‘মুখে নয়, আমি কাজ করে দেখাতে চাই’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। ছবি: বার্তা২৪.কম

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। ছবি: বার্তা২৪.কম

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ কোটি টাকা দেনা নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। করপোরেশন কী অবস্থায় আছে, সেটা এখনো ভালো ভাবে বলতে পারছি না। তবে যতদিন দেনা পরিশোধ না হবে, ততদিন আমি করপোরেশন থেকে কোনো সম্মানী ভাতা গ্রহণ করবো না।’

মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে নগর ভবনে দায়িত্বভার গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হোসেন নতুন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

বিজ্ঞাপন

এ সময় সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। আর করপোরেশনের অবস্থা বেশ ভালো করেই তিনি জানেন। তার সুদৃষ্টি যদি আমার প্রতি থাকে। তাহলে এই দেনা আমার কাছে কোনো চ্যালেঞ্জ নয়।’

এ সময় উন্নয়নের বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা যাতে পূরণ করতে পারি, সেই লক্ষ্যেই কাজ করব। তাছাড়া উন্নয়ন করার মতো অনেক কিছু আছে। তবে মুখে নয়, আমি কাজ করে তা দেখাতে চাই। নির্বাচনের আগে আমি বারবার বলেছি বর্ধিত এলাকার উন্নয়নে কাজ করব। বস্তি ও নগরীর সড়ক ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করব। সারা বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার ছোঁয়া যেন বরিশাল শহরে লাগে সেই পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করব।’

অতীতে করপোরেশনের দুর্নীতির বিষয়ে সাদিক বলেন, ‘অতীতের দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। এতে কোনো মেয়র বা কাউন্সিলর জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমনকি যদি আমি নিজেও জড়িত থাকি সেই বিষয়েও যথাযথ নিয়মে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশনের আইন মান্য করে প্রত্যেককে কাজ করতে হবে। আমি বিষয়টা নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের আগেই বলেছি। কোনো কাউন্সিলর ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না। আমি সামনের সিটি নির্বাচনে মানুষের কাছে আর ভোট চাইব না, মানুষ যাতে আমাকে এমনিতেই ভোট দেয় সেই ভাবে কাজ করার মানসিকতা নিয়ে আমি এখানে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি।’

সেবার বিষয়ে নব মেয়র বলেন, ‘আমি যেহেতু সিটি করপোরেশন থেকে কোনো টাকা নিব না, সেহেতু করপোরেশনে কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী টাকা নিয়ে কোনো কাজ করতে পারবে না।’

মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ভূমিকার বিষয়ে মেয়র সাদিক বলেন, ‘এখানে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা রয়েছেন। তাছাড়া বিগত দিনে মহানগর আওয়ামী লীগ মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। এখন যেহেতু আমার হাতে প্রশাসনিক ক্ষমতা আসছে, সেহেতু মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ভূমিকা থাকবে।’

জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাবা মন্ত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ বরিশালবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মেয়র বলেন, ‘বরিশালের মানুষ যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমাকে এই চেয়ারে বসিয়েছে, তাদের আশা যেন পূরণ করতে পারি সেজন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি।’

এদিকে দায়িত্ব গ্রহণ শেষে নগর ভবনের সামনে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলরদের অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে অভিষেক অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বরিশাল ২ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম ইমামুল হক, বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোশারফ হোসেন, বরিশাল জেলা প্রশাসক অজিয়র রহমান, বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, ডিজিএফআইয়ের বরিশাল প্রধান কর্নেল শরিফ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও বরিশাল চেম্বার অব কর্মাস ইন্ড্রাস্ট্রিজের সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু, সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ ও সেরনিয়াবাত মঈন আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

অভিষেক অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত সিটি মেয়র ও কাউন্সিলরদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদের খতিব নুরুর রহমান বেগ।