গুরবাজের সেঞ্চুরিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াল আফগানরা

  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাকিব আল হাসান

সাকিব আল হাসান

প্রথম দুই ম্যাচে এসেছে দুর্দান্ত জয়। সিরিজের শেষ ম্যাচেও দাপটের সঙ্গেই জিততে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে গেল টাইগারদের। আগের দুই ম্যাচের দুরন্ত ব্যাটিং ফর্মটা এবার যেন হাত বদল হয়েছে। ব্যাটিং ছন্দ ফিরে পেয়ে ৭ উইকেটর দুর্বার এক জয় ছিনিয়ে নিয়েছে আফগানিস্তান। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ টানা হারায় এই জয়টা সফরকারীদের জন্য কেবলই সান্ত্বনার। 

সিরিজের শেষ ম্যাচে হেরে প্রতিপক্ষ আফগানদের হোয়াইটওয়াশের সুবর্ণ সুযোগ মিস করল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সঙ্গে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের মূল্যবান ১০ পয়েন্ট খুইয়েছে তামিম ইকবালের দল। যদিও ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় স্থানে রেখে ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে থাকলেও ইংলিশদের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে মাত্র ৫ পয়েন্টে।

বিজ্ঞাপন

বল হাতে আলো ছড়াতে আফগানদের সময় লাগলেও। ব্যাটিংয়ের শুরুটাই ছিল দুর্দান্ত। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও রিয়াদ হাসান ওপেনিং জুটিতেই ৭৯ রান তুলে অতিথিদের জয়ের ভিত গড়ে দেন। ৩৫ রান করে রিয়াজ ফিরলেও তার উদ্বোধনী পার্টনার গুরবাজ চালিয়ে যান ব্যাটিং তাণ্ডব। হাঁকিয়ে ফেলেন মন মাতানো এক সেঞ্চুরি। গুরবাজ ১১০ বলে ৭ বাউন্ডারি ও ৪ ছক্কায় খেলেন ১০৬* হার না মানা অসাধারণ এক ক্রিকেটীয় ইনিংস। তবে তিন রানের জন্য ফিফটি মিস করেন রহমত শাহ। ৪৭ রানের ইনিংসটি সাজান তিনি ৬৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে। দুজনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ১২৩ বলে লিখেন ১০০ রানের পার্টনারশিপ। ত্রয়ীর ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে আফগানিস্তান ৩ উইকেট হারিয়ে ৪০.১ ওভারে ছুঁয়ে ফেলে ১৯৩ রানের লক্ষ্যটা।

বাংলাদেশের জার্সি গায়ে একটি উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। আর মেহেদী হাসান মিরাজ শিকার করেন দুটি উইকেট।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুর্বার এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে গড়ে দিয়ে ছিলেন বাংলাদেশের জয়ের ভিত। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ব্যাটিং পারফরম্যান্সে লিখেছিলেন রেকর্ড পার্টনারশিপের গল্প। 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও দারুণ ব্যাটিং করলেন লিটন। সেঞ্চুরির আভাস দিয়েও পারলেন না। কাছাকাছি গিয়ে থামতে হলো তাকে। তবে তারকা এ ওপেনার আদায় করে নিলেন দাপুটে এক হাফ-সেঞ্চুরি।

লিটনের ব্যাট থেকে রান এলেও দলের অন্য কোনো ব্যাটসম্যান সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। ফলে দলের সংগ্রহটাও ভালো হয়নি। রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবীর বোলিং দাপটে পুরো ৫০ ওভারও ব্যাটিং করতে পারেনি তামিম ইকবালের দল। যে কারণে ৪৬.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে টাইগারদের পুঁজি এসে দাঁড়িয়েছে ১৯২ রান।

লিটন ১১৩ বলে ৭ বাউন্ডারিতে খেলেন ৮৬ রানের চমৎকার এক ক্রিকেটীয় ইনিংস। লিটনের বাইরে যা একটু হাসির ঝিলিক দিয়েছে কেবল সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতের ব্যাট। তাদের ব্যাট থেকে খুব বড় ইনিংস আসেনি ঠিকই। তবে তাদের ছোট্ট কার্যকরী ইনিংসে সংগ্রহটা বড় হয়েছে। নিলে লজ্জায় ডুবতে হতো। 

সাকিবের ব্যাট থেকে ৩৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩০ রান। ৫৩ বলে ২৯* রানে অপরাজিত থেকে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সবার আগে তামিম ইকবাল সাজঘরে ফেরেন ১১ রান নিয়ে। বাকি ব্যাটসম্যানরা থেকে যান সিঙ্গেল ডিজিটের ঘরে আটকে। 

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের হয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন রশিদ খান। দুটি নেন মোহাম্মদ নবী। একটি করে উইকেট নেন আজমাতুল্লাহ ওমরজাই ও ফজলহক ফারুকী।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও শুরুতে ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। এ ম্যাচেও তার ব্যত্যয় ঘটেন।

এ ম্যাচেও বাংলাদেশের একাদশে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অপরিবর্তিত দল নিয়েই মাঠে নামে দেশের ছেলেরা। তবে আফগানিস্তানের একাদশে একটি বদল আসে। ফরিদ আহমেদের স্থলে দলে জায়গা পান গুলবাদিন নাইব। 

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), ইয়াসির আলী, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।

আফগানিস্তান একাদশ: রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), রিয়াজ হাসান, রহমত শাহ, হাশমতুল্লাহ শাহীদি (অধিনায়ক), নজিবুল্লাহ জাদরান, আজমাতুল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, গুলবাদিন নাইব ও ফজলহক ফারুকী।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ১৯২/১০, ৪৬.৫ ওভার (তামিম ১১, লিটন ৮৬, সাকিব ৩০, মাহমুদউল্লাহ ২৯*; ফারুকী ১/৩৩, ওমরজাই ১/২৯, রশিদ ৩/৩৭ ও নবী ২/২৯)।

আফগানিস্তান: ১৯৩/৩, ওভার ৪০.১ (গুরবাজ ১০৬*, রিয়াজ ৩৫, রহমত ৪৭; সাকিব ১/৪৭, মিরাজ ২/৩৭)।

ফল: আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ।

ম্যাচসেরা: রাহমানুল্লাহ গুরবাজ।

সিরিজসেরা: লিটন দাস।