‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আ. লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

‘প্রতিটা রাজনৈতিক দলই বলছে, এ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাহলে কেন তারা জোর করে বসে আছেন, যে সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। কারণ তারা (আওয়ামী লীগ) জানেন নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয় তাহলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না’ বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট কর্তৃক আয়োজিত "গণতন্ত্র রক্ষা ও একদফা দাবি আদায়ে মরহুম সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির ভূমিকা " শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। 

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘তারা ক্ষমতা না আসতে পারলে তাদের যে প্রবলেম, তারা বহু লুটপাট করেছে, দেশকে শেষ করে দিয়েছে একেবারে। সেখানে তো তাদের জবাবদিহিতা করতে হবে। এখন এটা খুব পরিষ্কার, আওয়ামী লীগের কোথাও কোনও অস্তিত্ব নাই। তাদের পায়ের তলের মাটি নেই। এখনও সময় আছে আপনারা দয়া করে পদত্যাগ করেন।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির প্রতিটি সমাবেশে মানুষের ঢল নামছে। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতন মানুষ আসছে। আপনারা সবাই নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন আমরা সচেতনভাবে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের সংঘাত পূর্ণ কর্মসূচি দেইনি। আমরা আশা করব সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। এর মধ্যেই তারা পদত্যাগ করবেন এবং নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন। দেশকে একটা সংকটের হাত থেকে উদ্ধার করবেন। এটা যে শুধু বিএনপি চায় এমনটা না। এটা আন্তর্জাতিক বিশ্বও চায়। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারা সবাই চায়।’

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সময় আছে এখনো সেইফলি এক্সিট নিতে পারেন। চলে যান পদত্যাগ করে। এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। নতুন একটা নির্বাচন কমিশন করে, নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। আর এইটাই হচ্ছে জনগণের দাবি।’

৫২ বছর পরেও দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঠিক করার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোট দিতে পারব কি পারব না তার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। তবে দুর্ভাগ্য আমাদের, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের থেকে এমন সব কথাবার্তা আসে। শুনলে আপনি বুঝতে পারবেন যে, তারা বোঝায় দেশটা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। এবং এটা একজনেরই সম্পত্তি। তাদের বক্তব্যে আপনি বুঝবেন, আরে এটাতো আমার সম্পত্তি  তুমি এখানে কোথা থেকে আসলে।

ওবায়দুল কাদেরের প্রতি প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা যে নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলছেন, এটা কি জনগণের কথা? আমি বলব এটার জনগণের কথা নয়। কারণ জনগণের ভাষাও আপনারা কোনোদিন বুঝতে চাননি। আওয়ামী লীগে একটা দল যারা সবসময় জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা সংবিধানের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি প্রতারণা করেছেন।’

কেয়ারটেকারের অধীনের দেশে যে চারটা নির্বাচন হয়েছে সেই ভোট সুষ্ঠ হয়েছে বলে দেশের মানুষ মনে করে এমন মন্তব্য তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক যে সংস্কৃতি, তাতে দুর্ভাগ্যজনক একটা বিষয়ের প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যেখানে একটা রাজনৈতিক দল অপর আরেক রাজনৈতিক দলকে বিশ্বাস করে না, ট্রাস্ট নেই। যে কারণে স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের এখনো ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। কই এই লড়াই তো ভারতে হয় না। এমনকি পাকিস্তানও নির্বাচনের বিষয়ে একটা সিস্টেম লক করে ফেলেছে, যে তাদের ওখানে নির্বাচনটা সুষ্ঠু হবে। কারণ তাদের ওখানে কেয়ারটেকারের মত সিস্টেম আছে। নেপালও তাদের নির্বাচন ব্যবস্থা সুষ্ঠু করেছে।

আমার প্রশ্ন দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারলে আমরা কেন পারছি না? কারণ আমরা পারছি না শুধু আওয়ামী লীগের কারণে।

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান সমন্বয়কারী এবং ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টির সভাপতি সুকৃতি কুমার মন্ডল, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান  অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।