সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রিতে বাধ্য করতে ভোক্তা অধিদফতর জরিমানা করায় ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। খুঁজে অতিরিক্ত মূল্যেও মিলছে না ডিম।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে পাবনার বাজারগুলোতে ঘুরে কোত্থাও ডিমের দেখা মেলেনি। এদিকে অস্থির সবজির বাজারও। অর্ধশত টাকার নিচে নেই কোনো সবজি। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ছুঁয়েছে প্রায় ৪০০ টাকার ঘর।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাবনার বড় বাজার ও লাইব্রেরি বাজার সহ অধিকাংশ বাজারেই ডিমের দোকান বন্ধ। প্রতিদিন ভোর থেকে খাচি খাচি ডিম সাজিয়ে যে ব্যবসায়ীরা বসে থাকতেন, দেখা মেলেনি তাদের। দুএকজন আশেপাশে থাকলেও দোকান বন্ধ রেখে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করছেন। ক্রেতারা ডিম কিনতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। বাজারের সব জায়গায় ঘুরেও মিলছে না ডিম।
ক্রেতারা জানায়, এতদিন অতিরিক্ত মুনাফার জন্য চড়া দামে ডিম বিক্রি করেছে ব্যবসায়ীরা, সামর্থ্য না থাকায় অল্প করে হলেও ডিম কিনে খেয়েছেন তারা। কিন্তু এখন সেটিও বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা।
ক্রেতা মাহবুব মিয়া বলেন, বিলাসিতার জন্য না হোক অন্তত প্রয়োজনীয় হারে তো ডিমটা খেতে চায় সবাই। ব্যবসায়ীরা লাভ করবে, বাড়ি গাড়ি করবে। এতে দেশের মানুষ মরুক বা বাঁচুক সেটা তাদের বিবেচনার বিষয় নয়। কোনোভাবে বাঁচার উপায় নাই। পেপে ছাড়া পঞ্চাশ টাকায় এক সবজি মেলা অসম্ভব। এক কেজি কচু কিনতে গেলে ৬০ টাকা, বেগুন ৮০/৯০ টাকা। সপ্তাহ বা মাসে বাজারে যে দর বৃদ্ধির হিড়িক দেখা যায়, এক বছরে একজন চাকুরীজীবীর ওই টাকা ইনক্রিমেন্ট হয় না। তাহলে কিভাবে বাঁচবে মানুষ?
এদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি, ফার্ম থেকে কেনা দামের থেকেও কমে বিক্রি না করলেই জরিমানা করা হচ্ছে। এজন্য তারা নতুন করে ডিম কিনছেন না, যা মজুত আছে লুকিয়ে বিক্রি করে শেষ করে আর ডিম আনবেন না। আগামীকাল ডিম বেচা বিক্রি সব বন্ধ বলেও জানান তারা।
ডিম বিক্রি বন্ধ রাখার ব্যাপারে পাবনার বড় বাজারের এক ব্যবসায়ী বার্তা ২৪.কম কে বলেন, সব স্তরে যদি শৃঙ্খলা না থাকে তাহলে শুধু আমাদের ধরে জরিমানা করে বাজার ঠিক করা সম্ভব নয়। আমরা কম দামে কিনতে পারলে অবশ্যই কমেই বিক্রি করবো। কিন্তু সেটা তো হচ্ছে না। ফার্ম থেকে একটি ডিমের দাম প্রায় ১৩ টাকার ওপরে পড়ে যাচ্ছে। অথচ ম্যাজিস্ট্রেট এসে বলেন ১১টাকার বেশি দাম নেয়া যাবে না। বেশি দামে ক্রয়ের রশিদ দেখালেও জরিমানা করেন। তাহলে কিভাবে ডিম বিক্রি করবো?
