নির্ঘুম রাত শেষে মুমিনুলদের নিউজিল্যান্ড জয়
নিউজিল্যান্ড সফরে এর আগে ৩২ ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই হেরেছে টাইগাররা। এবার ৩৩তম ম্যাচে কাটল জয় খরা। আর দশম টেস্টে ধরা দিল বহুল কাঙ্ক্ষিত জয় নামক সোনার হরিণ।
ঘরের মাঠে টানা ১৭ ম্যাচ অজেয় থাকার পর অবশেষে হার মানল নিউজিল্যান্ড। এ নিয়ে বিদেশের মাটিতে ছয়টি টেস্ট জিতল বাংলাদেশ। এসব পরিসংখ্যান ও মাইলফলককে ছাপিয়ে গেছে টানা পাঁচ দিন ক্রিকেট পরাশক্তি নিউজিল্যান্ডকে শাসন করে টাইগারদের জয়ের কৃতিত্বটা।
ব্যাটে-বলে দুরন্ত লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জিতল ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে দেশটিতে ছিনিয়ে নিল তারা প্রথম জয়।
সবকিছু যেন অবিশ্বাস্য লাগছে মুমিনুল হকের কাছে। ম্যাচ জয়ের পর টাইগার ক্যাপ্টেন বলেন, ‘আমরা ফল নিয়ে কিন্তু চিন্তা করিনি। আমি এখন বললে হয়তো অনেকে বলবে লোকটা পাগল হয়ে গিয়েছে। আমাদের ভেতরে ছিল, প্রস্তুতিটা ভালো নেই। প্রক্রিয়া অনুযায়ী খেলি। যেমন ব্যাটিংয়ের সময় লক্ষ্য ছিল লম্বা সময় ধরে করার। বোলিংয়ে একটা জায়গায় প্রসেসে করব। শেষ কাল যখন এবাদত হঠাৎ করেই নিল, তখন আমাদের মনে হইল, এ টেস্ট জেতার জন্য যাচ্ছি।’
জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা ছিলেন শান্ত, ধীরস্থির। মুমিনুল বলেন, ‘আজ অলআউট হওয়ার পর ক্লিয়ার হয়েছি। তবে বাড়তি উত্তেজনা কাজ করছিল না। টিভিতে দেখতে থাকলে দেখবেন, আমরা কাম অ্যান্ড কুলই থাকার চেষ্টা করেছি। বল ধরে ধরে খেলার চেষ্টা করেছি ব্যাটিং-বোলিং। ব্যাটিংয়ে শুরুতে প্রেসারে ছিলাম। মুশফিক ভাই ওই ডাবলস নেওয়ার পরই মনে হয়েছে জিতেছি।’
ম্যাচ জয়ের অনুভূতি প্রকাশের ভাষাই যেন খুঁজে পাচ্ছেন না মুমিনুল, ‘আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না কি অনুভব করছি। এটা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সত্যি কথা বলতে, আমি গতকাল রাতে ঘুমোতে পারিনি আজ কি হবে সেটা ভেবে। এই টেস্টটা জেতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের ঐতিহ্যের জন্য এই টেস্টটা জেতা দরকার ছিল।’
নিউজিল্যান্ড জয় করে দেশের ক্রিকেটে পরিবর্তনের বইয়ে যাওয়ার স্বস্তি মুমিনুলের কণ্ঠে, ‘আমি তো অনুভূতিটা ঠিক মতো প্রকাশ করতে পারছি না। আমার কাছে মনে হয় এটা আমাদের টেস্ট ক্রিকেট উন্নতির একটা লক্ষণ হতে পারে। পাকিস্তান সিরিজের পর সবার মধ্যেই টেস্ট ক্রিকেট উন্নতি করার একটা তাড়না ছিল। সব বিভাগেই সেটা দেখা গেছে। সবাই সবাইকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছে। কোচিং স্টাফও সবাই সাপোর্টিভ ছিল।’