ঢাকা লিট ফেস্টের জন্য বরাদ্দ আড়াই কোটি টাকা!

  • আসিফ শওকত কল্লোল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত


দেশি-বিদেশি স্পন্সর সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ সহায়তা!


ঢাকা লিট ফেস্ট-২০১৮ আয়োজনের জন্য আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে আয়োজকরা। গত বছর এ সহায়তার পরিমাণ ছিল এক কোটি টাকা। সম্প্রতি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. শেখ মুসলিমা মুন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এ অর্থ চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কর্মকর্তাদের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,  অর্থ মন্ত্রণালয়ের  পৃষ্টপোষকতায় ও বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় আগামী ৮-১০ নভেম্বর লিট ফেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এই আন্তজাতিক সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৫ সাল থেকে আয়োজকরা বেসরকারি স্পন্সরের পাশাপাশি সরকারি সহায়তা নিতে শুরু করে। কিন্তু ২০১১-২০১৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি হে ফেস্টিবল নামে পরিচিত ছিল। দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সহায়তায় হে ফেস্টিবলের আয়োজন করতো যাত্রিক নামের একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান। ওই সময় কোনো সরকারি সহায়তা নেওয়া হতো না।

বিজ্ঞাপন

সর্বশেষ ২০১৪ সালের আয়োজনে পৃষ্ঠপোষক ছিল ডেইলি স্টার, প্রথম আলো, এবি ব্যাংকসহ অন্তত ৩৭টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। আর ২০১৭ সালের আয়োজনে টাইটেল স্পন্সর ছিল বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউন এবং প্রধান স্পন্সর ছিল ব্র্যাক ব্যাংক।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা লিট ফেস্টের পরিচালক ও প্রযোজক সাদাফ সাদ সিদ্দিকী একটি চিঠি দিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা চেয়েছেন। গত বছর এই উৎসবে দেশ বরেণ্য ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কবি, সাহিত্যিক, লেখক, বিজ্ঞানী, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ত্ব এবং সাংবাদিকরা অংশ নেন। যাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ব নন্দিত অস্কার বিজয়ী হলিউড অভিনেত্রী টিন্ডা সুইনটন, আরবি কবিতার জীবন্ত কিংবদন্তি কবি এ্যডনিস, আন্তর্জাতিক ম্যান বুকার প্রাইজ বিজয়ী লেখক বেন ওকরি প্রমুখ।

বিদেশিদের জন্য আয়োজিত লিট ফেস্টের মতো সাহিত্য সম্মেলনের বিরোধীতা করে কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা রেজা ঘটক বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘হে ফেস্টিবলের নাম পরিবর্তন করে ঢাকা লিট ফেস্ট করা হয়েছে মাত্র। এটা আয়োজনে বড় করপোরেট হাউজের যে বিশেষ লক্ষ্য ছিল সেটার চারিত্রিক কোনো পরিবর্তন হয়নি। ওই উৎসবে বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হলেও শুধুমাত্র কয়েকজন ইংরেজি লেখককে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘আগে অনেক কবি, লেখক ও সাহিত্যিককে এই আয়োজনের বিরোধিতা করতে দেখেছি। কিন্তু এখন তারাও ঢাকা লিট ফেস্টে যোগ দেন। করপোরেট হাউজ সরকারি পৃষ্টপোষকতায় জনগণের টাকা নিয়ে এই উৎসবের আয়োজন করে। কিন্তু আয়োজনে ব্যাংক, বিদেশি এয়ারওয়েজ স্পন্সর হিসেবে থাকে। তাহলে আয়োজনের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে টাকা নিতে হবে কেন?’

রেজা ঘটক বলেন, ‘অনুষ্ঠানে ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করা ছেলে-মেয়েরা অংশ নেন, যা সুস্পষ্ট বৈষম্য সৃষ্টি করছে। একটি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন কেন এরকম বৈষম্যমূলক হবে? দেশের লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে বাংলা একাডেমিরও এরকম উৎসবের আয়োজন করা উচিত।’