ফেসবুকে গুজব: আঞ্চলিক অফিসের সহায়তায় ডিসেম্বরে প্রতিবেদন
নিরাপদ সড়ক ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এসব মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত আইডিগুলো ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।সেখানে পোস্টগুলো পুনরায় চেক করা এবং এসব আইডি থেকে মুছে ফেলা পোস্টগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। সবকিছুমিলে আগামী ডিসেম্বর মাসে এসব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হতে পারে।
এসব মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্তউপ-কমিশনার নাজমুল ইসলাম বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে দায়ের হওয়া ৫৩টি মামলারতদন্ত চলছে। আমরা একটু সময় নিচ্ছি, কারণ মামলাগুলোর সাথে শিক্ষার্থীরা জড়িত। ফলে একটু নিখুঁতভাবেই বিষয়টি দেখতে হচ্ছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, কোনো নির্দোষ ছাত্র যেন শাস্তি না পায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন যে কেউই করতে পারে, তবে গুজব ছাড়ানো আপরাধ। আমরা এই বিষয়ে অধিকনিশ্চিত হতেই ফেসবুকের আঞ্চলিক কার্যালয়ের সাহায্য নিয়েছি। এর বাইরেও কিছু বিষয় সিআইডি'র ফরেনসিক ল্যাবেপাঠানো হয়েছে। ফলে ফলাফল হাতে আসতে আরও দুই মাস সময় লাগতে পারে।’
এ বিষয়ে সিআইডি'র বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজ্রুল ইসলাম বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘আইসিটি আইনের অধীনেদায়ের করা মামলায় জব্দ করা কিছু উপাদান আমাদের ল্যাবে এসেছে। আমরা বিষয়গুলো নিখুঁতভাবে পরীক্ষা করার চেষ্টাকরছি। আশা করছি, দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হবে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনশুরু করে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হয়। ফলে আইন-শৃঙ্খলাপরিস্থিতি অবনতি ঘটায় বিভিন্ন থানায় ৫৩টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। যাদের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী ছিল ৫৩ জন। পরে ঈদের দু’দিন আগে (১৯ আগস্ট) ৮৩জনকে জামিন দেন আদালত।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে অপপ্রচার মামলায় গ্রেফতার হন নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন নিঝুম।তিনি বার্তা২৪.কম‘কে বলেন, ‘আমাকে ৬ আগস্ট গ্রেফতার এবং ২০ আগস্ট জামিন দেওয়া হয়। জেলে থাকা দুই সপ্তাহআমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়। এই কয়েকটা দিনে আমাকে পুরোপুরি হতাশ করে তোলা হয়েছে। আমি শত চেষ্টাকরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছি না।‘
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলার শুনানিআছে। আমার একবারও মনে হয়নি, আমি অপরাধ করেছি। আশা করি, এই মামলা থেকে আমি মুক্তি পাবো।’
অন্যদিকে, আটক কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৮ নেতাকেও জামিন দিয়েছেন আদালত।