আমেরিকায় মাস্ক পরলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কিছুটা হলেও প্রতিরোধ করা সম্ভব এমন কার্যকারি প্রমাণ সত্ত্বেও দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সব সময় মাস্ক ব্যবহারে মানুষকে নিরুৎসাহিত করেছেন। নিজে কখনও মাস্ক পরবেন না বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।
তবে বুধবার (২ জুলাই) মাস্ক ব্যবহার নিয়ে তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ফক্স বিজনেস নেটওয়ার্ককে এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মাস্ক পরার পক্ষে’।
এ সময় ‘তিনি মাস্ক পরবেন কিনা’ জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যদি আমি অনেক লোকের সঙ্গে থাকি তবে মাস্ক পরব। আগেও অনেককে মাস্ক পরতে দেখেছি। জনসম্মুখে মাস্ক পরতে আমার কোন সমস্যা নেই। নিজের জন্য আমি মাস্ক বাছাই করছি।
তবে তিনি আবারো জোর দিয়ে বলেন, আমেরিকার সব জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে অনেক জায়গা আছে যেখানে মানুষজন পরস্পরের কাছ থেকে বেশ দূরে অবস্থান করে। মানুষ যদি মাস্ক পরে ভালো বোধ করে তাহলে তারা পরতে পারে।
করোনাভাইরাস নির্মূল হওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আমি বিশ্বাস করি। অবশ্যই, কোন একটা সময় এটা চলে যাবে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ একবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। একদিনে ৫০ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। এসব বিবেচনায় নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প মাস্ক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির প্রধান সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি সতর্ক করে দিয়েছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে খুব শিগগিরই দিনে এক লাখ লোক করোনায় আক্রান্ত হবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় নিয়ম লঙ্ঘন করছি। সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরা থেকে বিরত রয়েছি। এর ফলে বড় ধরনের আঘাত আসতে পারে’।
গত এপ্রিল মাসে আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) জনসমাগমে মাস্ক পরিধান করার সুপারিশ করেছিল। তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি মাস্ক পরবেন না। একজন মানুষ মাস্ক পরবে কিনা সেটি তার ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয়।আমি মাস্ক পরে কোনোভাবেই ওভাল অফিসের সুন্দর ঐতিহ্যবাহী ডেস্কে বসতে পারব না। আমি মাস্ক পরে অন্য দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজা বা রাণীকে শুভেচ্ছা জানাতে পারি না।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ এবং মারা গেছেন প্রায় এক লাখ ২৮ হাজার মানুষ।
আরও পড়ুন: আমি মাস্ক পরব না: ট্রাম্প