জিএম কাদেরকে সরাতে কনভেনশনের প্রস্তুতি!

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অযোগ্যতার অভিযোগ তুলে কনভেনশন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী জানুয়ারি মাসে কনভেনশন আয়োজনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আমেরিকা প্রবাসী কিছু এরশাদ ভক্ত এই প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণে প্রবাসে অবস্থানকারী এরশাদ তথা জাপা ভক্তরা একাধিক বৈঠক করেছে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের এরশাদ ভক্তদের নিয়ে প্রথম কনভেনশন হবে। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য বিভাগেও কনভেনশন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এসব কনভেনশনে জাপার অনেক সিনিয়র নেতা অংশ নেবে। লক্ষ্য হচ্ছে ২০২২ সালের কাউন্সিলের মাধ্যমে জিএম কাদেরকে অপসারণ করা।

বিজ্ঞাপন

এই কনভেনশনের মূল উদ্যোক্তা জাপা থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগী সাহাবুদ্দিন বাচ্চু। তিনি রাজশাহী মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন। জিএম কাদেরকে পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণার পর জাপা ত্যাগ করেন তিনি।

সাহাবুদ্দিন বাচ্চু বার্তা২৪.কমকে বলেন, জিএম কাদের এরশাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত নন। ওনি মধ্য রাতে যে প্রক্রিয়ায় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয়েছেন, তা প্রশ্নবিদ্ধ। নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কাজ করছেন। এরশাদ চাইতেন সবাইকে নিয়ে পার্টিকে এগিয়ে নিতে। আর জিএম কাদের হলেন প্রতিহিংসাপরায়ণ। নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বুঝেন না। জাতীয় রাজনীতিও তার দ্বারা সম্ভব না।

পার্টিকে তিনি ব্রকেট বন্দী করে ফেলছেন। দিনে দিনে গুটিয়ে যাচ্ছে জাপা। একমাত্র তার কারণে জাপার অস্তিত্ব সংকটের দিকে যাচ্ছে।

আমাদের এই উদ্যোগ জাপাকে বাঁচানোর জন্য। আমরা সব বিভাগে কনভেনশন করে এরশাদ ভক্তদের একজোট করব। তবে কোনো দালাল এতে অংশ নিতে পারবে না। এর মধ্য দিয়ে আগামী ২০২২ সালের কাউন্সিলে জিএম কাদেরকে সরিয়ে নতুন নেতৃত্ব সামনে আনতে চাই। যার হাতে এরশাদের স্বপ্ন গড়ে উঠবে, সংগঠিত হবে জাতীয় পার্টি।

কিন্তু যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী দাবি করেন জিএম কাদের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারা দেশে কত জন জাপার উপজেলা চেয়ারম্যান, কত জন মেয়র, কত জন ইউপি চেয়ারম্যান আছেন? সাম্প্রতিক ভোটগুলোতে জাপার প্রাপ্ত ভোট হিসেব করলে তার এই দাবি বাগাড়ম্বর প্রমাণিত হবে। তৃণমূলে কোনো যোগাযোগ নেই, গুটিকয়েক নেতাকে নিয়ে দল পরিচালিত হচ্ছে। রাজশাহীতে নেতারা গণপদত্যাগ করেছে, সিলেটের বেহাল অবস্থা, রংপুরে গ্রুপিং সামাল দিতে পারছে না। স্যারের (এরশাদ) মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী করা হয় এরশাদ পুত্র সাদ এরশাদকে।

ওই নির্বাচনে বড় একটি অংশ দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছে। জিএম কাদের বসে বসে দেখেছেন, কিছুই করেননি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছে সিনিয়র নেতারা। জাপা প্রার্থীর ভরাডুবি চেয়ে চেয়ে দেখেন। কাউন্সিলে নির্বাচিত মহাসচিবকে বিনানোটিশে সরিয়ে দিয়েছেন। অযোগ্যদের প্রমোশন দিয়েছেন। ত্যাগী নেতাদের সরিয়ে দিয়েছেন। এতে এরশাদ ভক্তরা ক্ষুব্ধ। তারা এই অযোগ্য চেয়ারম্যানের হাত থেকে পার্টিকে রক্ষা করতে চাইছে।

তাহলে বিকল্প কে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এরশাদ পরিবারেই অনেক যোগ্য লোক রয়েছে। রওশন এরশাদ আছেন, সাদ এরশাদ আছেন, এরিখ আছেন, আসিফ শাহরিয়ার রয়েছেন। এদের প্রত্যেককে জিএম কাদেরের তুলনায় বেশি যোগ্য মনে করছে এরশাদ ভক্তরা। তারা মনে করেছে জিএম কাদেরের হাতে পার্টি নিরাপদ না। তিনি পার্টিকে বেঁচে নিজে এবং আশপাশের কয়েকজনের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাইছেন। নিজের স্ত্রীকে পার্টির উপদেষ্টা বানিয়েছেন। কেন, পার্টিতে কী যোগ্য নেতার খুব অভাব পড়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রকাশের আগেই রদবদলের মতো হাস্যকর ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। জাপা এখন সার্বজনীন না।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বার্তা২৪.কমকে বলেন, সাহাবুদ্দিন বাচ্চু তো পার্টির কেউ না, আমেরিকা প্রবাসী। পার্টির চেয়ারম্যান সম্পর্কে কথা বলার এখতিয়ার তাকে কে দিয়েছে? এগুলো হচ্ছে বোগাস বিষয়।