ডেঙ্গুর জন্য বাংলাদেশকে ফের দায়ী করলেন মমতা
পশ্চিমবাংলার ডেঙ্গু পরিস্থিতির নেপথ্যে অন্যতম কারণ বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ। তৃণমূলের এক দলীয় মিটিংয়ে ডেঙ্গুর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মমতার কথা উদ্ধৃতি করে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) তৃণমূলের এক নেতা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এর আগেও এ বছরের মে মাসে একবার পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গু বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বাংলাদেশকে দায়ী করেছিলেন। এবারও তাই করলেন।
অবশ্য জুন মাসে এমন কারণের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন কলকাতা করপোরেশনের ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তখন তিনি বলেছিলেন ‘মুখ্যমন্ত্রী’ ভুল বলেন নি।
মমতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে পশ্চিমবাংলায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই সীমান্ত লাগোয়া এলাকার মানুষ। তাই তিনি চান, বিষয়টা নিয়ে বাংলাদেশের সাথে কথা বলুক ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
এর আগে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী একই কথা বলেন, ‘কাউকে আঘাত করার জন্য বলছি না। যশোর রোড ভারত বাংলাদেশ বর্ডার। বাংলাদেশে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। দুই দেশ এত কাছে, ট্রেনে কে কোথায় যাচ্ছে- বলা মুশকিল! অনেক সময় ডেঙ্গু বাইরে থেকেও চলে আসে। শুধু বাংলাদেশ নয় পাশ্ববর্তী রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও অনেকে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় আসে। কী করব, মানবিক ব্যাপার। এখানকার মানুষও তো বাইরে যাচ্ছে।’
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগস্ট-সেপ্টেম্বর মিলিয়ে রাজ্যে মোট ১৭ জন মারা গিয়েছেন ডেঙ্গুতে। তবে এর সাথে মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, প্রতিদিন গড়ে ২১০ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। পশ্চিমবাংলায় ডেঙ্গুর মৃত্যু হার শতকরা ২ শতাংশ, যা অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম।’
চলতি বছর রাজ্যে সব মিলিয়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বলে সরকারের নজরে এসেছে, এমনটাই জানান মুখ্যমন্ত্রী। এরমধ্যে তিনটি জেলার মানুষ এর সবচেয়ে বেশি শিকার। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া ও আলিপুরদুয়ার।
এরমধ্যে উত্তর ২৪পরগনার ৫ হাজার ৪৭৯ জন অর্থাৎ হাবরা, অশোকনগর, গাইঘাটা, বনগাঁসহ বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেই মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেশি বলে জানান মমতা। একেবারে পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া দুই জেলা যশোর ও খুলনাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এ তথ্য দেন মমতা। এ নিয়ে বিরোধীদের তরফে সিপিএমের নেতা সুজন চক্রবর্তী জানতে চান, এ ব্যাপারে কি মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন?
মমতা বলেন, ‘আমার পক্ষে হাসিনা সরকারকে বলাটা শোভনীয় নয়। এটা বলা কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশমন্ত্রকের কাজ। কেন্দ্রীয় সরকার কথা বলতে পারে। আমরা কেন্দ্রকে অ্যাডভাইজরি পাঠাতে পারি। আমি তো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে আবেদন করব, আপনারাও ব্যাপারটা দেখুন। কারণ, সংক্রামক ব্যাধি যে আন্তর্জাতিক বেড়া মানে না।
এছাড়া মমতা বলেন, ‘আগে তো স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে প্লেনে উঠতে দিত। জ্বর হলেও উঠতে দিত না। এখন ওসব উঠে গিয়েছে!’