তিনি বলেন, অতিরিক্ত লাভ করলে ফার্ম মালিক ও বড় আড়ৎদাররা করে। তারা যদি দাম না কমান আমাদের সাধ্য আছে কমানোর? অথচ দোকান খুললেই জরিমানা গুণতে হচ্ছে। দুএকজন ব্যবসায়ীর কাছে খুবই অল্প কিছু ডিম ছিলো, সেগুলো আজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। বাজার ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আগামীকাল থেকে দোকান একদমই বন্ধ রাখবে ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে পাবনার বড় বাজারে আসা ক্রেতা শফিউল হাসান বলেন, বিবেকবোধ হারিয়ে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা। এ কয়দিন স্বাভাবিক লাভের বাইরে অতিরিক্ত লাভের জন্য চড়া দামে ডিম বিক্রি করলেন তারা। ডিম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই চলে গেছে । ব্যবসার নামে এমন দুর্বৃত্তায়ন রোধে সরকার প্রতিটি ডিমের মূল্য প্রায় ১১ টাকা করে বেধে দিয়েছেন। সে নির্দেশ তারা মানেন না। বাধ্য হয়ে ভোক্তা অধিদফতরকে দিয়ে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানাও করছেন। তাতেও তারা থামছেন না। এবার ভোক্তা অধিদপ্তর ও সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা ডিম বিক্রিই বন্ধ রাখলেন। যদিও তারা বলছেন কেনার চেয়ে কম দামে বিক্রি করলে লোকসানে পড়বেন, এজন্য ডিম বিক্রি করছেন না।
এদিকে স্বস্তি নেই সবজির বাজারেও। বেড়েছে ভোজ্য তেলের দামও। এ নিয়ে নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের। রবিবার (১৩ অক্টোবর) পাবনার বড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম প্রায় ৪শ টাকা ছুঁয়েছে। এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন ৮০-৯০ টাকা, আলু ৫২ টাকা, পটল ৫৫ টাকা, করোলা ৮৫, বরবটি ৮০-৯০ টাকা, পেপে ২৫-৩০ টাকা, কচু ৫৫-৬০ টাকা, পাতা কপি ৬০-৭০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টাঙ্গাইলে গলায় পরনের কাপড় প্যাঁচানো অবস্থায় আইয়ুব আলী (৪৭) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আইয়ুব আলী সদর উপজেলার ভবানীপুর পাতুলী এলাকার মৃত নছিম মিয়ার ছেলে। তিনি যাত্রাপালায় নারী সেজে অভিনয় করতেন বলে পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানায়।
পুলিশ জানায়, রোববার সকালে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের পিছনে ডিসি লেকের পশ্চিম পাড়ে পরিত্যক্ত ঘর থেকে গলায় পরনের কাপড় প্যাঁচানো অবস্থায় লাশ দেখে স্থানীয়রা। এ সময় তারা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করে। রাতের কোন এক সময় তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে যায় বলে পুলিশ ধারণা করছে।
নিহতের ছেলে অনিক মিয়া বলেন, আমার বাবা শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কাজের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে বাবার লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে হাসপাতালে এসেছি।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মেদ বলেন, নিহতের মুখে আঙুলের ছাপ ও গলায় পরনের কাপড় প্যাঁচানো অবস্থায় রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করে লাশ এখানে ফেলে রেখে যায়। এ বিষয়ে সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
‘আগামী প্রজন্মকে সক্ষম করি, দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ভোলায় নানা কর্মসূচির আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে রবিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ভোলা জেলা জেলা প্রশাসক এর আয়োজনে একটি র্যালি, আলোচনা সভা ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক মহড়ার অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালিটি ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যলয়ের সামনে থেকে বের হয়ে ভোলা শহর প্রদক্ষিন করে ডিসি কার্যলয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। র্যালির নেতৃত্ব দেন ভোলা জেলা প্রশাসক মো: আজাদ জাহান। র্যালি শেষে জেলা প্রশাসক কার্যলয়ের সামনে অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক এক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। মহড়ায় ভোলা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ এতে অংশ নেন।
পরে জেলা প্রশাসক কার্যলয়ে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মনজুর হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভোলার জেলা প্রশাসক মো: আজাদ জাহান।
এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভোলা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এসএম দেলোয়ার হোসাইন, সিপির উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স উপ-সহকারী পরিচালক লিটন আহম্মেদ, ভোলা জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যকারী সদস্য ও সাবেক যুব প্রধান আদিল হোসেন তপু প্রমুখ।
এসময় বক্তরা বলেন ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।তার মধ্যে সবচেয়ে দুর্যোগ প্রবন জেলা ভোলা।
তাই এই জেলা মানুষকে দুর্যোগের ক্ষয় ক্ষতি কমিয়ে আনতে সবাইকে সচেতন করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলতি সপ্তাহেই বিচারক নিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
রোববার (১৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। ছুটির দিন হলেও এদিন সংস্থাটির ধানমন্ডি কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন সদস্যরা। অভিযুক্ত আর কেউ যেন দেশত্যাগ করতে না পারে এজন্য মেনে চলা হচ্ছে কঠোর গোপনীয়তা।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, বিচারক নিয়োগ হলে এ সপ্তাহেই জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হবে।
তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়ার পাশাপাশি ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিমে নিয়োগ হলেও বাকি ছিল বিচারক নিয়োগ। গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, চলতি সপ্তাহেই এজলাসে বসবেন বিচারকরা। শুরু হবে বিচার প্রক্রিয়া।