কোনো ধরনের চাপ কিংবা ভীতি থেকে নয়, মনের আনন্দে মাত্র ৯৯ দিনে পুরো কোরআন মুখস্থ করার বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছে আট বছরের ইয়াসিন আবদুল্লাহ।
তুখোড় মেধাবী এ বিস্ময় বালক নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন ভূঁইগড়ের জামিয়া দাওয়াতুল কুরআন মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। চলতি মাসের ৮ তারিখে সে কোরআনে কারিম মুখস্থ করে শেষ করেছে।
জামিয়া দাওয়াতুল কুরআন মাদরাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মামূনুর রশীদ জানিয়েছেন, এই মাদরাসার ইতিহাসে ইয়াসিন আবদুল্লাহ সর্বকনিষ্ঠ এবং অতি অল্পসময়ে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থকারী কীর্তিমান শিক্ষার্থী।
তার এই অসাধারণ সাফল্যের পেছনে হিফজ বিভাগের শিক্ষকদের সযত্ন তত্বাবধান বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে।
ইয়াসিন আবদুল্লাহর পিতা মো. শাহ আলম একজন নির্মাণ শ্রমিক। মাতা গৃহিণী শাহিনুর বেগম। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার দুগাছিয়ায় হলেও জীবিকার টানে তারা ভূঁইগড়ে বসবাস করেন। এক ছেলে ও এক মেয়ের সংসার। ইয়াসিন আবদুল্লাহর বড় বোন সুমাইয়া আক্তার লামিয়াও দাওয়াতুল কুরআন মাদরাসার বালিকা শাখা উম্মে মুআয তালীমুন্নিসার শিক্ষার্থী।
কনিষ্ঠ হাফেজ ইয়াসিন আবদুল্লাহর বাবা মো. শাহ আলম জানিয়েছেন, ‘আমার অনেক আশা ছিল, ছেলেকে পবিত্র কোরআনের হাফেজ বানানোর। আল্লাহতায়ালা আমার মনে আশা পূরণ করেছেন। এখন আমাদের সবার ইচ্ছা সে যেন বড় হক্কানি আলেম হয়।’
হাফেজ ইয়াসিনের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ‘সে খুবই মেধাবী এবং মনোযোগী ছাত্র। কোরআনে কারিম মুখস্থ করাটা তার কাছে একটা মজার বিষয় ছিলো। কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ ছাড়াই স্বভাবসুলভ আনন্দের সঙ্গে সে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করেছে। কোনো কোনো দিন আট থেকে নয় পৃষ্ঠা মুখস্থ করে সবক শুনিয়েছে। আমরা মনে করি, এটা আল্লাহতায়ালার কুদরতের নিদর্শন।’
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত জামিয়া দাওয়াতুল কুরআন মাদরাসায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করেন। মাদরাসাটি মিশকাত জামাত পর্যন্ত। আগামী বছর এখানে কওমি মাদরাসা সবোর্চ্চ ক্লাস দাওরায়ে হাদিস চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।