রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়

  • আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর পাওয়ার প্লান্টের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ মোট ৩৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ছাড় করা হয়েছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম কিস্তি বাবদ ছাড় করা হয় ৬৪৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। ফলে দুই দফায় মোট এক হাজার ২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ছাড় করা হলো। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৯০ শতাংশই ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়ার ফেডারেশন। বর্তমানে পাবনা জেলার রূপপুর এলাকায় এক হাজার ৬২ একর জমির ওপর এই প্রকল্পের কাজ চলছে। গত অক্টোবর মাস পর্ষন্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের হার মাত্র ৯.০৩ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, রাশিয়ান ফেডারেশনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটস্ট্রয় এক্সপোর্টকে চতুর্থ কিস্তির (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ঋণ দিতে প্রয়োজনীয় ইনভয়েস এবং ব্যাংক গ্যারান্টি পাঠানো হয়েছে। চতুর্থ কিস্তিুতে ঋণ পাওয়া যাবে ৪ কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ডলার।

প্রকল্প পরিচালক ড. সৈকত আকবর বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘প্রকল্পের জন্য অর্থের কোনো সমস্যা নেই। অর্থ ঠিক ভাবেই ছাড় ও ব্যয় করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে প্রথম রিঅ্যাক্টরের (উৎপাদন কেন্দ্র) দেয়াল তৈরি শুরু হয়। আর ২০১৭ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় রিঅ্যাক্টর নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো।’

তিনি আরো বলেন, ‘মানব সম্পদ উন্নয়ন থেকে শুরু করে রিঅ্যাক্টরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, পরিবেশের ভারসাম্য সংরক্ষণ এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পের কাজ চলছে।’

জানা গেছে, নির্মিতব্য ভিভিইআর-১২০০ টাইপের দুই রিঅ্যাক্টরে রয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা, যা মনুষ্য সৃষ্ট বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় সক্ষম। জাপানের ফুকুশিমা পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রের নকশা করা হয়েছে। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় নকশায় বিভিন্ন অ্যাক্টিভ ও প্যাসিভ শীতলীকরণ ও চাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যেকোনো দুর্ঘটনায় পারমাণবিক চুল্লির মূল অংশের (কোর) বিগলন প্রতিরোধ ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের চেয়েও কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। শেষ পর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোর ক্যাচার রাখা হয়েছে, যা মারাত্মক দুর্ঘটনায় তেজস্ক্রিয় ছড়ানো প্রতিরোধ করবে।

আরো জানা গেছে, বর্তমানে অতিরিক্ত রিঅ্যাক্টর বিল্ডিংয়ের দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে, চুল্লী ভবন ও ভিত্তি স্ল্যাব শক্তিশালী করা হয়েছে, বাষ্প স্থিতিশীলকরণ বায়ু সংক্রান্ত কুলিং টাওয়ার ও অন্যান্য কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ইউনিট-১ ২০২৩ সালে এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট কমিশন করা হবে। দু’টি ইউনিট থেকে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার রোসএটোম কোম্পানির সাথে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি সই করে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ১২.৬৫ বিলিয়ান মার্কিন ডলার বা এক লাখ সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়।