টাইগারদের সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল

  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মুশফিকুর রহিম

মুশফিকুর রহিম

দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয়ের স্বপ্ন বুনেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নাহ! তেমনটা হলো না। সিরিজ জয়ের জন্য পরের ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হলো টাইগারদের। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা ১৯.৪ ওভারে গুটিয়ে গেল ৭৬ রানে। কিউইরা ম্যাচ জিতল ৫২ রানে। এ জয়ে সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখল সফরকারী নিউজিল্যান্ড।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ১২৯ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১২৮ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে নিউজিল্যান্ড।

বিজ্ঞাপন

ব্যাটিংয়ের শুরুটা যা একটু ভালো ছিল। ছিল ছন্দময়। সেই ব্যাটিং দৃঢ়তার ওপর ভর করে আসে ২৩ রান। এরপরই হঠাৎ ছন্দপতন। কোল ম্যাককনকির এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পা দিয়ে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস। সাজঘরের পথে হাঁটতে শুরু করার আগে এ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সঙ্গী করেন ১৫ রান। তবে মোহাম্মদ নাঈম ব্যাট হাতে লড়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ের আভাস দেন। কিন্তু পার্টনার খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

দলীয় স্কোরে এক রান যোগ হতেই ফেরেন মেহেদী হাসান। আরও একটি রান পেতেই হতাশ করেন সাকিব আল হাসান। ওয়ানডাউনে নামা মেহেদী এক রান তুললেও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব রানের খাতাই খুলতে পারেননি। মেহেদী ও সাকিবের বিদায়ের পর দাপুটে এক সঙ্গী পেয়ে যান নাঈম। ব্যাট হাতে মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু দলের নির্ভরযোগ্য এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মিরপুরের মন্থর উইকেটে টিকে গেলেও অন্য ওপেনার নাঈম ফেরেন ১৩ রান নিয়ে। দলীয় স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৩২।

বিজ্ঞাপন

পরে দলীয় স্কোরে ১১ রান যোগ হতেই পরপর দুই বলে নাই হয়ে যায় ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেনের উইকেট। পুঁজিটা ৪৩ হতেই দুজনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েছিলেন আজাজ প্যাটেল। তবে সুযোগটা তিনি কাজে লাগাতে পারেননি।

মুশফিক একাই ব্যাট হাতে লড়াই চালিয়ে গেলেও পরে তিনি ভুগেছেন থিতু হওয়া সঙ্গীর অভাবে। কেননা ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ দুই অঙ্কও স্পর্শ করতে পারেননি। মুশফিক ৩৭ বলে ২০ রানের হার না মানা ইনিংস খেললেও টাইগাররা ডুবে ৭৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জায়।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে একাই ৪ উইকেট শিকার করেন ম্যাচসেরা আজাজ প্যাটেল। তিনটি উইকেট নেন কোল ম্যাককনকি।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু দলীয় ১৬ রানেই ছন্দপতন ঘটে। নিজের প্রথম বলেই উইকেট পেয়ে টাইগারদের ব্রেকথ্রু এনে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। করোনা নেগেটিভ হয়ে দলে ফেরা ফিন অ্যালেন বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের আভাস দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত ১৫ রানে।

তার বিদায়ে দলের হাল ধরেন রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং। তবে টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে দুজনেই আউট হন সমান ২০ রান করে। দলীয় রান তখন ৪৬। পরে ১৬ রানের ব্যবধানে অতিথিরা হারায় আরও দুটি উইকেট। 

শেষ দিকে হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল জুটি গড়ে টিকে যায় ক্রিজে। সুবাদে কিউইদের পুঁজিটা বেড়ে যায়। নিকোলস ৩৬* ও ব্লান্ডেল ৩০* রানে অপরাজিত থেকে যান।

দুটি উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান। নিজের শততম টি-টোয়েন্টি এক উইকেট নিয়ে রাঙিয়েছেন টাইগার ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে শুরুতে বল হাতে মাঠে নামে টাইগাররা। 

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ছিল অতিথি নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস ভাগ্য সহায় হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ফের টস জেতে কিউইরা। টস জিতেই ব্যাটিং বেছে নিয়ে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়ে দেন সফরকারী দলের ক্যাপ্টেন টম লাথাম।

বাংলাদেশের একাদশে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আগের দুই ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও একই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তৃতীয় ম্যাচেও টাইগারদের হয়ে উইকেটকিপিং করেছেন নুরুল হাসান সোহান। যদিও তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচে উইকেটের পিছনে থাকার কথা ছিল মুশফিকুর রহিমের। 

তবে নিউজিল্যান্ডের একাদশে তিনটি পরিবর্তন আসে। দলে ফিরেছেন ফিন অ্যালেন, স্কট কুগেলেইজন ও জ্যাকব ডাফি। দল থেকে বাদ পড়েছেন ডগ ব্রেসওয়েল, বেন সিয়ার্স ও হামিশ বেনেট।

তৃতীয় ম্যাচে হারলেও প্রথম দুই ম্যাচ জেতায় পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে রইল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ।

নিউজিল্যান্ড একাদশ: টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), রাচিন রবীন্দ্র, উইল ইয়াং, টম ব্লান্ডেল, হেনরি নিকোলস, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, কোল ম্যাকনকি, এজাজ প্যাটেল, ফিন অ্যালেন, স্কট কুগেলেইজন ও জ্যাকব ডাফি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউজিল্যান্ড: ১২৮/৫, ২০ ওভার (অ্যালেন ১৫, রবীন্দ্র ২০, ইয়াং ২০, নিকোলস ৩৬*, ব্লান্ডেল ৩০*; মেহেদী ১/২৭, মুস্তাফিজ ১/২৯, সাইফউদ্দিন ২/২৮ ও মাহমুদউল্লাহ ১/১০)।

বাংলাদেশ: ৭৬/১০, ১৯.৪ ওভার (নাঈম ১৩, লিটন ১৫, মুশফিক ২০* ; এজাজ ৪/১৬, ম্যাককনকি ৩/১৫)।

ফল: নিউজিল্যান্ড ৫২ রানে জয়ী।

সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে।

ম্যাচসেরা: আজাজ প্যাটেল।