সংবাদ করতে হবে না শুধু আমাকে জানাবেন। আমার দায়িত্বের মধ্যে কোনো জায়গাতে মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে পুলিশ পৌঁছে যাবে। পুলিশের পক্ষ থেকে সাহায্যের হাত বাড়ানো হবে। কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে না।
বার্তা২৪.কমকে এমনটাই জানিয়েছেন রংপুর জেলার পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার।
এর আগে রংপুরের পীরগাছায় সেই মালতী রানীকে ত্রাণ দিয়েছেন রংপুরের এসপি বিপ্লব কুমার সরকার।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) রাত ১১টায় তার প্রতিনিধি হিসেবে পীরগাছা থানার ওসি কান্দি কাবিলাপাড়া গ্রামে মালতী রাণীর বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছে দেন।
বৃহস্পতিবার বার্তা২৪.কমে সবাই খালি হাত ধুবার কয়, খাবার দেয় না কাইও শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। সংবাদটি দৃষ্টি আকর্ষণ করে রংপুরের এসপি বিপ্লব কুমার সরকারের।
ওইদিনই রাত সাড়ে দশটার দিকে বার্তা২৪.কমের ঢাকা অফিসে ফোন করেন এই এসপি। মালতী রানীকে সাহায্য করতে চান বলে জানান। আর তখনই তিনি পীরগাছা থানা পুলিশকে মালতী রানীকে সাহায্যের জন্য নির্দেশ দেন।
রাতেই পীরগাছা থানার ওসি রেজাউল করিমের নেতৃত্বে থানা পুলিশ মালতী রাণীর বাড়িতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসআই রেজাউল করিম রেজা ও এএসআই মাসুদার রহমান প্রমুখ।
নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী বাজার মনিটরিং করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন টিম। সে ধারাবাহিকতায় মোহাম্মদপুর সাদেক খান কৃষি মার্কটে মনিটরিংয়ে এসে শুধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা।
শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শরীফ রায়হান কবিরের নেতৃত্বে একটি টিম এই বাজার মনিটরিং করে।
এসময় বাজার মনিটরিং টিমটি বেশ কয়েকটি কাঁচা মালের আরতদারের সঙ্গে কথা বলে। সেই সঙ্গে মূল্য তালিকা, পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ তদারকি করেন। কিছু অসঙ্গতি পেলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে চলে যায় মনিটরিং টিমটি। তবে এসময় কোন ভোক্তার সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়নি। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোক্তারা।
বাজার করতে আসা অনেকে এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করলেও নিজেদের পরিচয় দিতে রাজি হননি কেউ। ভোক্তারা বলেন, বাজার দেখতে আসে, এভাবে কি বাজার মনিটরিং হয়? ওনারা আসলে কি কেউ বলবে, আমরা দাম বেশি রাখি?
আরেক ভোক্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, একই বাজারে পাশাপাশি দোকানে একই করলা একজন বিক্রি করছেন ৬০ টাকা, আরেকজন ৮০ টাকা। এইগুলো কি ওনারা দেখছেন? পাশাপাশি দোকানে দাম এতো কম বেশি হয় কি করে? ওনারা আমাদের সঙ্গেও কথা বলেন না। তাহলে কি বাজার তদারকি করবেন?
বাজার মনিটরিংয়ে এসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শরীফ রায়হান কবির মূল্য তালিকা না থাকায় মেসার্স পাবনা ট্রেডার্স নামের একটি দোকানের মালিক কে সতর্ক করেন। পরে উপসচিব চলে গেলে এই ব্যবসায়ী বলেন, কাঁচা পণ্যের দাম একেক সময় একেক রকম হয়। সকালে যেটা ১০০ টাকায় বেচি দুপুর হয়তে হয়তো সেটা ৫০ টাকায় চলে আসে। তাহলে আমি কিভাবে মূল্য তালিকা লাগাবো?
