জাতির জনককে মেনেই সকলের রাজনীতি করা উচিত: জিএম কাদের

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতির জনক কোনো দল বা গোষ্ঠীর হতে পারে না। জাতির জনক সকল দলের, সকল মানুষের।

শনিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী অফিস মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

জিএম কাদের বলেন, আজকে যারা রাজনীতি করছে, সকলের উচিত জাতির জনককে মেনে নিয়ে রাজনীতি করা। তার অবদানকে স্বীকার করেই রাজনীতি করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। বঙ্গবন্ধুর ডাকে এ দেশের সকল মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ ও মানুষের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু আন্দোলন সংগ্রামের রোল মডেল, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সকল প্রেরণার উৎস। তার জীবনী অনুসরণ করলে সকল সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব। সকল অন্যায় ও অনিয়মের প্রতিবাদ করে গণমানুষের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। তাই শক্তিশালী ও নির্যাতনকারী পাকিস্তানি সরকারের নির্দেশনা অমান্য করেও দেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে চলেছেন।

বঙ্গবন্ধু প্রতিপক্ষেকে রাজনৈকিভাবে মোকাবিলা করেছেন কিন্তু কখনো শত্রুতা করেননি। প্রতিপক্ষের বিপদেও পাশে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু উদারতার অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় সংসদের বক্তৃতায় বলেছিলেন, জাতীয় পার্টি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতার মর্যাদা দিতে চেয়েছিলেন। অপ্রত্যাশিত কিছু কারণে তা করতে পারেননি। কিন্তু জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনকের মর্যাদা দিয়েছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমছে না। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাবে এখনো করোনা চিকিৎসা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সংক্রমণ কমছে না কিন্তু কোভিড হাসপাতালগুলোকে নন কোভিড করা হচ্ছে। কোনো কোনো হাসপাতাল থেকে করোনা রোগীদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। করোনা রোগীরা অক্সিজেন কিনে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছে, এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।

উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি বন্ধ এবং দুর্নীতিবাজদের বিচারের মুখোমুখি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খানের মালিকাধীন নারগানা ইন্টারন্যাশনাল রিসোর্টে সন্ত্রাসী হামলা এবং লুটপাটের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এসময় নারগানা ইন্টারন্যাশনালে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, জাতির জনকের প্রশ্নে কোনো বিতর্ক নেই। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে কিংবদন্তি নেতা হয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে শাহাদত বরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য নেতা। সারাবিশ্বে অনেক নেতার জন্ম হয়েছে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঁশের লাঠি নিয়ে ট্যাংকের সামনে দাঁড়িয়েছে বাঙালিরা। এটা নজিরবিহীন নেতৃত্বের প্রমাণ।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক গগনে শূন্যতা বিরাজ করছে। গেল ৩০ বছরে দেশের মানুষ অনেক রাজনৈতিক দলের রাজনীতি দেখেছে। দেশের মানুষ বিশ্বাস করে দেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণে জাতীয় পার্টির বিকল্প নেই।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবুল হোসেন বাবলা, মুজিবুল হক চুন্নু, সাবেক মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আজম খান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আব্দুস সাত্তার মিয়া, আলমগীর সিকদার লোটন। সভা পরিচালনা করেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম।