২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন দেয়া হয়ত সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার রাতে মানবজমিন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর উপস্থাপনায় চ্যানেল আই'র আজকের সংবাদপত্র অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। তিনি নির্বাচন নিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সময়ের আভাস দেয়ার পর এই কোনো উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় নিয়ে সরাসরি কথা বললেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে ড. আসিফ নজরুল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে বলে জনান। এছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোনো সাংবাদিকের বিচার হবে এমন কথা আগে বলেননি বলে উল্লেখ করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে তিনি বন্দি বিনিময় চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, এই চুক্তি ভারত মানলে তাদের শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেয়া উচিত। এই চুক্তি সঠিকভাবে মানলে তারা শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য।
ঢালাও মামলা দায়েরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, বিগত সরকারের সহযোগিতায় হতো গায়েবি মামলা। এগুলো পুলিশ করত। মামলাগুলো তৎকালীন বিরোধীদলের লোকদের বিরুদ্ধে হতো। এখন হচ্ছে ঢালাও মামলা। যারা পূর্বে নির্যাতনের শিকার হয়েছিল তারাই এই মামলা করছে। এই মামলাগুলোতে যাতে নিরপরাধ লোক শাস্তি না পান সে বিষয়ে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হবে এটা বলেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দায়ী না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার হবে না। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আগ বাড়িয়ে কিছু করবে না। তবে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি বড় হয়ে উঠেছে। জনপ্রত্যাশা তৈরি হলে নিষিদ্ধ করা হবে। তারা অতীতে কি কাজ করেছে তা সব গণমাধ্যমে এসেছে। দেশবাসী দেখেছে।
নির্বাচন কমিশনের জন্য কিছু দিনের মধ্যে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে বলেন আসিফ নজরুল জানান। দ্রবমূল্যের ঊর্ধগতির জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চান তিনি। বলেন, তরকারির এত দাম যে বিক্রি কমে গেছে। বন্যার কারণে ডিমের সাপ্লাই কমে গেছে। গত সরকারের আমলে সব নিয়ন্ত্রণ হতো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, তবে এটুকু বলতে পারি সামনে পরিস্থিতি উন্নতি হবে। অনেকক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় একজন বিচারক বলেছিলেন তিনি শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ। আরো অনেকে অনেক কিছু করেছেন।
দেশে এত গুম-খুন হলো, ভুয়া নির্বাচন হলো বিচারকরা কিছুই বললেন না। অনেক বিচারক বিচারবিভাগকে ধ্বংস করেছেন। আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতির উপর আক্রমণ করেছেন। যারা এসব করেছেন তাদের আওয়ামী লীগ প্রমোশন দিয়েছে। এমন অবস্থা ছিল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলা যেত, কিন্তু বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে কথা বলা যেত না। এখন সেখানে যে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে এগুলো আওয়ামী লীগের কাজের ফল।
৭০ দিন হলো উপদেষ্টামণ্ডলীতে দায়িত্ব পালন করছেন, কোন ভুল কি হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন ভুলতো হতে পারে। কারণ আমার অভিজ্ঞতাও কম। কিন্তু এটা বলতে পারি জেনে বুঝে অন্যায় করিনি। আমার নীতিগত ভুল হতে পারে। তবে ব্যক্তিগত স্বার্থে কোন কাজ করিনি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট আমরা পুরোটাই বাতিল করার প্রক্রিয়ায় আছি৷ মানুষ এই নামগুলোই শুনতে পারে না।
সাকিব আল হাসানের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাকিবের মতো জনপ্রিয় ক্রিকেটার বাংলাদেশে আর আসে নাই। কিন্তু যখন আন্দোলন চলে মানুষ মরছে সাকিব তখন পোস্ট দিলো সে কোথাও এনজয় করছে এমন।
তিনি বলেন, এয়ারপোর্টে গেলে প্রবাসীদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করা হতো আগে। আমার স্বপ্ন ছিল তাদের ভি আই পি সুবিধা দেবো। আমি উদ্যোগ নিয়েছি তাদের জন্য আলাদা একটা লাউঞ্জ হবে। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এটা হবে। মানবজমিন’র সৌজন্যে
ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা হলে সকল ধর্মের মানুষের অধিকার বাস্তবায়ন হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম।
তিনি বলেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রত্যেক ভোটারের ভোটের মূল্যায়ন হয়। এতে কোনো ভোট বিফলে যায় না। নির্বাচনে যে দল মোট প্রদত্ত ভোটের যত শতাংশ পাবে, সেই অনুপাতে সংসদে প্রতিনিধি পাঠাতে পারবে।
বিশ্বের অনেক দেশে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করছে। অনেক আগেই আমরা প্রস্তাব রেখেছিলাম। আমরা ধারাবাহিকভাবে এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছি দীর্ঘদিন থেকে।
বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি নিয়ে মাঠে কাজ করছে। এটা করলে ছোট দলগুলো আর বৈষম্যের শিকার হবে না। পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে মনোনয়ন বাণিজ্য ও দুর্নীতিও থাকবে না। প্রতিটি ভোটের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে। মানুষের ভোটের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হলে দেশ গড়ায় তারা আরো উৎসাহিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর ) বিকেলে রাজবাড়ীর শহীদ স্মৃতি চত্বরে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ি জেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা শাখা সভাপতি মুফতি শামসুল হুদা।
বক্তব্য রাখেন জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ সাব্বির হুসাইন,সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা, আমিনুল ইসলাম কাসেমী, কারী আবু ইউসুফ, মুহা:আ:রহিম সুমন, ছাত্রনেতা আ:রহমান, সোহান,আ:আলিম,যুবনেতা রফিকুল ইসলাম মিলন,হাফেজ আব্দুল্লাহ,মাওলানা সিদ্দুকুর রহমান,মাওলানা আ:মালেক, মুফতি রইস উদ্দিন, প্রমুখ।
নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ঢাকা ও রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে জাতীয় পার্টি। ২ নভেম্বর ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল এবং ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রংপুরে সমাবেশ করতে চায় দলটি।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সভায় ওই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। দুই জায়গায় সমাবেশের পাশাপাশি মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও শীর্ষ নেতাদের নামে সম্প্রতি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
প্রেসিডিয়ামের সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, আমরা রাজপথে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করবো। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের সাথে অবিচার হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীরা রক্ত দিয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এর প্রতিবাদ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নামে মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে রংপুর থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। রংপুরের মানুষ রাস্তায় জীবনবাজী রেখে আন্দোলন করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ফাঁসি থেকে রক্ষা করেছে। আমার জন্যও তারা রাজপথে লড়াই শুরু করেছে। আমরা তাদের ঋণ কখনোই শোধ করতে পারবো না। আমরা অপরাধ করিনি, আমাদের অপরাধী করার অপচেষ্টা চলছে।
জাতীয় পার্টির মাসব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২২ অক্টোবর বনানীতে জাতীয় পার্টির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সমূহের যৌথসভা, একই দিন বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের থানা কমিটি সমূহের সভাপতি, আহ্বায়ক, সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য সচিবদের সঙ্গে সভা। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জেলা সফর করবেন ৮ বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব।
কর্মসূচি সফল ও স্বার্থক করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু ।
বাজার সিন্ডিকেটে আ.লীগের প্রেতাত্মারা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদীর মরজালে ছাত্র আন্দোলনে শহীদ জুনায়েদ আল হাবিবসহ অন্যান্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের লোকদের মোটেও দেশপ্রেম নেই। তারা মুখে দেশপ্রেমের কথা বললেও অন্তরে তারা ভিন্ন। তারা যে গণহত্যা সৃষ্টি করেছেন দেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। এটা জনগণের কথা। ফেরাউনের রাজত্ব বেশি দিন থাকতে পারে না।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে বলেন, সাধারণ মানুষ যেন নির্বিঘ্নে তার আয় অনুযায়ী বাজার করে খেতে পারে তার জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন। আজকে কেন মোটা চালের দাম, গরুর মাংসের দাম বাড়বে? কয়েকদিন ধরে ডিমের বাজার নিয়ে বলায় এখন একটু কমেছে। তাই সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
আমরা বিএনপি পরিবারের আয়োজনে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসিচব খায়রুল কবীর খোকন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী, আমরা বিএনপি পরিবার সংগঠনের সভাপতি আতিকুর রহমান রুমন, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ, ভিপি ইলিয়াছ ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ।
এর আগে, প্রধান অতিথি শহীদ জুনায়েদ আল হাবিবের পরিবারের সঙ্গে সমবেদনা জানাতে তার বাড়িতে গিয়ে সদস্যদের খোঁজ খবর নেন। এসময় ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের মাঝে সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুদান বিতরণ করা হয়।