প্রতিমন্ত্রীকে টপকে নৌকার টিকিট পাওয়া কে এই বিপ্লব

  • কল্লোল রায়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অ্যাডভোকেট বিপ্লব হাসান পলাশ

অ্যাডভোকেট বিপ্লব হাসান পলাশ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ৪টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের ৪ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলটি।

রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৪ টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ২৯৮টি সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

কুড়িগ্রাম ৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে এবার লড়বেন অ্যাডভোকেট বিপ্লব হাসান পলাশ। স্থানীয় রাজনীততে সক্রিয় না থাকায় ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে কে এই বিপ্লব।

১৯৮৮ সালে রৌমারী উপজেলার খঞ্জনমারা গ্রামে নুরুল আমীন ও মমতাজ বেগম দম্পতির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বিপ্লব হাসান পলাশ। তার বাবা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন নিজ এলাকাতেই। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন আইনের ছাত্র হিসেবে। সেখান থেকে ২০০৮ সালে এল.এল.বি এবং ২০০৯ সালে এল.এল.এম পাস করেন। পেশাগত জীবনে বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।

স্থানীয় রাজনীতিতে সাংগঠনিক কোন পদ না থাকলেও বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছিলেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির (সোহাগ-নাজমুল কমিটি) উপআইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামী আইন ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক এবং পরবর্তীতে সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্বে ছিলেন।

স্থানীয় রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত না হলেও তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও করোনাকালীন এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়ানোর সুনাম আছে তার।

বার্তা২৪.কম-এর প্রতিনিধির কথা হয় বিপ্লব হাসান পলাশের সাথে। তিনি বলেন,  প্রধানমন্ত্রী যাকে যোগ্য মনে করেছেন তাকেই মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভরসার গুরুত্ব দেবো।

এটা একটা চমক কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি এরকম নয়। পার্লামেন্টে আমার থেকেও জুনিয়র সংসদ সদস্য ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন এই আসনে নতুন কেউ আসুক, তাই দিয়েছেন।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে জানতে চাইলে বিপ্লব বলেন, স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, নদী ভাঙন রোধ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির বিষয়গুলো আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে প্রাধান্য পাবে।

গত ২২ নভেম্বর কুড়িগ্রাম-৪ আসনের ( চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা) সংসদ সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনকে দলীয় মনোনয়ন না দিতে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছিলেন ওই আসনের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। ওই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৬ জন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর লিখিত আবেদনে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন। অনুরোধকারীদের তালিকায় নাম আছে বিপ্লব হাসান পলাশের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনোনয়ন পাওয়া বিপ্লব জানান, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আমাদের এলাকার সকল আওয়ামী লীগ নেতারা একজোট হয়েছিলো। তার বিরুদ্ধে সবারই অসন্তোষ ছিলো। যেখানে সকল নেতাকর্মী (জাকির হোসেন বাদে) এক হয়েছেন সেখানে আমি তো তাদের বাইরে যেতে পারি না।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের বাকি ৩টি আসনের মধ্যে নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম ১ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষে লড়বেন সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আসলাম হোসেন সওদাগর।

কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ি উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম ২ আসনে লড়বেন জাফর আলী। উলিপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম ৩ আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে লড়বেন সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে (গবা পান্ডে)।