খুলনা-৪ আসনে নৌকার মাঝি হতে চান যারা!
খুলনা: খুলনা-৪ আসনে রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়াবাসীর কাছে প্রয়াত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা ছিলেন অতুলনীয় নেতা। গত ২৬ জুলাই রাতে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
ফলে এই আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকার মাঝি হতে চান অনেকে। যারা সবাই নির্বাচিত হয়ে সুজার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চান। তবে প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন- প্রয়াত মোস্তফা রশিদী সুজার একমাত্র ছেলে ও জেলা পরিষদ সদস্য খালেদীন রশিদী সুকর্ণ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামরুজ্জামান জামাল।
জানা গেছে, দলের অনেক নেতাই পিতা মোস্তফা রশিদী সুজার জায়গায় ছেলে খালেদীন রশিদী সুকর্ণকে সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চান। অপরদিকে, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান খুলনা-৬ ছেড়ে খুলনা-৪ আসনে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। আর দীর্ঘদিন থেকেই এই আসনে তৎপর আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামরুজ্জামান জামাল।
আইন অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের কোনও আসন শূন্য ঘোষণা করে প্রকাশিত গেজেট সংসদ সচিবালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে পৌঁছানোর ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে উপ-নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে বছরের শেষদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এ আসনটিতে উপ-নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে।
দলীয় একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কম’কে জানিয়েছেন, রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়াবাসী সুজার প্রতি অত্যন্ত দুর্বল ছিলেন। এজন্য সাধারণ নেতাকর্মীরা তার উত্তরসূরীকেই পরবর্তী সংসদ সদস্য হিসাবে দেখতে চান। তবে এ বিষয়ে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে নারাজ খালেদীন রশিদী সুকর্ণ। বাবার মৃত্যুতে পুরো শোকাবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন তিনি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘প্রয়াত মোস্তফা রশিদী সুজার সাংগঠনিক ও জনপ্রতিনিধিত্বের দক্ষতা অতুলনীয়। তার শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়। তিনি থাকলে তার আসনে দ্বিতীয় কাউকে প্রয়োজন হতো না। এলাকায় তাঁর দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে কিছুটা সাংগঠনিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে খুলনা-৪ আসনে দায়িত্ব দিলে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে ও এলাকাবাসীর উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আমি খুলনা-৬ নাকি খুলনা-৪ আসনের দায়িত্ব নেব সেটা নির্ভর করবে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণীয় ফোরামের ওপর।’
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামরুজ্জামান জামাল বলেন, ‘সুজা ভাইয়ের তুলনা তিনি নিজেই। তার শূন্যতা পূরণ করা অসম্ভব। তবে দীর্ঘদিন রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়াবাসীর সঙ্গে মিশে আমি তাদের আশা আকাঙ্ক্ষার কথা জেনেছি-বুঝেছি। তাই দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দায়িত্ব দিলে আমি অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এলাকাবাসীর ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবো। এলাকাবাসীও আমাকে গ্রহণ করবেন বলে বিশ্বাস করি।’