্প শিল্পী। তিনি কাশ্মীরি শাল কৌশলের প্রাচীনতম রূপ জামাওয়ার প্যাচওয়ার্ক সংরক্ষণে কাজ করছেন। পদ্মশ্রী পাওয়ার আগে টেক্সটাইলের জন্য জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলেন গোলাম রসুল খান। জামাওয়ার নৈপুণ্যে মাস্টারপিস এবং বিরল প্রত্নবস্তু তৈরিতে খানের খ্যাতি রয়েছে। তিনি সালাম দিয়ে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও মানপত্র গ্রহণ করেছেন।
এ ছাড়া মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রীতে ভূষিত হয়েছেন বাংলাদেশের অধ্যাপক সনজীদা খাতুন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ আলি জহির বীর প্রতীক। সনজীদা খাতুন বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখক, বাঙালি সংস্কৃতির বিরল সাধক কাজী মোতাহার হোসেন ও সাজেদা খাতুনের মেয়ে।
এর আগে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও কূটনীতিবিদ সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননা পেয়েছিলেন। আর ‘পদ্মশ্রী’ পেয়েছিলেন প্রত্নতত্ত্ববিদ এনামুল হক এবং সমাজকর্মী ঝর্ণাধারা চৌধুরী।