এই ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, এখন যেহেতু বলে গেছে আমি মূল্যতালিকা দিবো। কিন্তু এই মূল্যতালিকা বাস্তবসম্মত না। আমি এখন একটা মূল্য তালিকা দিয়ে রাখলাম কিন্তু অন্য দোকানে হয়তো আরও কমেই বিক্রি করে দিচ্ছে তখন তো আমার দাম দেখেই কাস্টমার চলে যাবে। কোন কথাও বলবে না।
বাজার মনিটরিং শেষে উপসচিব শরীফ রায়হান কবির বলেন, যখন আমরা রশিদে দেখি একজন একটা পণ্য ৪৩ টাকায় কিনে এনে এখানে ৪৭ টাকায় বিক্রি করে তখন একটা যৌক্তিকতা বুঝতে পারি। আবার সে যখন ৪৭ টাকা বিক্রি করছে সেটার রশিদ যদি থাকে তাহলে আমরা বুঝতে পারি সে কত টাকায় বিক্রি করছে আর খুচরা দোকানদার কত বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, কিছু কিছু পণ্যের দাম প্রাকৃতিক কারণে বেড়েছিলো, এটা কিছুদিনের মধ্যেই কমে আসবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যে দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখছি তাতে আমি বিশ্বাস করি খুব শীঘ্রই ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। শীতের সবজির সময় দৃশ্যমান প্রভাব পড়বে বাজারে এটা আমি আশ্বস্ত করতে চাই।
মূল্যতালিকা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে উপসচিব বলেন, মূল্যতালিকা লাগানো আইনগত বাধ্যবাধকতা। এটা নিয়ে আমরা কেউই বলতে পারি না যে করা যাবে না বা করার সুযোগ নেই। মূল্যতালিকা প্রদর্শন বাধ্যতামূলক। মূল্যতালিকা প্রদর্শন করতে হবে।
রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিন গৃহকর্মী গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ সময় চুরির ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রতি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- তানজিনা আক্তার ফারিয়া, কহিনুর বেগম ও নাজমা আক্তার ওরফে লাইজু।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সারোয়ার জাহান।
জানা যায়, গত ১৬ আগস্ট রোখসানা মজুমদার ব্যাংকের লকারে গচ্ছিত স্বর্ণালংকার এনে নিজের রমনার বাসার আলমারিতে রাখেন। পরবর্তীতে ৮ অক্টোবর গহনা দেখার জন্য আলমারির মধ্যে থাকা ব্যাগ খুলে দেখেন যে, ব্যাগের মধ্যে থাকা ৪৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও ডায়মন্ডের ৫টি আংটি নাই যার আনুমানিক মূল্য ৫২ লাখ টাকা।
এরপর বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে রমনা মডেল থানায় একটি চুরির মামলা রুজু করা হয়। মামলায় বাসার স্থায়ী গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া, কহিনুর বেগম ও অস্থায়ী গৃহকর্মী নাজমা আক্তার ওরফে লাইজুকে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়।
মামলা রুজু হওয়ার পর রমনা থানা পুলিশ তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকালে কাকরাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও কহিনুর বেগমকে গ্রেফতার করে। তাদের দুইজনকে শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করা হলে তানজিনা আক্তার ফারিয়া আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন যে, তিনিসহ গ্রেফতারকৃত কহিনুর বেগম ও নাজমা আক্তার লাইজু এ চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
আদালত কহিনুর বেগমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে আসামির দেখানো মতে বাদীর বাসার গৃহকর্মীদের শয়ন কক্ষ থেকে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে রমনার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে নাজমা আক্তার লাইজুকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ১৬ ভরি ১৫ আনা ৪ রতি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারের জন্য গ্রেফতারকৃত লাইজুকে নিয়ে কারওয়ান বাজারের স্বর্ণ মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে অনন্যা জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ২ ভরি ১২ আনা ৪ রতি এবং নুসরাত জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ৩ ভরি ৮ আনা ৩ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখিত চুরির মামলায় রমনা মডেল থানা কর্তৃক মোট ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রতি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। অবশিষ্ট চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাছের ঘেরে রাতের আধারে বিষ প্রয়োগ করে কয়েক হাজার মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের পুনামাপাড়ার বাসিন্দা সানু মিয়ার ঘেরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, বরাবরের মত গতকাল রাতে ঘেরে মাছের খাবার দিয়ে বাসায় যায় সানু মিয়া ও তার স্বজনরা। আজ সকালে এসে দেখেন রাতের আধারে কে বা কারা বিষ প্রয়োগ করায় ঘেরের মাছ ছোটাছুটিকরাসহ মৃত মাছ ভাসতে থাকে।
প্রতিবেশী বৃদ্ধ জুয়েল ফরাজী বলেন,আমাদের এই অঞ্চলের খুব কম মানুষ মাছ চাষ করে। অনেক আশা নিয়ে সানু মিয়া মাছ চাষ করেছে। অনেক টাকা বিনিয়োগ এবং দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় মাছ বিক্রি করতে। কিন্তু দূর্বৃত্তদের বিষে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব মাছ মরে গেল। এভাবে চললে মাছ চাষ বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত সানু মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, গভীর রাতে কে আমার এতো বড় ক্ষতি করলো তা আমি জানি না৷ সকালে এসে দেখি আমার ঘেরের সব মাছ ভেসে উঠছে। পানি বেশি থাকায় তাৎক্ষণিক মাছ ধরতেও পারছি না। আমার ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
লতাচাপলি ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে বিষয়টি জানার জন্য ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি, সাংগঠনিক, সিনিয়ার সহ-সভাপতিসহ ঘটনাস্থানে এসেছি। এটি খুবই দুঃখজনক বিষয়। কে বা কারা করেছে এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ভুক্তভোগী শানু মিয়াকে মহিপুর থানায় বিষয়টি অবহিত করার কথা জানিয়েছি। বিএনপি'র পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা শানু মিয়ার জন্য থাকবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এটি সত্যিই দুঃখজনক। এবিষয় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীকে আইনের আওতায় আনা হবে।
নেত্রকোনার চারটি উপজেলায় বন্যার পানি কমতেই ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। গেল সাতদিনে পানি কমলেও এখনও জেলার কলমাকান্দা সদরসহ বেশ কিছু এলাকার নিচু বাড়িঘরের আশপাশ পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, কৃষিজমি তলিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর। এতে প্রায় ৩১৩ কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলায় মাছের ঘের ও পুকুর ডুবেছে ১৪৮০টি। মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে ৭২৩ দশমিক ৪৩ মেট্রিক টন মাছের পোনা ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ হবে ৮ কোটি ২৪ লাখ টাকার বেশি। তবে এই ক্ষতি আরও বেশি বলে দাবি মৎস্য চাষিদের।
এখনো প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও এক হাজার ৬৩৮ কিলোমিটার পাকা সড়কপথ স্বাভাবিক হয়নি। সরকারি হিসেব অনুযায়ী ৪৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী হলেও এর সংখ্যা অনেক বেশি বলে দাবি আক্রান্ত এলাকার মানুষদের।