সরকার-ইসি চাইলেও অনেক সময় সুষ্ঠু ভোট সম্ভব হয় না: জিএম কাদের

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মনোনয়ন ফরম বিতরণ করছে জাপা,  ছবি: বার্তা২৪.কম

মনোনয়ন ফরম বিতরণ করছে জাপা, ছবি: বার্তা২৪.কম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, সরকার, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পুলিশ প্রশাসন চাইলেও সব সময় অবাধ ও সু্ষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হয় না। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এটাই বাস্তবতা। এমন সমস্যা প্রার্থীদের ট্যাকেল দিতে হয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বনানীতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডিএসসিসির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

জিএম কাদের বলেন, আমি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জানতে পেরেছি, এবারের নির্বাচন অবাধ ও সু্ষ্ঠু হবে। আমাদের প্রার্থীদের সম্ভবনা বেশি দেখছি। প্রার্থী ভালো হোক মন্দ হোক, তাদের পক্ষে কাজ করতে হবে। যারা তা করবেন না, ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাল-পরশুর মধ্যে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করব। কেউ মনোনয়ন না পেয়ে ভোট করলে, তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, আমি ভিন্নভাবে বলি, যে কারণে কেউ খুশি হন, কেউ বেজার হন। আমার কথা হচ্ছে, যদি ভোট সেন্টার পাহারা দিতে পারেন, নিজের সম্মান রক্ষা পারেন, তাহলে মনোনয়ন নেন। সেন্টার পাহারা দিতে না পারলে মনোনয়ন কেনার দরকার নেই। ভোট চুরি হলে, দাঁড়িয়ে থেকে চুরি ঠেকাতে বলেন, তাহলে চেয়ারম্যান কি করবেন, আমি মহাসচিব কি করব? বাপের বেটা হলে, যদি সাহস থাকে, তাহলে ভোটে আসেন। না হলে মাঠে নামার দরকার নেই।

তিনি আরো বলেন, আমরা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে মেয়র প্রার্থী ঠিক করব। তারা যদি আলোচনা না করেন, তাহলে আমরা আমাদের মতো ভোট করব।

সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সরকারের ভাবমূর্তি উদ্ধার হবে। নির্বাচন কমিশনের ইমেজ বাড়বে, অতীতের গ্লানি মুছে যাবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আরেকটি বিষয় হবে, এতে আপনারা বুঝতে পারবেন, কোথায় আপনার কোন প্রার্থী দুর্বল রয়েছে। সেভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবেন, যোগ করেন রাঙ্গা।

প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, একটি কথা বলব, গত নির্বাচনের আগে সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম, ওরা প্রস্তাব দিল, পাঁচটি কাউন্সিলর দেবে। আমি সেই প্রস্তাব নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে তৎকালীন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বাধা দেন। বাবলু ভাই তখন বলেছিলেন, আমরা এককভাবে ভোট করলে ১০-১৫টি ওয়ার্ডে জিতে যাব। আমি নির্বাচনে যাইনি। আমাদের একজনও পাস করতে পারল না।

তিনি বলেন, এখন প্রশ্ন উঠছে সুষ্ঠু নির্বাচনের। এ জন্য মাঠে থাকতে হবে, জনগণ সঙ্গে থাকলে শেষ পর্যন্ত কোনো ষড়যন্ত্র বাধা হতে পারবে না। এবার দক্ষিণে সাবেক ভিপি আলমগীর সিকদার লোটনকে দেন, তাহলে ভালো কিছু আশা করা যায়। গতবার মিলনকে দিয়েছিলাম, বারবার তাকে দিয়ে পরীক্ষা করার কোনো মানে হয় না।

কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ মাসুক রহমান মাসুম বলেন, যদি মহাজোট হয়, তাহলে পরিষ্কারভাবে জানতে চাই। আর যদি জোট না হয়, তাহলে সুষ্ঠু ভোটের গ্যারান্টি দিতে হবে। এমপিরা জোট করে নির্বাচন করবেন, আর কাউন্সিলররা সেই সুযোগ পাবেন না, এটা হতে পারে না।

প্রেসিডিয়াম সদস্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মীর আব্দুস সবুর আসুদ,
হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল আলম রুবেল প্রমুখ।

২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জমাদান চলবে। জাপা মেয়র ও কাউন্সিলর পদে একক প্রার্থী দিতে চায়। একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী পাওয়া গেলে সমঝোতার ভিত্তিতে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।