আগুন জ্বালিয়ে নৈশপ্রহরীর শীত নিবারণ

  • শাদরুল আবেদীন, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন নৈশপ্রহরী, ছবি: বার্তা২৪.কম

আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন নৈশপ্রহরী, ছবি: বার্তা২৪.কম

নতুন বছরের শুরুতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি ও হালকা বৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে কর্মজীবী মানুষদের। এদিকে গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশের ওপর দিয়ে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এ সময় দিনের তাপমাত্রা বাড়লেও রাতে হ্রাস পায়। ফলে রাতে শীতের তীব্রতা কিছুটা বাড়ে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকাল থেকেই রোদের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রাও বাড়ে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। রাত ১২টার পর থেকে হিমেল হাওয়াও বইছে। সেই সাথে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা।

বিজ্ঞাপন

গভীর রাতে রাজধানীর ভাটারায় জোয়ার শাহারা বাজারে বসে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন হাইদার নামের এক নৈশপ্রহরী। গত চার বছর ধরে এই বাজারেই রাতে পাহারা দেন তিনি। গত চার বছরের তুলনায় এ বছরই পৌষের শুরুতে শীত বেশি অনুভব হচ্ছে বলে জানান হাইদার।

নৈশপ্রহরী হাইদারের সঙ্গে আলাপ হয় বার্তা২৪.কম-এর। তিনি বলেন, ‘বেশি শীত পড়লে কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালাই। আবার হাঁটাহাঁটি করি।’

কাঠ নেড়ে দিচ্ছেন নৈশপ্রহরী হাইদার

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবারই মাঘ মাসে বাঘের মতো শীত পড়ে। কিন্তু এ বছর পৌষ মাসেই শীতের দাপট বেশি। তবে শীত আগের মতো নাই। ১০ বছর আগেও শীতে ঘর থেকে বের হইতে ভয় করতো। কিন্তু এখনতো আর ওই রকম শীত নাই।’

তার কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চার বছর ধরে রাতে পাহারার কাজ করি। মাঝে একটু চোখ লেগে আসলে ছিঁচকে চোর দোকানের ডিম চুরি করে নিয়ে যায়। পরশুদিনও আমি একটু টয়লেটে গেলে ৭০টা ডিম চুরি করে নিয়ে যায়। তাই সারাক্ষণ পাহারায় থাকতে হয়। ঘুম আসলেই বিপদ।’

এই নৈশপ্রহরীর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। সেখানে তার একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। তার জামাতা স্বর্ণকার। তাদের সংসারে তিন ছেলে মেয়ে।

শীত নিবারণে হাইদারকে সঙ্গ দেন আরও দু’জন

হাইদার বলেন, ‘আগে কমলাপুর স্টেশনে অগ্রিম টিকিট কিনতাম। সেগুলো বিক্রি করে সংসার চালাতাম। কিন্তু তাও বেশিদিন করতে পারি নাই। তাই এই কাজ করি। অনেক কষ্টে মেয়েকে বড় করছি। কিন্তু এখন আমাদেরতো চলতে হবে।’

শুধু হাইদার নয় দেশের বিভিন্ন স্থানে রাতে বাজার এবং মানুষদের পাহারা দেন হাজার হাজার নৈশপ্রহরী।