প্রথম কাজ হবে পার্টিকে সংগঠিত করা: বাবলু

  • সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ার দুই দিনের মাথায় বনানী কার্যালয়ে এলেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তার এই আগমনের খবরে বেশ কিছু নেতাকর্মী আগে থেকেই ফুল নিয়ে এসে হাজির হোন সেখানে।

অন্যদিকে সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু সাড়ে ১১টার দিকে এসে হাজির হলে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পার্টি অফিস প্রাঙ্গণ। কার্যালয়ে প্রবেশ করেই সোজা চলে যান চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের কক্ষে। এরপর কওমী মাদ্রাসার সংগঠন বেফাকের নেতাদের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত সভায় যোগ দেন। সভা শেষে তৃতীয় তলায় কনফারেন্স কক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ফুল দিয়ে তাকে বরণ করেন।

বিজ্ঞাপন

সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব শেষ করে প্রেস ব্রিফিং করেন বাবলু। ব্রিফিং পরবর্তী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তার কাছে প্রশ্ন ছিল কেনো এই মহাসচিব পদে রদবদল, আর এটি অগণতান্ত্রিক কিনা। তবে তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা মনে করিয়ে দিয়েছেন। যে ধারায় চেয়ারম্যানকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। চেয়ারম্যান যখন যাকে খুশি যেকোনো পদে বসাতে কিংবা অপসারণ করতে পারেন। কাউন্সিল তাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে। এ বিষয়ে কারণ জানতে চাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিকেল পৌনে তিনটায় পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে যান নতুন মহাসচিব।

মহাসচিব পরিবর্তনে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। তবে বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি নিয়ে খোদ নেতাকর্মীরাই কানাকানি করেছে। কেনো এতো নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রয়োজন হলো। এটির কোনো প্রয়োজনেই ছিল না।

নেতারা আর আজকে রাখঢাক করছেন না। প্রকাশ্যেই বলেছেন, বিদায়ী মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা পার্টির জন্য কিছুই করেননি। না কেন্দ্রে কোনো ভূমিকা পালন করেছেন, না জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের এক সদস্য নাম প্রকাশ করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, নরমাল প্র্যাকটিস কি হয়, মহাসচিব বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবেন, সেখানে হাজির হবেন চেয়ারম্যানসহ সিনিয়র নেতারা। আর বিদায়ী মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার সময়ে চেয়ারম্যান প্রোগ্রাম দিতেন সেখানে হাজির হতেন মহাসচিব। করোনাকালে এরশাদের মৃত্যু বার্ষিকীর কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নিয়েও তার ছিল ঘোর আপত্তি। আর নেতারা কেউই রাঙ্গার উপর খুশি ছিলেন না। তার মধ্যে একটি অহংকারী ভাব চলে এসেছিল। যা কর্মীদেরকে বিমুখ করে তুলেছে। এসব কারণে হয়তো তাকে ৭ মাসের মথায় চলে যেতে হলো।

প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন বলেন, নতুন মহাসচিব সাংগঠনিক লোক। এই পরিবর্তন পার্টির জন্য ইতিবাচক হবে। দেখবেন পার্টিতে গতি আসবে। বিদায়ী মহাসচিব কোনো ভূমিকাই পালন করতেন না। হ্যাঁ এ কথা ঠিক ভালো বক্তৃতা দিতেন। কিন্তু তার জন্য তো দলকে সংগঠিত করা প্রয়োজন। দল সংগঠিত না হলে পার্টির অস্তিত্বেই টান পড়ে।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমরা একসঙ্গে জিএম কাদেরের নেতৃত্বে, রওশনের নেতৃত্বে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবো। জেলা উপজেলায় কমিটিগুলোকে আপডেট করা হবে। আমরা ইতিবাচক রাজনীতি করছি, এই ধারা অব্যাহত থাকবে। প্রধান কাজ হবে, সংগঠনকে শক্তিশালী করা, সংগঠনকে বিস্তৃত করা। ৩শ আসনে প্রার্থী দেবো। ভোট বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হবো।