আশিক আকবরের একগুচ্ছ কবিতা

  • আশিক আকবর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অলঙ্করণ শতাব্দী জাহিদ

অলঙ্করণ শতাব্দী জাহিদ

আত্মহত্যাকারিণী আন্নি আরিফা তরে

সে শুধু বলেছিল,
অ্যানি না।
আমি আন্নি।
আজ সে তার সমস্ত আত্মপরিচয় বিস্মৃত।

বিজ্ঞাপন

তখনও ভাবতে পারিনি, সে হবেন একজন আত্মহত্যাকারিণী।
শিট্!

তার সাথে ইনবক্সে কথা হবে না।
সে আর ফেইস বুকে কবিতা লিখবে না। এরচে’ দুঃখকর কী হতে পারে আর?

এমন অকর্ম করেছে সে
ওর পরের সকল কর্ম অর্থহীন লাগে
অর্থহীনতার এই রসে আস্থা রাখি না আর

মাগার এই আমিই,
আত্মদানকে উৎসাহিত করি।
মরা,
মারতে মারতে মরা।
মরা,
মরতে মরতে মৃত্যুহীনতায় আত্ম সমর্পণ।

যতিচিহ্নহীন

এক্সপ্রেস ট্রেন লোকাল ট্রেনের লাহান থেমে থেমে গেলেও হাওরের দিকে যেতে যেতে বাউল বাউলিনীর নাচ দেখতে দেখতে সুফি দরবেশের ঘূরণ নৃত্যে ফোটা পুষ্পে বলরুমের যুগল টুইস্ট টোকা দ্যায়
নাচ তুমি চলেছো কোথায় কোথায় পানির ওপরে গাছের পাতায় ট্রেনের দোলনে ঢেকির পারে জলের কেলিতে নিভৃতে দুই দেহের লেনে দেনে

নাসিমা সুলতানার প্রতি

একটি রাত ক্রসফায়ারে আর্তনাদ করে চাঁদ ও নক্ষত্র জগত
ব্রিজের তলায় নিশব্দে ঘুমায় গেরিলা শহর
আলোকিত চোখে সব শহরের পথে জ্বলা আলোর উৎস একই লাগে
তুই কি এমন দূরে গেলি কমরেড সই
রিকসার হুডের ফাঁকে পিছনে তাকিয়ে
আমিও পুরুষ ছিলাম
কবিতার উরু স্তনে অন্ধকারে বুঁদ
কত তরুণীর রক্ত ঢালা গোলাপ দেখিনি,
আহা কমরেড, এই একা বেলার মৌসুমে যদি আসো আগুনে আগুন রেখে জ্বালাতে আগুন
পুড়ে পুড়ে যেতে যেতে পৌঁছেই যাবে পরাবাস্তব পয়সার ঝলমলে ঝিলিক ফেলে
প্রলেতারিয়েত গৃহ-শয্যায়
ব্রহ্মাণ্ডকে বাগান বানাবোই সর্ববিদ বিশৃঙ্খলা ছুড়ে ফেলে
কুয়াশার ঘড়ি খুলে কমরেড শীতের সূর্যের উত্তাপ ছাড়া অচল এই চুপসানো গ্রহ

নারীর প্রতি

লয় ভঙ্গ না হলেও সুলতানা রাজিয়া জন্মায়।
ক্লিওপেট্রা পুরুষ রক্তেই করে স্নান।
আর স্যাফো,
তুড়ি মেরে উড়িয়ে পুরুষ, নির্জন নিজস্ব দ্বীপেই নেয় বাস।
নারী চিরকাল লুকানো বিজয়ী,
লম্বা চুলের আড়ে লুকানো মহাজন, মহামায়া।
তাকে শুধু ফোলা বুকে মাথা উঁচু দাঁড়াতেই বলি।
সে যদি দাঁড়ায়,
শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াবে পুরুষ।

ব্রহ্মাণ্ডের বকুল বনের লুকানো কোকিল
বহ্মপুত্র পাড়ে এইসব বলেছে আবার।
নারী,
ওহে দুধারের তীক্ষ্ণ তরবারি,
জাগো না আবার,
চিরকালের মুক্তির খুলতে দো’আর।

গুডবাই নন্দ এন্ড গং

প্রতিটা মৃত্যুর দশদিকে কালা কালা প্রেতেরা নৃত্য করে
এই হেমন্তে
এই রূপা ঝরা রাতে কে আর লাবণ্যকে লাগাবে না আজ
আধপাকা ধান্য ক্ষেতের চৌকি-পাতা চাটাই খুলিতে
শিশির ঝরতে থাকা শীত নামা রাতে কোনো ইঁদুর গর্তে যাবে না অদ্য নিশিতে
খুলিয়াছি তার সমস্ত পোশাক
খুলিয়াছি নিজের
শরীর থনে শরীরের তাপ নিতে নিতে মনে হচ্ছে
আজকের লুকানো বসন্তের দিনে
হত্যা করতে হবে
রেইনট্রি মিঞ্জিয়াম ইউক্যালিপটাস মেহগনি শিশু ঘোড়ানিম লম্বু...
নার্সারি-ম্যানকে দিতে চারা বন্ধের নির্দেশ
সরকারকে বলতে হবে প্রতিটা হেমন্তের ধান কাটা রাতে
তার পোষ্যদের যেন ধানের লাবণ্যে উপচানো জৌলুসে
বৎসরে একবার সপ্তাহ জুড়ে মাঠে নেমে আসে
আর হত্যা করে মৃত্যুর দশদিকে নৃত্য করা কালো কালো প্রেত-প্রেতিনীদের।