এনআরসি ইস্যুতে পথে নামলেন মমতা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কলকাতা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এনআরসির প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

এনআরসির প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ভারতের আসাম রাজ্যে নাগরিক পুঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকায় ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে। এ নিয়ে বরাবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোচ্চার ছিলেন। এবারও পশ্চিমবাংলায় এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) পথে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দল। উত্তর কলকাতার সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করলেন তিনি।

প্রতিবাদ মিছিল শেষে শ্যামবাজারে একটি জনসভায় মমতা বলেন, 'বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষ থেকেই বিজেপি এ রাজ্যেও এনআরসি প্রক্রিয়া চালু করতে চাইছে। ধর্মের বিভাজনই এনআরসির প্রধান উদ্দেশ্য। কোনো মতেই ধর্মের নামে বাংলায় এই বিভাজন করতে দেবেন না।'

বিজ্ঞাপন

এনআরসি ইস্যুতে পথে নামলেন মমতা

তিনি বলেন, 'যেকোনো ভারতীয় যেকোনো রাজ্যে থাকতে পারে। কোনোদিন কোনো সমস্যা ছিল না। এখন দিল্লি থেকে বসে ধর্মের নামে জাতির নামে ভাষার নামে বিভাজন করছে। বিহারিরা বিহারে থাকবে, পাঞ্জাবিরা পাঞ্জাবে থাকবে কোন ধরনের কথা। আর অন্য কোন রাজ্যে বাঙালি থাকলেই সে বাংলাদেশি এটা মানা যায় না।'

বিজ্ঞাপন

তৃণমূল নেত্রী বলেন, 'রাজ্যে ক্ষমতায় এলে দু কোটি বাঙালিকে তাড়াবে অনেক বড় মাতব্বর হয়েছে ওরা। দুই কোটি তো পরের কথা, আগে বাংলার দুজন মানুষের গায়ে হাত দিয়ে দেখাক!' এনআরসির প্রতিবাদে শ্যামবাজারের সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুরু থেকেই এনআরসি'র প্রতিবাদে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে থাকেন তিনি। মমতা বলেন, 'বাংলায় এনআরসি হবে না। বাংলা কখনো মাথা নত করবে না, বাংলাকে হিংসা করে লাভ হবে না। এই লড়াই অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। কেন স্বাধীন নাগরিক পরাধীন হবে? আরেকবার ভারত ভাগের চেষ্টা করবেন না। তা মেনে নেবে না বাংলা। আমি বেঁচে থাকতে এনআরসি চালু করতে পারবেন না। আর আমি আমার আগামী চার প্রজন্মও এমন তৈরি করে যাচ্ছি, যে তখনো কেউ এনআরসি চালু করতে পারবে না।'

এনআরসি ইস্যুতে পথে নামলেন মমতা

অবশ্য এর আগে আসামে এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর রাজ্য বিধানসভায় তার বিরোধিতায় বিরোধীদলগুলোকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন মমতা। যার সুবাদে অধিবেশন থেকেই এই প্রশ্নে বিজেপি বিরোধী ঐক্যের ডাক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু আনুষ্ঠানিক বিরোধিতাই নয়, তৃনমূল কংগ্রেসকে রাস্তায় নামিয়ে এনআরসি প্রতিবাদে শামিল হলেন তিনি। দলের এই প্রতিবাদ মিছিলে নেতৃত্ব দিলেন স্বয়ং মমতা।

লোকসভা ভোটের পর এই প্রথম সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে পথে নামলেন মমতা। অবশ্য এ নিয়ে বিধানসভাতে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি তাঁর কট্টর বিরোধী রাজ্য কংগ্রেস ও বামপন্থীদের পাশে দাঁড় করাতে সমর্থ হয়েছেন। ফলে এনআরসিকে ঘিরে রাজ্যস্তরে রাজনৈতিক মেরুকরণে আপাতত সফল মমতা। এমনই মনে করছে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক মহল।