মারা যাওয়ার তিন বছর পর সিলেটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষের পুনর্দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কানাইঘাটে তার নিজের প্রতিষ্ঠিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গণে নির্ধারিত স্থানে দেহাবশেষের পুনর্দাফন করা হয়।
এসময় তাকে গার্ড অব অনার দেন গোয়াইনঘাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.সাইদুল ইসলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীন।
পুনর্দাফনের সময় হারিছ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা, দলীয় নেতাকর্মী ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মরদেহবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে হরিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা সিলেট সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছেন। পরে সেখান থেকে দুপুর আড়াইটায় সিলেট কেন্দ্রীয় শাহী ঈদগাহে ময়দানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহজালাল (র.) দরগাহ মসজিদের খতিব ও ইমাম হাফিজ মাওলানা আবু হুজায়ফা হোসাইন। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন শাহী ইদগাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল মুমিন।
দোয়ার পূর্বে সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী ও হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী।
শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত-গত ২০ ডিসেম্বর হারিছ চৌধুরীর মরদেহ পুনরায় দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী ও আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরীনের তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তার পরিচয় গোপন করে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান নামে সাভারের বিরুলিয়ায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়।
পরবর্তীতে মেয়ে সামিরার এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন করা হয়। মরদেহ তোলার পর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডি নমুনা সংগ্রহ করে এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। এরপর ডিএনএ টেস্টে মরদেহটি হারিছ চৌধুরীর নিশ্চিত হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে সিলেটে দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।