'করোনা টেস্ট নিয়ে মারাত্মক কেলেঙ্কারি হয়েছে'

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

অপরাধীরা গ্রেফতার হয়ে আরামে থাকে। আবার মাস পার হলেই জামিনে মুক্তি পেয়ে কোট-টাই পরে ঘুরে বেড়ায়। তাই অপরাধের প্রবণতা কমছেনা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে জাপার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় ছাত্র সমাজ আয়োজিত এরশাদের স্মরণ সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

জিএম কাদের আরো বলেন, নভেম্বর মাসে চীনে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিলো। তখন বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ হলে অবস্থা ভয়াবহ রূপ নেবে। আমরা সংসদেও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের বলেছিলাম। কিন্তু ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হবার পরে দেখা গেলো কোনো প্রস্তুতি নেই। কোনো সমন্বয় নেই। এখন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা নিজেরাই স্বীকার করছে তাদের সমন্বয়হীনতার কথা। পর্যাপ্ত করোনা টেস্টের সুবিধা নেই এবং করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই এমন হাসপাতালকেও করোনা টেস্টের অনুমতি দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

'দেশে করোনা টেস্ট নিয়ে মারাত্মক কেলেঙ্কারি হয়েছে। তাই এখন আর বিদেশে আমাদের দেশের করোনা টেস্টের রিপোর্ট গ্রহণ করা হয়না। করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্টের জন্য বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। সুস্থ হয়েও দেশে আটকে পরা প্রবাসীরা এখন আর বিদেশে যেতে পারছেনা' বলে যোগ করেন তিনি।

একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের অনুরোধ জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, যাদের পরামর্শে দেশের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হবে। আবার যারা ভুয়া টেস্ট করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, যারা অচল মেশিন সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে তাদের উপযুক্ত বিচারের আওতায় আনতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে অপরাধ ও দুর্নীতি কমবেনা।

ঈদ প্রসঙ্গ টেনে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, কাঁচা চামড়া রফতানির অনুমতি না থাকায় ঈদের চামড়া ব্যবসায়ীরা যৌক্তিক মূল্যে চামড়া ক্রয় করেনা। কাঁচা চামড়া বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায়না, তাই রফতানির অনুমতি না থাকায় স্বল্প মূল্যে কাঁচা চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয় সবাই। কোরবানির চামড়ায় এতিমদের হক রয়েছে, এতে এতিমরা প্রকৃত মূল্য না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতিম ও দুঃস্থরা প্রতিবাদ করতে পারেনা, তাদের কষ্টের কথাগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পৌঁছেনা। দেশের ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া শুধু পরিবহন ও শ্রমিক ব্যয়ে নাম মূল্যে কিনতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা।

তিনি বলেন, এরশাদ ছাত্রদের লাঠিয়াল হিসেবে পরিণত করতে চাননি। তাই তিনি নতুন বাংলা ছাত্র সমাজ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু অন্যরা ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে রাজনীতিকে কলুষিত করেছে। জাতীয় ছাত্র সমাজের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে পড়াশোনার পাশাপাশি দেশের ইতিবাচক রাজনীতিতে অবদান রাখতে হবে।

এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি ছাত্রদের ফ্রি ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, করোনাকালে ছাত্ররা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ভার্চুয়াল ক্লাস করছে। যতদিন করোনার প্রকোপ থাকবে, ততদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করেই ছাত্রদের পড়াশোনা করতে হবে।

জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ইব্রাহিম খাঁন জুয়েলের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিল ও স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিরু, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জামাল উদ্দিন প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন।