‘বাংলাদেশে নোট বই নেই, আছে অনুশীলনমূলক বই’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সংবাদ সম্মেলন করেছে পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতি, ছবি: বার্তা২৪.কম

সংবাদ সম্মেলন করেছে পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতি, ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশে অনুশীলনমূলক বইকে নোট-গাইড বইয়ের মাপকাঠিতে ফেলা হয় দাবি করে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি কামরুল হাসান শায়ক বলেছেন, ‘বাজারে কোনও নোট-গাইড বইয়ের অস্তিত্ব নেই। অনুশীলনমূলক বইকে নোট-গাইডের মাপকাঠিতে ফেলে, তা বিক্রিতে বিধিনিষেধ আরোপের যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তা শিক্ষাখাত তথা জাতির বৃহত্তর স্বার্থে পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে।’

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন-২০১৯ এর কয়েকটি ধারা-উপধারা সংশোধনের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতিসহ ১২টি সংগঠন।

বিজ্ঞাপন

আইনে অনুশীলন বইয়ের সংজ্ঞা নেই দাবি করে শায়ক বলেন, ‘আইনে অনুশীলন বইয়ের সংজ্ঞা ও মান উন্নয়ন এবং অনিয়ম নিয়ন্ত্রণের জন্য মনিটরিং সেল গঠন করা যেতে পারে। অনুশীলন বই বন্ধ হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি কোচিং সেন্টার ও গৃহশিক্ষকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এছাড়া অনুশীলন বইয়ের খাতে বিশাল যে জনগোষ্ঠী কর্মরত আছেন, তারা বেকার ও অর্ধবেকার হয়ে পড়বেন। ২৩ লাখ ১০ হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।’

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন দাবি করেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে নোট-গাইডকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিন্তু অনুশীলন বইয়ের কোনও সংজ্ঞা নেই। নোট-গাইডে পাঠ্যবইয়ের দেওয়া উত্তরগুলো দেওয়া থাকে। যা শিক্ষার্থীরা মুখস্ত করে পরীক্ষায় অংশ নেয়। অন্যদিকে অনুশীলন বইয়ের বিষয়বস্তু হচ্ছে পাঠ্য বিষয় সহজে অনুধাবন, প্রশ্নের নমুনা, উন্নত উত্তর লেখন পদ্ধতি। শিক্ষার্থীরা অনুশীলন বই মুখস্ত করে না। কারণ তা মুখস্ত করে কোনও লাভ নেই। সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষায় কোনও প্রশ্ন কমন পড়ে না।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুশীলন বইয়ের সহায়তায় পাঠ্যপুস্তক বই প্রকাশিত হয় দাবি করে আরিফ হোসেন বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একেক রকম সহায়ক বা অনুশীলন বই রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে পাঠ্যপুস্তক নামে কোনও বই নেই। যেমন সিঙ্গাপুরে পাঠ্যপুস্তক নামে কোনও বই নেই।’

নোট বই আর অনুশীলনমূলক বইয়ের পার্থক্য বোঝাচ্ছেন পুস্তক প্রকাশনা ও বিক্রেতা সমিতির নেতারা, ছবি: বার্তা২৪.কম

নোট বই থেকে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র কমন পড়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের সহ-সভাপতি শ্যামল পাল বলেন, ‘কোনও অনুশীলন বই থেকে প্রশ্ন কমন পড়েনি। এটা বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে এ বছরের প্রশ্ন করা হয়েছে। এ জন্য আমরা দায়ী নই। যারা প্রশ্নের প্রণেতা তারাই দায়ী।’

নোট বই বিক্রি বন্ধের জন্য ২০১৫ সালে হাইকোর্টে করা রুল এখনও নিষ্পত্তি হয়নি দাবি করে আইনজীবী পার্থ সারথি মণ্ডল বলেন, ‘আদেশে বলা ছিল, রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নোট-গাইড বই বিক্রি অব্যাহত থাকবে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তা মানছে না। তারা এটা নিয়ে ফায়দা নেওয়া চেষ্টা করছে। যা আদালত অবমাননার শামিল।’

একই দাবিতে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে মানববন্ধন করবে সংগঠনগুলো। ওই দিন সারাদেশের বই বিক্রির দোকান বন্ধ রাখারও ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মির্জা আলী আশরাফ কাশেম, পরিচালক কাজী জহুরুল ইসলাম বুলবুল, কাজী শাহ আলম, শামসুল ইসলাম বাহার, নিরুপ সাহা নিরু, আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।