দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) গঠনতন্ত্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয় বিসিবি। তবে গঠনতন্ত্র সংস্কারের খসড়া নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ঢাকা কেন্দ্রীক ক্লাবগুলোর সংগঠন ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম)।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে একটি হোটেলে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে সিসিডিএম। যেখানে সংবাদ মাধ্যমে পাওয়া গঠনতন্ত্র সংস্কারের খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়। মতবিনিময় সভায় সংগঠনটি এই খসড়া বাতিলে বিসিবিকে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দেয়।
দেশে বিগত সরকারের আমলে যেসব প্রতিষ্ঠানে রাজনীতিকায়ন হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বিসিবি। তাই ক্ষমতার পালাবদলের পর নতুন বোর্ড সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বিসিবির গঠনতন্ত্র সংশোধনের উপর জোর দেন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ।
সেই লক্ষ্যে গঠিত হয় পাঁচ সদস্যের সংস্কার কমিটি। সেই কমিটির আহ্বায়ক বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব সাইফুল ইসলাম, বিসিবির লিগ্যাল অ্যাডভাইজর মো. কামরুজ্জামান, ব্যারিস্টার শেখ মাহদি এবং এ কে এম আজাদ হোসেন এই কমিটির সদস্য।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বর্তমান গঠনতন্ত্রে বলা আছে- পরিচালক সংখ্যা হবে ২৫জন। যেখানে ঢাকার ক্লাবগুলো থেকে ১২ জন, জেলা-বিভাগীয় পর্যায় থেকে ১০, সাবেক ক্রিকেটারদের থেকে ১ ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে ২ জন নিয়ে গঠিত হবে পরিচালনা পর্ষদ। গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি প্রাথমিক খসড়ায় প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকার ক্লাবগুলোর মধ্যে পরিচালক সংখ্যা ১২ থেকে চার এবং কাউন্সিলর সংখ্যা ৭৬ থেকে কমিয়ে মাত্র ৩০ (প্রিমিয়ার ১২, প্রথম বিভাগ ৮, দ্বিতীয় বিভাগ ৬ ও তৃতীয় বিভাগ ৪) করার।
বিসিবির এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন সিসিডিএমের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ঢাকার সকল ক্লাবের পক্ষ থেকে বিসিবিকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিলাম। এই সময়ের মধ্যে তারা যদি এই সংশোধনের প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয় তাহলে আমরা শনিবার বোর্ড সভাপতির সঙ্গে বসব। সেখানেও কোনো সমাধান না হলে ঢাকার ক্লাবগুলো খেলায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকব।’
বিসিবির সাবেক পরিচালক জিএস হাসান তামিম গঠনতন্ত্র সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, ‘সিসিডিএমের পালস হয়তো তারা বুঝেনি। হেলাফেলাভাবে দেখা উচিত হয়নি। এটা না করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
সংস্কার কমিটির খসড়া প্রস্তাবে ক্লাব ক্রিকেটের সংশ্লিষ্টতা কমলেও বাড়ছে ডিভিশন ও ডিসট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রভাব। আগে ১০ জন পরিচালক আসতে পারতেন বিভাগ ও জেলা থেকে। সেটি তিনজন বাড়িয়ে ১৩ করার প্রস্তাব আনা হচ্ছে। প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে ঢাকা বিভাগ থেকে একজন বাড়িয়ে তিনজন করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে ২৫ জন পরিচালক থেকে কমিয়ে আনা হচ্ছে ২১-এ। তাতে দেখা যাচ্ছে- বিভাগ, জেলা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও ইন্সটিটিউশনের ১৭ জন পরিচালকই হবেন সংশ্লিষ্ট সরকারের আস্থাভাজন কেউ। এটি বাস্তবায়িত হলে বোর্ডে ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট ক্লাবের কর্তৃত্ব কমলেও সরকারের প্রভাব বাড়বে বলে মনে করছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অনেকেই।