গত ৪৪ বছরে দেশে ৬৫৭টি নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪ হাজার ৭১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী। এদিন বিকেল সোয়া ৪টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।
সংসদে প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৬৫৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪ হাজার ৭১১ জনের প্রাণহানির পাশাপাশি ৫৩৯ জন আহত হয়। এছাড়া ৪৮২ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে জানানো হয়।
এরমধ্যে ২০০৩ সালের সর্বাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তখন ৩১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪৬৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া ১৯৮৬ সালে ১১টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪২৬ জনের মৃত্যু ঘটে, ১৯৯৪ সালে ২৭ টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩০৩ জনের মৃত্যু ঘটে, ২০০০ সালে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩৫৩ জন, ২০০৫ সালে ২৮টি দুর্ঘটনায় ২৪৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।
এছাড়া ২০০৯ সালে ৩৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৬০ জন, ১৯৮৮ সালে ১১টি নৌ দুর্ঘটনায় ১০৮ জন, ১৯৯০ সালে ১৩টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন, ১৯৯৩ সালে ২৪ টি দুর্ঘটনায় ১৮৩ জন, ১৯৯৬ সালে ২০টি দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন, ১৯৯৭ সালে ১১টি দুর্ঘটনায় ১০২ জন, ১৯৯৯ সালে ৬টি দুর্ঘটনায় ১০৪ জন, ২০০২ সালে ১৭টি দুর্ঘটনায় ২৯৭ জন, ২০০৪ সালে ৪১টি দুর্ঘটনায় ১২৭ জন মারা যায়।
বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে ৩০ বছরের কম বয়সী প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে। তাই সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হেসেন।
বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট অধিবেশনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পিরোজপুর-৩ আসনের শামীম শাহনেওয়াজের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই তথ্য জানান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য কোনো সেশনজট নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীরা ১৬ বছরে এসএসসিসহ ২৩/২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাখ করে থাকে। চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর হওয়ার ফলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৬/৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এছাড়া ৩০ বছর বয়সমীমার মধ্যে একজন প্রার্থী আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২/১ বছর লেগে যায়। ফলে চাকরিতে যোগদানের জন্য নূন্যতম বয়স ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছর করার যে দাবি করা হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে তার কাছাকাছি পর্যায়ে উপনীত হয়।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন স্তরে উত্তীর্ণ প্রার্থীগণের বয়স ও জেন্ডারভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী কম বয়সী (২৩-২৫) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে বেশি (৩৭.৬৮%) এবং বেশি বয়সী (২৯ এর ঊর্ধ্বে) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে কম ১.৭১%)।
মন্ত্রী আরও জানান, চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ার বর্তমানে শূন্যপদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদে বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরো বেশি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও অনুর্ধ্ব ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।
এসব শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই বলে মন্ত্রী জানান।
মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ১১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭৮টি নদী তীর প্রতিরক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ৬৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাদি বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। উক্ত কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংসদে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে সংসদ সদস্য এম. আবদুল লতিফের লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সরকার প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গত ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা ১২ হাজার টাকা হতে বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকা হারে প্রদান করা হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত কার্যক্রম সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আওতাভুক্ত। উক্ত কমিটিতে ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, বলে জানান তিনি।
ভাবা যায় গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা প্রশ্ন রেখে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য (ঠাকুরগাঁও-৩) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেছেন, নিত্যপণ্যের দামে তো মানুষের নাজেহাল অবস্থা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে ট্যারিফ কমিশনের সংশোধনী ২০২৪ এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, দ্রব্যমূল্যর দাম বেড়েই চলছে। ট্যারিফ কমিশন সেইদিকে লক্ষ্য না দিয়ে সচিবের পদবি পরিবর্তনের কথা বলছে। এতে জনগণের কি লাভ?
তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একশ্রেণির লোক হাজার হাজার কোটি নিয়ে যাচ্ছে সেদিকে কারো খেয়াল নাই। এক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাত দিয়ে ঔষুধের দাম দ্বিগুণ তিনগুণ করা হয়েছে। সেই দিকেও কারো লক্ষ্য নেই। আপনারা দ্রুত বাজার মনিটরিংয়ে গুরুত্ব দেন।
ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে সংসদে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস হয়েছে।
সোমবার (১ জুলাই) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এরআগে, স্পিকার বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর বা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করবে এবং নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশাসক নিয়োগ হবে কেবল এক মেয়াদে ১২০ দিনের জন্য। কোনো দৈবদুর্বিপাক, অতিমারি, মহামারি ইত্যাদি বিশেষ ক্ষেত্রে নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হলে সরকার ওই মেয়াদ যৌক্তিক সময় পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো সদস্য বা প্রশাসক যদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। বিদ্যমান আইনে এটি ১০ হাজার টাকা। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ‘সচিব’ পদটির নাম পরিবর্তন করে ইউনিয়ন পরিষদ ‘প্রশাসনিক কর্মকর্তা’ করা হয়েছে।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির হামিদুল হক খন্দকার বলেন, সম্মানিটা সম্মানজনক হওয়া উচিত। এখন সরকারি টাকা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নিজের আয় থেকে চেয়ারম্যানের ভাতা ১০ হাজার টাকা ও সদস্যদের ভাতা ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বর্তমান বাস্তবাতায় এটি দ্বিগুণ করা উচিত। তিনি বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিধান আগে আইনে ছিল না। এটার সুবিধার পাশাপাশি স্বেচ্ছাচারের আশঙ্কাও আছে।
বেতন ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ হয়। তারা এ টাকা কিভাবে তুলবে। তখন দুর্নীতি করে। টিআর কাবিখা বিক্রি করে দেয়। এজন্য দুর্নীতি কমাতে তাদের ভাতা বাড়ানো উচিত।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, এক জন ইউপি সদস্যকে একটি ওয়ার্ডে নির্বাচন করতে হয়, অথচ এক সংরক্ষিত মহিলা সদস্যকে তিন ওয়ার্ডে নির্বাচন করতে হয়। এতে তার অনেক বেশী খরচ ও পরিশ্রম হয়। কিন্তু তার সুযোগ সুবিধা একই। এই বৈষম্য দুর করা দরকার। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও চৌকিদার দফাদারদের সম্মানী বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার বলেন, ইউপি স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তারা প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করেন। তাঁদের সম্মানি খুবই অসম্মানজনক। এটা সম্মানজনক হওয়া উচিত। প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এসএম ব্রাহানী সুলতান।
জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসক নিয়োগ সাংঘর্ষিক নয়। এটা সাময়িক। নতুন ইউপি গঠনের পর এটা করতে হয়, এখানে আইনের সঙ্গে কোনো সাংঘর্ষিক নয়। আইনি জটিলতা সৃষ্টি করেও পদে থেকে যাওয়ার উদাহরণ আছে। এই বিধান এক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। ভাতা বৃদ্ধির দাবি যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।