জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বাবা খন্দকার নাজমুল হুদা বীরবিক্রম হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত চাইলেন আওয়ামী লীগ দলীয় সংরক্ষিত সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর এবং ৭ নভেম্বর পরবর্তী সকল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের একটি তদন্ত হোক। যার মধ্য দিয়ে বের হয়ে আসবে জিয়াউর রহমান ও তার সহযোগীদের ভূমিকা এবং দলের ভূমিকা। অনেক অজানা তথ্য জাতির সামনে বেরিয়ে আসবে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তাকে আপ্লুত হয়ে কথা বলতে শোনা যায়।
নাহিদ ইজাহার খান বলেন, '১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের একটি কালো অধ্যায়। ৪৪ বছর আগে ৭ নভেম্বর এই সংসদ প্রাঙ্গণে মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ, আমার বাবা খন্দকার নাজমুল হুদা (বীরবিক্রম) এবং লেফটেনেন্ট কর্নেল এটিএম হায়দার (বীর উত্তমকে) হত্যা করা হয়। আমি এই তিন শহীদের মাগফেরাত কামনা করি।'
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'আমার ভাই অনেক ধাক্কা দিচ্ছিল বাবাকে ওঠানোর জন্য কিন্তু বাবাকে কোনভাবেই ওঠাতে পারল না। ওরা সবাই বুঝছিল বাবা আর কোন দিন আসবে না। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি। আমি আসায় ছিলাম কোন একটা দিন বাবা ফেরত আসবে। এটা কাটাতে আমার লেগেছিলো এক বছর।'
তিনি বলেন, বাবাকে দাফনের পর শুরু হয় আমাদের জীবনের সংগ্রাম। আমার প্রশ্ন সেই দলের মানুষদের কাছে তারা কি আমার বাবাকে ফেরত দিতে পারবে? তারা কি ফেরত দিতে পারবে বাবার সাথে আমাদের শৈশব। বাবা মারা যাবার পর আমরা স্কুলে যেতে পারতাম না দুই বছর। তখন স্কুলের ছেলে মেয়েরা আমাদের বলত আমরা নাকি বিদেশের দালালের মেয়ে। আমাদের পড়াশোনা দুই বছর নষ্ট হয়েছে। তারা কি ফেরত দিতে পারবে সেই দুই বছর। একজন সন্তানের জন্য সবচেয়ে কষ্ট বাবার কবরে ফুল দেওয়া। তারা কোনো দিন এটা অনুভব করেছেন?
তিনি আরও বলেন, যেদিন মন খারাপ থাকে চলে যাই বাবার কবরের কাছে। আমি বলতে থাকি কষ্টের কথা। মনে হয় বাবা কথাগুলো শুনছেন।