আমরা বঙ্গবন্ধুর কোনো সমালোচনা করবো না: জিএম কাদের

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় কৃষক পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন, ছবি: বার্তা২৪.কম

জাতীয় কৃষক পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন, ছবি: বার্তা২৪.কম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের (এমপি) বলেছেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে মেনে নিয়েছি। পিতার ভুলত্রুটি থাকতে পারে, তার সমালোচনা করতে পারি না। আমরা বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে কোনো সমালোচনা করবো না।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে কচি-কাঁচার মেলা মিলনায়তনে জাতীয় কৃষক পার্টির সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

জিএম কাদের বলেন, আমাদের সকলের প্রেরণা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। ওনার দলের লোকজনের কোনো ত্রুটি থাকলে আমরা সমালোচনা করতে পারি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করতে পারি না।

তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে সহযোগিতা করা হয় না, প্রায় সময়ে অঙ্গ-সহযোগি সংগঠন থেকে অভিযোগ ওঠে। জেলার নেতারা মনে করে, এরা সেন্ট্রাল থেকে নিয়ন্ত্রিত হবে। সংগঠিত হলে আমার পক্ষে থাকবে কি থাকবে না। এ কারণে তারা আগ্রহ দেখান না। মনে রাখতে হবে হাত রূগ্ন হলে আমি ভালো ভাবে কাজ করতে পারবো না। আমরা নির্দেশনা দেব, জেলাতে কোনো সমস্যা হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, কৃষক পার্টি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে পারে। কৃষকরা যেমন ধান বুনে, পরে গাছ তৈরি হয়। তেমনি কৃষকরা যদি কর্মী তৈরি করতে পারে, তাহলে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী হবে।

তিনি বলেন, সারা পৃথিবী যদি আমাদের বর্জন করে। কিংবা আমরা যদি পৃথিবীকে বর্জন করি, তাহলে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারবো। কার কারণে, কৃষকদের কারণে। তাদের কারণে আমরা স্বাবলম্বী।

কিন্তু সেই কৃষকরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। অনেক সময় ভর্তুকি দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু প্রকৃত কৃষকরা এই সুবিধা পান না। খুব বেশি হলে দুই থেকে চার ভাগ কৃষক এই সুবিধা পায়। মধ্যস্বত্বভোগীরা এই সুবিধা লুটেপুটে খায়।

জি এম কাদের বলেন, কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায় না। এই যে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কৃষকরা কি এর থেকে লাভবান হয়েছে, হয়নি। লাভবান হলে সর্বোচ্চ ৫/১০ জন কৃষক হয়েছে। যেই মুনাফাটা কৃষকের পাওয়ার কথা তারা পাচ্ছে না। কৃষকরা যখন বিক্রি করে তখন দাম কম থাকে, ঋণের টাকা শোধ করতে পারে না। ঋণের দায়ে জমি হারিয়ে ভূমিহীন হচ্ছে। নিজের জমিতে বর্গাচাষী হচ্ছে। আপনাদের সংঘবদ্ধ হতে হবে। তবেই দাবি দাওয়া আদায় করা সম্ভব।

আমরা কি করতে পারি, সেটি প্রচার করতে হবে। আমরা কৃষকের পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করবো। ন্যায্য দামে উপকরণ নিশ্চিত করবো। ভয়ের কিছু নেই, আমি ভয় পাই না। আমার শক্তির উৎস আপনারা। যাকে নেতা নির্বাচন করবেন তাকে মেনে চলতে হবে। নেতা পছন্দ না হলে তাকে পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু নেতা থাকবে একজন বলে মন্তব্য করেন জিএম কাদের।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, পেঁয়াজ ছাড়া রান্না হলে। চাল ছাড়া ভাত হবে। তাহলে আওয়ামী লীগ ছাড়া দেশ চলবে।

রাঙ্গা বলেন, বঙ্গবন্ধু বাকশাল করেছিলেন। উনি মনে করেছিলের কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে, সকল দলের লোকজনকে নিয়ে দেশটাকে গড়তে চেয়েছিলেন। উদ্দেশ্য কিন্তু খারাপ ছিল না। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সেখান থেকে কিন্তু সরে যায়। বিএনপি ক্ষমতায় এসে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিলো।

বিএনপি সাড়ে ১০ লাখ টাকা দিয়ে তদন্ত টিম এনেছিলেন এরশাদের সম্পদের খোঁজ বের করার জন্য। কোনা সম্পদ খুঁজে পায়নি। এই টাকা জলে চলে গেছে। এরশাদ কোনো দুর্নীতি করেননি। এরশাদ কাউকে খুন করেননি বলে ওনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

এসময় তিনি বলেন, দুই দলের দিন শেষ জিএম কাদেরের বাংলাদেশ।

জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে ও দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদারের সঞ্চালনায় সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা (এমপি), এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাডভোকেট হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু ও জেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।