অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, আবার যেন কারও বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন না করতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে গরিব-ছিন্নমূল ও শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, যে দল গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় পরিচালিত হবে, সংসদকে স্বাধীনভাবে ব্যবহার করবে, বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করবে না-ক্ষমতায় আসুক যদি চান, তাহলে দ্রুত দেশে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। রোড ম্যাপ দিন, নির্বাচনের তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা করুন। আবার যেন কারও বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন না করতে হয়, সেদিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ আপনি সবার কাছে একজন একজন সম্মানিত, বিশ্বস্ত ব্যক্তি। আমরা আপনাকে নিয়ে গর্ব করি।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে অতীতের ন্যায় আবারও রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করার প্রয়াস চলছে। অনেকদিন হয়ে গেলো, চার, পাঁচ মাস হয়ে গেছে কিন্তু, মানুষ আশার আলো কি দেখতে পেয়েছে? অতীতের ব্যর্থতার কারণে, বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১ লাখ ৬০ হাজার মামলা দায়ের হয়েছে। বিএনপির ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলাকারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নেই। শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা এখনো সচিবালয়ে আগুন লাগায়। সামনে রমজান আসছে। কিন্তু, আবারও পেঁয়াজ, আলু, মুড়ি, চাউলের সিন্ডিকেট তৈড়ির ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে।
ফারুক আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের সরকারকে (অন্তর্বর্তী সরকার) অতীতের ইতিহাস তুলে ধরে কর্ণগোচর করতে চাই, দয়া করে মানুষকে শান্তিতে রাখার ব্যবস্থা করুন। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে, এতে জনগণের মনে কোনো শান্তি নেই। কারণ, আপনাকে (ড. ইউনূস) বসানো হয়েছে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন এবং জনগণের ভোটাধিকারের মধ্য দিয়ে, এমন একটি সরকারের প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে, যে প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে অতীতের ষড়যন্ত্র থেকে রেহাই দিয়ে, সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি বাংলাদেশের গৌরব অর্জনকারী মানুষ, আপনার গৌরবে বাংলাদেশের মানুষ গৌরবান্বিত। আপনাকেও বিগত সরকার অনেক কষ্ট দিয়েছে। আপনার সুনাম নষ্ট করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু, এই কয়মাসের মধ্যে মানুষ আবার বলা শুরু করেছে, আপনার সহযোগীরা কিছু কিছু কথা বলছে যার কারণে আপনার সুনাম নষ্ট হওয়ার পথে। আমি মনে করবো, সবাই যেন সতর্ক দৃষ্টিতে কথা বলেন। এমন কথা বলবেন না, যে কথার কারণে আপনাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী প্রেতাত্মারা যেভাবে সচিবালয়ে আগুন দিয়ে বাংলাদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ নষ্ট করেছে, যেখানে রক্ষিত ছিল শেখ হাসিনার নানান দুর্নীতির ফাইল। সেগুলো ছারখার হয়ে গেছে। আমরা আশা করবো, সরকার দ্রুত এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে নাম প্রকাশ করবে এবং বিচারের আওতায় আনবে। বিভিন্ন জায়গায় এখনো শেখ হাসিনার লোকরা আছে এদেরকে চিহ্নিত করুন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের সভাপতি মনজুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা প্রমুখ।