দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হবে ভ্যাট: অর্থমন্ত্রী

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্ত২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল / ছবি: সংগৃহীত

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল / ছবি: সংগৃহীত

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, `বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য ভ্যাটের উপর নির্ভরশীল। রাজস্ব অগ্রযাত্রায় যে পথে এগিয়ে যাচ্ছি তার মূল চালিকা শক্তি ভ্যাট। আগামী অর্থবছর থেকে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে।’

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে শেরে-বাংলা নগরের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে নিজ কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের টেকনিক্যাল মিশন (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।  এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছে এবং গত অর্থ বছরে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আমরা চলতি অর্থবছরে ৮.১১ থেকে ৮.২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি। আমরা স্বাস্থ্য, খাদ্য, শিক্ষাসহ প্রায় সকল খাতে অগ্রগতি অর্জন করেছি। ১০ বছর পূর্বের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশ অনেক তফাত রয়েছে। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বাজেটে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রাকে জনগণের সহযোগিতা অর্জনে সচেষ্ট থাকব। লক্ষ্য যদি বড় থাকে, লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টাও হয় বৃহৎ। সরকার সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

নতুন ভ্যাট বাস্তবায়নে মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ১ জুলাই থেকেই নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করবে সরকার। আগামী জুলাইয়ে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া ভ্যাট আইনে একাধিক স্তর থাকবে। এক্ষেত্রে সিঙ্গেল রেটের পরিবর্তে সহনীয় মাল্টিপল রেট থাকবে। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো ভ্যাট দিতে হবে না। এ আইনের আওতায় ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস বা ইএফডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। ইএফডি ক্রয় প্রক্রিয়া এনবিআরে চলমান আছে। অর্থাৎ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেতা পণ্য কিনলে মূল্য ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে পরিশোধ করবে। যা থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ভ্যাটের দৈনিক ও মাসিক হিসাব পাওয়া যাবে। এমনকি এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীর সব বেচা-কেনার তথ্যও সংরক্ষিত থাকবে। তাই ভ্যাট ফাঁকির কোনো সুযোগ থাকবে না।’

এছাড়া এই ভ্যাট আদায়ে ফাঁকি রোধে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস ব্যবহারের জন্য এনবিআরে যে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে তাতে করে একটি বড় কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলেও জানান তিনি।

আইএমএফ’র প্রধান ও সিনিয়র অর্থনীতিবিদ মি. আসকেল সোরেনসেন অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘আমরা এনবিআরের রাজস্ব খাত সংস্কারে অটোমেশনের জন্য প্রয়োজনীয সুপারিশ করবে। মিশনের কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর ব্যবহার উন্নয়নে করণীয় খুঁজে বের করা এবং তা এনবিআর ও অর্থমন্ত্রণালয়কে অবগত করা।’

আইএমএফ’র প্রতিনিধি দল অর্থমন্ত্রীর রাজস্ব খাত সংস্কারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং এ লক্ষ্যে একযোগে এনবিআরের সাথে কাজ করারও কথা জানান।