দেশের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে রয়েছে নারীরা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নারীরা আজ এমন এক জায়গায় দাড়িয়ে আছে যে তারা পুরুষের সমান কিংবা তাদের চাইতেও বেশি যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

তিনি বলেন, নারী পুরুষের সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭ প্রথম নারী নীতি প্রণয়ণ করেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে নারী নীতি বাতিল করে নারী পুরুষের সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের পথ রুদ্ধ করেছেন। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ সরকার শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ২০১১ সালে নারীর উন্নয়নে নীতি প্রণয়ন পুনরায় চালু করেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর একটা হোটেলে কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেন এর ৬৫তম সেশনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং ইউএন উইমেন বাংলাদেশের আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরোও বলেন, বাংলাদেশে যারা নিজেদের বড় রাজনীতিবিদ বলে দাবি করেন তাঁদের দলে কিন্তু নারীদের এ ধরনের অবস্থান নেই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নারীরা রয়েছে। নারী বিচারক এবং বর্তমানে নিম্ন আদালতে ১৮৪৫ জন জজ আছেন, তারমধ্যে ৫৪৪ জনই নারী। বাংলাদেশের মেজর জেনারেল নারী। আগে কখনো নারী পুলিশ ছিলো না, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসে নারী পুলিশ নিয়োগ দিয়েছেন। দেশে ১৫ হাজার নারী পুলিশ রয়েছে, তার মধ্যে অনেকেই উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা এবং বর্তমানে নারী ইউএনও'র সংখ্যা ১৩৪ জন। এছাড়া নারীরা এখন শিল্প উদ্যোক্তা সহ বিভিন্ন পেশায় সফলতা অজর্ন করছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের পুনর্বাসন ও শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারী উন্নয়নের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করেই তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীর উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন আইন, নীতি, কৌশল প্রণয়ণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। যা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে এবং নারীর ক্ষমতায়নে উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে রোল মডেল সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ প্রতিবেদন ২০২০ অনুযায়ী ১৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৫০তম। ভিশন ২০২১ এবং ২০৪১ এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে ক্রমান্বয়ে একটি মধ্যম এবং উচ্চআয়ের দেশের পরিণত করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সকল আন্তর্জাতিক ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা সকলেই এখন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা বা সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল বাস্তবায়নে কাজ করছি। এক্ষেত্রে ৫নং গোল সরাসরি নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সকল ধরণের সহিংসতা প্রতিরোধ ,বাল্যাবিবাহ নিরোধ, নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের সাথে সম্পৃক্ত।

তিনি আরোও বলেন, আমরা আশা করি এমডিজি অর্জনের সাফল্যের মতো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে এসডিজি অর্জন করতে সক্ষম হবো। নারীর ক্ষমতায়ন, সমসুযোগ, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দারিদ্রমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে কমিশন অন দি স্ট্যাটাস অব উইমেন এর ৬৫তম সভা উপলক্ষ্যে মতবিনিময় সভা আয়োজনের জন্য ইউএনওমেন বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সভায় এবছরের ড্রাফট এগ্রিড কনক্লিউশনের উপর মতামতের জন্য ৫টি গ্রুপে দলীয় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় আলোচনা শেষে উপস্থাপন ও মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় এবং মুক্ত আলোচনায় সরকারী কর্মকর্তা, বেসরকারী, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভায় সভাপতির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: সায়েদুল ইসলাম নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা প্রদান এবং নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সামগ্রিক উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।

সভায় ইউএন ওমেন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনেটটিভ শোকো ইশিকাওয়া অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ সেক্রেটারি জেনারেল এর কমিশন অন দি স্ট্যাটাস অব উইমেন এর প্রতিপাদ্য বিষয়ে রিপোর্ট এবং খসড়া গৃহীতব্য সিদ্ধান্তের বিষয়টির উপর পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। উল্লেখ্য জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী ১৫-২৬ মার্চ ২০২১ সময়ে কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেন এর ৬৫তম সেশন অনুষ্ঠিত হবে। কোভিড মহামারীর কারণে এবছর সেশনটি ভার্চুয়ালী অনুষ্ঠিত হবে।