বেনজীর ইস্যুতে সাংবাদিকদের সৎ সাহস নিয়ে প্রশ্ন কাদেরের
পদে থাকা অবস্থায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ না হওয়ায় সাংবাদিকদের সৎ সাহস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (২ জুন) দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বেনজীর র্যাবের ডিজি, আইজি ও আইজিপি থাকা অবস্থায়ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাহলে সরকার এখন কেন সে দায় নিবে না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের উলটো সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, আপনি কোন টিভিতে কাজ করেন? বেনজীর কখনো দুর্নীতি করেছে আপনি বলতে পেরেছেন? মিডিয়ায় কে বলেছে? সবশেষে বলেছে কালেরকণ্ঠ। আপনারা কেউ বলেননি। আপনারা এটা নিয়ে, মিডিয়ায় যদি বলতে পারতেন যে এই এই দুর্নীতি করছেন, অমুক। সে সাহসটা আপনারাও তো দেখাতে পারেননি। এখন সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন। আপনি কি করে বলেন সরকার জেনেও এটা গোপন করেছে? হাউ ইউ কনক্লোড দিস। আপনি পারেন না এটা। আমি একটা কথায় বলেছি, সরকার এখানে কারো দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হবার পর ইম্পিউনিটি দিয়েছে কি না, সেটা হলো বড় কথা।
সরকার বেনজীরকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে তুলে দিয়েছে মির্জা ফখরুলের এমন অভিযগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি কি দেখেছেন কে তুলে দিয়েছে? ফখরুলের অভিযোগ, সে তো সব দিকে ব্যর্থতার দগদগে খত। সে ব্যর্থ নেতা। সে ১৫ বছর ধরে আন্দোলন করলো, নির্বাচনেও ব্যর্থ, আন্দোলনেও ব্যর্থ। নিজের দলের লোক সংসদে পাঠায় কিন্তু নিজে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। সে কি বললো, না বললো বাস্তবতা বিবর্জিত। সরকার তুলে দিয়েছে, আমি মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চায়, সরকারের কারা তাকে তুলে দিয়েছে। কোন অথরিটি তাকে তুলে দিয়েছেন বলুন। অন্ধকারে ঢিল ছুড়লে হবে না।
তদন্ত চলা অবস্থায় বেনজীর যে দেশের বাহিরে চলে গেলেন এটা কি অস্বাভাবিক না এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, না, এখন তিনি না থাকলে কি বিচার হবে না। এখন তারেক রহমান বাইরে আছে বলে কি ট্যাক্সিফিকেশন মামলা হয়নি, রায় হয়নি? এক সময় না এক সময় তাকে আসতে হবে। বেনজীর যদি মামলায় দুর্নীতিবাজ সাব্যস্ত হয়, দেশে তাকে আসতেই হবে। এখানে সরকার কোন আপস করবে না।
দুদকের প্রাথমিক তদন্তে বিপুল অর্থসম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তা উঠে আসছে, সরকার কি তাকে দোষী মনে করছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার তো দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেনি। এখানে সরকারের অবশ্যই সমর্থন আছে।
বেনজীর পদে থাকা অবস্থায় বিপুল দুর্নীতির সাথে যে জড়িত তা সরকারের না জানাটা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা কী না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ব্যর্থতা থাকলে সে ব্যর্থতারও বিচার হবে।
অন্য আরেক প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই বিষয়টা দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত, গ্রেফতার, মামলা সব কছু একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। যেখানে দুর্নীতি দমন কমিশন একশনে আছে সরকার কেন আগ বাড়িয়ে কোন ব্যবস্থা নিবে? আমাদের দেশে দুর্নীতির যত মামলা হয়েছে, ওয়ান ইলেভেন থেকে দেখুন, তদন্ত করে মামলা যখন হয় তখন একটা স্টেপ আসে জেলে পাঠানোর। তারপর জেলে পাঠালে মামলা চলতে থাকে। মামলার রায়ে সে যদি দুর্নীতিবাজ সাব্যস্ত হয় তাহলে অবশ্যই তাকে আমি দুর্নীতিবাজ বলবো।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে ৭৫ পরবর্তীকালে কোন শাসক, সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনা সরকার সে সৎ সাহস দেখিয়েছে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে ফখরুল সাহেবরা বড় বড় কথা বলেন, বিএনপি আমলে কি একটা দুর্নীতির মামলায় নিজেদের দলের লোক ধরেছেন? কেউ শাস্তি পেয়েছেন সেটা হচ্ছে বড় কথা। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারেন, সে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের মনোভাবটা কি দেখতে হবে। সরকার বিচার করতে চায় কি না সেটা হলো বড় প্রশ্ন।