হাওলাদারের কপাল খুলতে পুড়তে পারে রাঙার

  • সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান রাঙা

এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মসিউর রহমান রাঙা

মন্ত্রিসভার রদবদলে কপাল খুলতে পারে জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের। আর কপাল পুড়তে পারে বর্তমান স্থানীয় সরকার সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙার।

জাতীয় পার্টির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা এমন আভাস দিয়েছেন বার্তা২৪.কমকে। তারা বলেছেন, বর্তমানে মন্ত্রিসভায় থাকা জাতীয় পার্টির ৩ সদস্যের মধ্যে একজন বাদ পড়তে পারেন। আর নতুন করে আরও দুই মুখ যুক্ত হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

নতুন করে জাতীয় পার্টি থেকে যুক্ত হওয়ার দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। যদিও গত ৯ সেপ্টেম্বর সংসদ অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নতুন আরও তিন জনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার জন্য সুপারিশ দিয়েছেন এরশাদ।

ওই তালিকায় রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ছাড়াও প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের নাম প্রস্তাব করা হয় বলে গণমাধ্যমে এসেছিলো। তবে এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ করা হয়নি। সে কারণে ধরে নেওয়া হয় বিষয়টি সঠিক ছিলো।

সে সূত্র ধরেই হাওলাদার ও বাবলুর মন্ত্রিসভায় যুক্ত হওয়ার উজ্জল সম্ভাবনা দেখছে সিনিয়র নেতারা। তবে কাজী ফিরোজ রশীদের নাম প্রস্তাব করা হলেও সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানা গেছে।

হাওলাদার ও বাবলু ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন সরকারেও ছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টি থেকে পূর্ণ মন্ত্রী মর্যাদায় ছিলেন, রওশন এরশাদ (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ), জিএম কাদের (বাণিজ্য), এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার (বিমান ও পর্যটন), ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (পানি সম্পদ), মন্ত্রী মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রতিমন্ত্রী ছিলেন মজিবুল হক চুন্নু (যুব ও ক্রীড়া), অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম (মহিলা ও শিশু)।

গতবারের সদস্যদের মধ্যে এবার বাদ পড়ছেন জিএম কাদের, ও সালমা ইসলাম। তাদের মন্ত্রিসভায় যোগদান করা বা নাম প্রস্তাবের বিষয়ে পার্টির মধ্যে কোনো আলোচনা নেই।

এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জাতীয় পার্টির সবচেয়ে দীর্ঘ সময় মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে সবচেয়ে সফল মহাসচিব মনে করা হয়। আবার বিগত নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় ছিলেন। সে কারণে তার বিষয়ে অনেকটা নিশ্চিত মনে করছে জাপার নেতাকর্মীরা। তবে সম্প্রতি দুদক তাকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ করে। বিষয়টি হাওলাদারের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় কি-না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোন দিলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। মনেতো হচ্ছে এই মন্ত্রিসভাই থাকতে পারে।

অনেকদিন ধরেই বলাবলি হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কথা। সিনিয়র মন্ত্রীরা অনেকেই এ বিষয়ে কথা বলে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করেই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করার বিষয় থেকে কিছুটা সরে আসেন। গণভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হতে পারে।

তার এই বক্তব্যের পর ধরে নেওয়া হয় আর হয়তো মন্ত্রিসভা রদবদল হচ্ছে না। কিন্তু সোমবার (৬ নভেম্বর) ৪ টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীর পদত্যাগ নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের বিষয়টি সামনে চলে আসে। আবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকেও নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের জোরালো দাবি রয়েছে।